ছেলের গায়ে কয়েদির পোশাক দেখে লাশ হয়ে ফিরলেন বাবা!

নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় ১৪ বছরের সাজা হয় লিটন মাতুব্বরের

ছেলের গায়ে কয়েদির পোশাক দেখে লাশ হয়ে ফিরলেন বাবা!

প্রথম নিউজ, ফরিদপুর : নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় ১৪ বছরের সাজা হয় লিটন মাতুব্বরের। সোমবার বেলা ৩টার সময় ছেলেকে দেখতে ফরিদপুর কারাফটকে যান বাবা রাশেদ মাতুব্বর (৫৫)।

এসময় ছেলেকে দেখতে পান গায়ে কয়েদির পোশাকে। সন্তানের এমন পোশাক পরিহিত দেখে মানতে পারেননি বাবা। সইতে না পেরে সেখানেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন রাশেদ।

তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

রাশেদ মাতুব্বরের বাড়ি ভাঙ্গা উপজেলার কাউলীবেড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ কাউলীবেড়া গ্রামে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত ৪ বছর আগে দক্ষিণ কাউলীবেড়া গ্রামের এক শিশু কন্যা ধর্ষণ করে একই গ্রামের লিটন মাতুব্বর (২০)। পরে শিশুর চাচা আবুল কালাম শেখ বাদি হয়ে ভাঙ্গা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইন একটি মামলা করেন। এ মামলাটি দীর্ঘ শুনানি শেষে চলতি মাসে একমাত্র আসামি লিটন মাতুব্বরকে ১৪ বছরের সাজা দেন ফরিদপুরের নারী ও শিশু আদালত।

সাজা হওয়ার পর ছেলেকে প্রথম দেখতে জেল গেটে যান বাবা রাশেদ মাতব্বর। ছেলের গায়ে কয়েদির পোশাক দেখেই সহ্য করতে না পেরে তিনি বুকে হাত দিয়ে বসে পড়েন এবং উপস্থিত লোকজন চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হলে রাশেদ মাতুব্বরকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

এদিকে ছেলের ১৪ বছরের সাজা ও বাবার মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শোকের ছায়া নেমে আসে।

কাওলীবেড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল হাসনাত দুদু মিয়া জানান, সোমবার রাতে রাশেদ মাতুব্বরের লাশ গ্রামের বাড়ি নিয়ে আসা হয়েছে এবং রাত ১০ টার দিকে ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের নিকট জেলখানায় থাকা ছেলের প্যারোলে মুক্তি জন্য আবেদন করি।

মঙ্গলবার সকালে লিটনকে প্যারোলো মুক্তি পেয়ে বাবার জানাযায় অংশ নেন ছেলে লিটন। পরে জানাজা শেষে আবার কারাগারে নেওয়া হয় লিটনকে। ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক ও বেদনা দায়ক।