চরের ভূমি দখলের মতো ভোটকেন্দ্র দখল হয়েছে: কাদের মির্জা
ছাপুরে আইয়ুব আলী জিতেছেন, কান্নাকাটি করে প্রশাসনকে টাকা দিয়ে। ওবায়দুল কাদেরের সাজানো নির্বাচন আমরা মেনে নিতে পারি না।
প্রথম নিউজ, নোয়াখালী: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে নিজের মনোনীত অধিকাংশ প্রার্থীর পরাজয়ে বড়ভাই সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও প্রশাসনকে দুষলেন বসুরহাটের মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের ও ডিসি-এসপির এই পাতানো নির্বাচন আমি মানি না। পরিকল্পিতভাবে মন্ত্রীর (ওবায়দুল কাদের) তিন ভাগনেকে জেতানোর জন্য যা যা করা দরকার, তা করা হয়েছে।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর রাত সাড়ে ৮টায় ফেসবুক লাইভে এসব কথা বলেন কাদের মির্জা।তিনি আরও বলেন, পরিকল্পিতভাবে এই নির্বাচন হবে জানলে এই নির্বাচনের সঙ্গে জড়াতাম না। এই এলাকায় ডিসি-এসপির সাজানো নির্বাচন আজ এখানে হয়ে গেছে। চরের ভূমি দখলের মতো ভোটকেন্দ্র দখল হয়েছে।
বড়ভাই সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে ইঙ্গিত করে কাদের মির্জা বলেন, গোলাগুলি করে হিন্দু ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে না দিয়ে চরপার্বতী ইউনিয়নে জামায়াতের প্রার্থীকে জেতানোর জন্য সহযোগিতা করেছে এখানকার প্রশাসন। দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত এখানে চেষ্টাও করেছে জামায়াতের প্রার্থীকে হারিয়ে তার ভাগনেকে জেতানোর জন্য। সে তিন নম্বর ছিল, বিধায় সেটা সম্ভব হয়নি। প্রশাসনকে লেলিয়ে দিয়ে রামপুরে ৭০০ ভোটে এক ভাগনেকে জিতিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কাদের মির্জা আরও বলেন, চরফকিরা ইউনিয়নে সকাল বেলায় তিনটি কেন্দ্র দখল করে মন্ত্রীর আরেক ভাগনে (ফুফাতো বোনের ছেলে) জায়দল হক কচিকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে। তাহলে দেখেন, এই নির্বাচন করার কী দরকার ছিল। আপনি ঘোষণা দিয়ে নিয়ে যেতেন, আপনার খেয়ালখুশি মতো জিতিয়ে নিতেন। মুছাপুরে আইয়ুব আলী জিতেছেন, কান্নাকাটি করে প্রশাসনকে টাকা দিয়ে। ওবায়দুল কাদেরের সাজানো নির্বাচন আমরা মেনে নিতে পারি না।
তিনি বলেন, আমরা মঙ্গলবার আমাদের নেতাদের নিয়ে বসব, সিদ্ধান্ত নেব। আজ আমাকে দাফন করা হয়েছে কোম্পানীগঞ্জে। আমার ৪৮ বছরের রাজনীতি। জীবনে রাজনীতিতে কোনো পদপদবিতে যেতে পারিনি, সে দেয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতে গেছি, সেখানেও পড়ালেখা করতে দেয়নি।
১৫ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের লাইভ বক্তৃতায় কাদের মির্জা আরও বলেন, আমাদের জন্য রাজনীতি আসেনি। রাজনীতিতে অস্ত্রের প্রয়োজন, টাকার প্রয়োজন। ওবায়দুল কাদের সাহেবরা পারেন না, এমন কোনো কাজ নেই। এটা তাদের পক্ষেই সম্ভব। আমার ছেলেকে দুবার মেরেছে। একটিবার সহানুভূতিও দেখায়নি। ওবায়দুল কাদের এত হিংস্র। তার ভাগনেকে দিয়ে আমার ছেলের ওপর আঘাত করেছে রামপুরে।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সপ্তম ধাপে কোম্পানীগঞ্জে আট ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা বিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ওবায়দুল কাদেরের দুই ভাগনেসহ চারজন কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান ওরফে বাদলের অনুসারী, তিনজন কাদের মির্জার অনুসারী ও একজন জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী জয়লাভ করেছেন।
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাগনেদের মধ্যে রামপুর ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন সিরাজিস সালেকিন রিমন ও চরফকিরা ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন জয়দল হক কচি। অন্যদিকে চরপার্বতী ইউনিয়নে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীর কাছে হেরে গেছেন ওবায়দুল কাদেরের আরেক ভাগনে উপজেলা আওয়ামী লীগের মুখপাত্র মাহবুবুর রশিদ মঞ্জু।
কাদের মির্জার অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান সোমবার রাতে বলেন, ‘উনি ওনার মতো করে অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। আমরা কী ধরনের নির্বাচন করেছি, তা কোম্পানীগঞ্জের মানুষ সচক্ষে দেখেছে।’
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
নোয়াখালী
প্রকাশিত: ০৯:০৭ এএম, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে নিজের মনোনীত অধিকাংশ প্রার্থীর পরাজয়ে বড়ভাই সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও প্রশাসনকে দুষলেন বসুরহাটের মেয়র আবদুল কাদের মির্জা।
তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের ও ডিসি-এসপির এই পাতানো নির্বাচন আমি মানি না। পরিকল্পিতভাবে মন্ত্রীর (ওবায়দুল কাদের) তিন ভাগনেকে জেতানোর জন্য যা যা করা দরকার, তা করা হয়েছে।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর রাত সাড়ে ৮টায় ফেসবুক লাইভে এসব কথা বলেন কাদের মির্জা।
তিনি আরও বলেন, পরিকল্পিতভাবে এই নির্বাচন হবে জানলে এই নির্বাচনের সঙ্গে জড়াতাম না। এই এলাকায় ডিসি-এসপির সাজানো নির্বাচন আজ এখানে হয়ে গেছে। চরের ভূমি দখলের মতো ভোটকেন্দ্র দখল হয়েছে।
বড়ভাই সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে ইঙ্গিত করে কাদের মির্জা বলেন, গোলাগুলি করে হিন্দু ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে না দিয়ে চরপার্বতী ইউনিয়নে জামায়াতের প্রার্থীকে জেতানোর জন্য সহযোগিতা করেছে এখানকার প্রশাসন। দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত এখানে চেষ্টাও করেছে জামায়াতের প্রার্থীকে হারিয়ে তার ভাগনেকে জেতানোর জন্য। সে তিন নম্বর ছিল, বিধায় সেটা সম্ভব হয়নি। প্রশাসনকে লেলিয়ে দিয়ে রামপুরে ৭০০ ভোটে এক ভাগনেকে জিতিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কাদের মির্জা আরও বলেন, চরফকিরা ইউনিয়নে সকাল বেলায় তিনটি কেন্দ্র দখল করে মন্ত্রীর আরেক ভাগনে (ফুফাতো বোনের ছেলে) জায়দল হক কচিকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে। তাহলে দেখেন, এই নির্বাচন করার কী দরকার ছিল। আপনি ঘোষণা দিয়ে নিয়ে যেতেন, আপনার খেয়ালখুশি মতো জিতিয়ে নিতেন। মুছাপুরে আইয়ুব আলী জিতেছেন, কান্নাকাটি করে প্রশাসনকে টাকা দিয়ে। ওবায়দুল কাদেরের সাজানো নির্বাচন আমরা মেনে নিতে পারি না।
তিনি বলেন, আমরা মঙ্গলবার আমাদের নেতাদের নিয়ে বসব, সিদ্ধান্ত নেব। আজ আমাকে দাফন করা হয়েছে কোম্পানীগঞ্জে। আমার ৪৮ বছরের রাজনীতি। জীবনে রাজনীতিতে কোনো পদপদবিতে যেতে পারিনি, সে দেয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতে গেছি, সেখানেও পড়ালেখা করতে দেয়নি।
১৫ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডের লাইভ বক্তৃতায় কাদের মির্জা আরও বলেন, আমাদের জন্য রাজনীতি আসেনি। রাজনীতিতে অস্ত্রের প্রয়োজন, টাকার প্রয়োজন। ওবায়দুল কাদের সাহেবরা পারেন না, এমন কোনো কাজ নেই। এটা তাদের পক্ষেই সম্ভব। আমার ছেলেকে দুবার মেরেছে। একটিবার সহানুভূতিও দেখায়নি। ওবায়দুল কাদের এত হিংস্র। তার ভাগনেকে দিয়ে আমার ছেলের ওপর আঘাত করেছে রামপুরে।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সপ্তম ধাপে কোম্পানীগঞ্জে আট ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা বিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ওবায়দুল কাদেরের দুই ভাগনেসহ চারজন কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান ওরফে বাদলের অনুসারী, তিনজন কাদের মির্জার অনুসারী ও একজন জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী জয়লাভ করেছেন।
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাগনেদের মধ্যে রামপুর ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন সিরাজিস সালেকিন রিমন ও চরফকিরা ইউনিয়নে জয় পেয়েছেন জয়দল হক কচি। অন্যদিকে চরপার্বতী ইউনিয়নে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীর কাছে হেরে গেছেন ওবায়দুল কাদেরের আরেক ভাগনে উপজেলা আওয়ামী লীগের মুখপাত্র মাহবুবুর রশিদ মঞ্জু।
কাদের মির্জার অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান সোমবার রাতে বলেন, ‘উনি ওনার মতো করে অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। আমরা কী ধরনের নির্বাচন করেছি, তা কোম্পানীগঞ্জের মানুষ সচক্ষে দেখেছে।’