গোপনে ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিচ্ছে বিজেপি : কেজরিওয়াল

গোপনে ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিচ্ছে বিজেপি : কেজরিওয়াল

প্রথম নিউজ, অনলাইন:   ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টি (আপ) ও বিজেপি পরস্পরের বিরুদ্ধে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। দিল্লিতে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুললেন আম আদমি পার্টির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। বিজেপি ভোটে জিততে পারবে না জেনে ভোটার তালিকায় কারচুপি করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ কেজরিওয়ালের।

গতকাল রবিবার নয়াদিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির জাতীয় আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরিওয়াল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘বিজেপি অসদুপায় অবলম্বন করে কোনো না কোনোভাবে এই নির্বাচনে জিততে চায়।
 তবে দিল্লির জনগণ তা হতে দেবে না। মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় তারা যে কৌশলে জিতেছে, তাদের সেই কৌশল ব্যবহার করে জিততে দেব না।’

কেজরিওয়ালের দাবি, বিজেপি শাহদারা বিধানসভা আসনের ১১ হাজারের বেশি ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার আবেদন করেছিল। তিনি বলেন, ‘গতবার এই বিধানসভা আসনে আমরা পাঁচ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলাম।
এই ১১ হাজার ভোটারের নাম কাটা পড়লে আমাদের জয়ের কোনো সুযোগ থাকত না। কিন্তু তারা হাতেনাতে ধরা পড়েছে এবং ওই নামগুলো বাদ দেওয়া যায়নি। এই কার্যক্রম বন্ধ করায় প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ জানাই।’

কেজরিওয়ালের নয়াদিল্লি আসনে বিজেপি ‘অপারেশন লোটাস’ চালু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
আম আদমি পার্টির এই নেতার ভাষ্য, ‘গত ১৫ দিনে তারা পাঁচ হাজার ভোটারের নাম মুছে ফেলার এবং সাড়ে সাত হাজার নাম যুক্ত করার আবেদন করেছে। আমার নির্বাচনী এলাকায় মোট ভোটার এক লাখ ছয় হাজার। তাহলে নির্বাচন করে কী লাভ?  নির্বাচনের নামে খেলা চলছে।’

বিজেপি বাইরে থেকে লোক এনে তাদের দিল্লির ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত করার পরিকল্পনা করছে বলে দাবি করেন কেজরিওয়াল। তিনি বলেন, ‘আমি কর্মকর্তাদের বলতে চাই—অন্যায় কাজ করতে আপনাদের চাপ দেওয়া হবে।
তবে মনে রাখবেন, আপনারা কাগজপত্রে স্বাক্ষর করবেন এবং ওই স্বাক্ষর রয়ে যাবে। আজ বা কাল সরকার পরিবর্তন হবে, তবে এসব কাগজপত্র ও স্বাক্ষর থেকে যাবে। আইন অনুযায়ী কাজ না করলে আপনারা বিপদে পড়বেন। আর যাঁরা আদেশ দিচ্ছেন তাঁরা পালিয়ে যাবেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিজেপি সম্ভাব্য সব কৌশল ব্যবহারের চেষ্টা করছে, কারণ তারা দিল্লির নির্বাচনে হারতে চলেছে। গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে তারা তিনটি কৌশল ব্যবহার শুরু করেছে। প্রথমত, আম আদমি পার্টির ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া। দ্বিতীয়ত, তালিকায় জাল ভোটার যুক্ত করা। তৃতীয়ত, ভোট কিনতে টাকা বিতরণ করা।’

ভোটার তালিকায় নিজেদের নাম পরীক্ষা করতে দিল্লির ভোটারদের আহ্বান জানিয়েছেন কেজরিওয়াল। এ ছাড়া এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠিও লিখেছেন।

অন্যদিকে রাজ্য বিজেপির প্রধান বীরেন্দ্র সচদেব বলেন, ‘২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর দিল্লিতে ভোটারের সংখ্যা অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়েছে। ২০১৯ সালের নির্বাচনের পরও এমনটা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল। এই নতুন ভোটারদের কারা পেয়েছে? কোনো উত্তর নেই। তারা এবারও একই খেলা খেলতে চাইছে। বিজেপি বলছে, যারা এখন আর দিল্লিতে থাকে না বা যারা মারা গেছে, তাদের নাম কেন তালিকায় থাকবে?’

বিজেপির এই নেতার অভিযোগ, জাল ভোটারদের নাম তালিকায় যুক্ত করতে ভুয়া নথিপত্র ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে দায়ী করছি, এটি আপনার নির্বাচনে জেতার ষড়যন্ত্র।’ 

উল্লেখ্য, দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫ সালের প্রথম দিকে হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আপ ৭০টি আসনের মধ্যে ৬২টি আসনে জয়ী হয়েছিল। সেখানে বিজেপি মাত্র আটটি আসন পেয়েছিল।

সূত্র : এনডিটিভি