কয়েকটি পরিবার-গোষ্ঠীর পাচার করা টাকা আনতে ১ বছরের বেশি লাগবে- গভর্নর

প্রথম নিউজ, অনলাইন: কয়েকটি পরিবার ও গোষ্ঠী দেশের বিপুল টাকা পাচার করেছে, যা ফেরত আনতে একবছরের বেশি সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ড. আহসান এইচ মনসুর। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ কার্যক্রম এবং সমসাময়িক ব্যাংকিং নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
পাচার করা টাকা ফেরত আনা একটি জটিল প্রক্রিয়া উল্লেখ করে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, পাচারকারীদের মধ্যে চট্টগ্রামে বড় শিল্পগ্রুপ ও তার পরিবারও রয়েছে। বেক্সিমকোর পাচার হওয়ার অর্থ ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো। এগুলো শুধু বড় গ্রুপ। ছোটগুলোকে আপাতত দেখছি না।
তিনি বলেন, প্রথমে এস্টেটগুলো (সম্পত্তি) ফ্রিজ করার চেষ্টা করব। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমরা কথা বলছি, চিঠি দিচ্ছি। ল-ফার্মগুলোর সঙ্গে কথা বলছি, শিগগিরই তাদের নিয়োগ করা হবে। এস্টেট ট্রেসিং ফার্মের সঙ্গে কথা বলছি, যথেষ্ট সহযোগিতাও পাচ্ছি। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এস্টেট ফ্রিজ করা হবে। এটিই হবে প্রাথমিক সফলতা। এস্টেট ফ্রিজ করার পর আদালতের মাধ্যমে বাকি প্রক্রিয়া হবে।
গভর্নর বলেন, সব বিষয় আদালতের মাধ্যমে নয়, আউট অব কোর্ট সেটেলমেন্ট বলে একটা কথা আছে। তার আগে সব তথ্য নিতে হবে। যখন সব তথ্য থাকবে তখন তারা নেগোসিয়েশনে আসবে। নেগোসিয়শনে গেলে সব তথ্য নিয়েই যাওয়া লাগবে। নাহলে তো আমরা ঠকে যাব।
তিনি বলেন, চুরি হওয়ার পর বুদ্ধি বাড়িয়ে লাভ নাই। যা হয়ে গেছে, তা হয়ে গেছে। কিন্তু ভবিষ্যতে এমন কোনো কিছু যেন না হয় তা আমরা ঠিক করতে আসছি। এজন্য আমরা প্রয়োজনীয় রেগুলেটরি সংশোধন করতে চাই। তিনি আরও বলেন, অর্থ পাচারে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারও জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ থাকলে আমরা ব্যবস্থা নেব। দুদক বা রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা যদি তথ্য প্রমাণ দেয় যে কেউ জড়িত আছে আমরা ব্যবস্থা নেব।
দেশে আগে মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে দেখানো হতো উল্লেখ করে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি দেখানো হতো ৯-১০ শতাংশ। কিন্তু প্রকৃতভাবে দেখা গেছে ১৩-১৪ শতাংশ। গত মাসে সেটি দেখা গেছে ৮-৯ শতাংশে আছে। সামগ্রিকভাবে মুদ্রাস্ফীতি স্বস্তির দিকেই আছে। আগামী বছর সেটিকে ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনতে পারব বলে ধারণা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের পরিচালক মো. আনিসুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রাম অফিসের পরিচালক মো. সালাহ উদ্দীন, মো. আরিফুজ্জামন, মো. আশিকুর রহমান, স্বরূপ কুমার চৌধুরী, উপ-পরিচালক মো. জোবাইর হোসেন প্রমুখ।