গাজায় ‘যুদ্ধবিরতি’ নয়, ‘মানবিক’ বিরতিতেই অনড় বাইডেন
প্রথম নিউজ, ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সমাবেশে প্রকাশ্যে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির দাবি উঠলেও নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান ‘মানবিক’ বিরতির পক্ষেই অনড় থেকেছেন তিনি। বুধবার দেশটির মধ্যপশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য মিনেসোটায় ঘটেছে এই ঘটনা।
২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন উপলক্ষ্যে বাইডেনের জন্য দেশজুড়ে তহবিল সংগ্রহে নেমেছেন তার অনুসারী-সমর্থকরা। বুধবার মিনোসেটার মিনিয়াপোলিসে এ সংক্রান্ত একটি প্রচারণাসভা ছিল, যেখারন যোগ দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ২ শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন সেই সভায়।
বাইডেন যখন সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছিলেন সে সময় হঠাৎ এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘জনাব প্রেসিডেন্ট, আমি একজন রাব্বি (ইহুদিদের ধর্মীয় নেতা) এবং আমি আপনাকে অনুরোধ করছি যে,
জবাবে জো বাইডেন বলেন, ‘আমরা মনে এই মুহূর্তে আমাদের একটি (মানবিক) বিরতি প্রয়োজন। এমন একটি বিরতি, যা সেখানে বন্দি বা জিম্মিদের মুক্তি দিতে পারবে।’
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তপথ ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। ওই দিন শেষ রাত থেকে কয়েক হাজার রকেট ছোড়ার পর বুলডোজার দিয়ে সীমান্ত বেড়া ভেঙ্গে ইসরায়েলে প্রবেশ করে কয়েক শ’ হামাস যোদ্ধা এবং শত শত ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের হত্যার পাশপাশি ২৩৪ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় তার।
জবাবে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী (আইএএফ)। আইএএফের গত চার সপ্তাহের টানা অভিযানে নিহত হয়েছেন ৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। অন্যদিকে ইসরায়েলে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১ হাজার ৪০০ ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। এই নিহত প্রায় সবাই বেসামরিক নাগরিক এবং উল্লেখযোগ্য একটি অংশ নারী ও শিশু।
হামাসের নেতারা বলেছেন, তারা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করছেন। অন্যদিকে ইসরায়েলের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব জানিয়েছে, তাদের একমাত্র হামাসকে চিরতদের ধ্বংস করা।
দারিদ্র্যপীড়িত এবং জনবহুল গাজা উপত্যকায় মানবিক বিপর্যয় এড়ানো ও হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্ত করতে গত তিন সপ্তাহ ধরে সেখানে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে আসছে চীন, রাশিয়া, তুরস্ক ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা যুদ্ধের শুরু থেকেই ইসরায়েলের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানানোর পাশাপাশি ইহুদি শাসিত এই ভূখণ্ডের শাসকদের আর্থিক, সামরিক, রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও গোয়েন্দা সহায়তা দিয়ে আসছে।