করোনার সব টিকা প্রত্যাহারের ঘোষণা অ্যাস্ট্রাজেনেকার

এই কোম্পানি স্বীকার করে যে, এই টিকা বিরল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।

করোনার সব টিকা প্রত্যাহারের ঘোষণা অ্যাস্ট্রাজেনেকার

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার রিপোর্ট পাওয়ার কারণে সারাবিশ্ব থেকে কোভিড-১৯ টিকা প্রত্যাহার করে নেয়া শুরু করেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এর কয়েকদিন আগে বৃটিশ ফার্মাসিউটিক্যাল বিষয়ক এই কোম্পানি স্বীকার করে যে, এই টিকা বিরল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। উল্লেখ্য, অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি যৌথভাবে এই টিকা আবিষ্কার করে। পরে সেই টিকা উৎপাদন করে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট। এর নাম দেয়া হয় কোভিশিল্ড। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি। প্রস্তুতকারকরা বলেছে, সারাবিশ্ব থেকে এই টিকা প্রত্যাহার করে নেয়া শুরু হয়েছে। এর কারণ, কোভিড-১৯ এর অত্যাধুনিক টিকার পর্যাপ্ততা আছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলেছে, আপডেট হওয়া টিকাগুলোর কারণে এই টিকা বাতিল করা হয়েছে। আপডেট হওয়া টিকাগুলো নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে।

অ্যাস্ট্রাজেনেকা আরও বলেছে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে মার্কেটিং অথরাইজেশন স্বেচ্ছায় প্রত্যাহার করে নিয়েছে। তারা আরও জানায়, এই টিকা আর উৎপাদন করা হবে না এবং আর ব্যবহারও করা হবে না। অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই টিকার কারণে অনেক মানুষের মৃত্যু ঘটেছে এবং অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এমন অভিযোগে বৃটেনে তাদের বিরুদ্ধে ১০ কোটি পাউন্ডের মামলা করা হয়েছে।  ফেব্রুয়ারিতে আদালতের এক ডকুমেন্টে অ্যাস্ট্রাজেনেকা স্বীকার করে যে, কোভিশিল্ড অত্যন্ত বিরল ক্ষেত্রে থ্রোম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোমসহ টিটিএস অথবা থ্রোম্বোসিস সৃষ্টি করতে পারে। এর মধ্যে টিটিএস রক্ত জমাট বাঁধিয়ে ফেলতে পারে। এতে মানুষের শরীরে রক্তের প্লেটলেট কাউন্ট কমে যেতে পারে। বৃটেনে কমপক্ষে ৮১টি মৃত্যুর সঙ্গে এর সম্পর্ক আছে। আদালতে মামলার কারণে কোভিশিল্প প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্তের কথা অস্বীকার করেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। 

অ্যাস্ট্রাজেনেকা এক বিবৃতিতে বলেছে, নিরপেক্ষ হিসাব অনুযায়ী, শুধু প্রথম বছরে কমপক্ষে ৬৫ লাখ মানুষের জীবন রক্ষায় ব্যবহৃত হয়েছে কোভিশিল্ড। বিশ্ব জুড়ে সরবরাহ দেয়া হয়েছে ৩০০ কোটি ডোজ। আমাদের এই প্রচেষ্টাকে বিশ্ব জুড়ে সরকারগুলো স্বীকৃতি দিয়েছে। বৈশ্বিক মহামারি বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে ব্যাপকভাবে দেখা হয়েছে একে। যেহেতু কোভিড-১৯ এর বহু ভ্যারিয়েন্টের টিকার আধুনিকায়ন করা হয়েছে, ফলে আধুনিক পর্যাপ্ত টিকা আছে। আমরা এখন নিয়ন্ত্রকদের সঙ্গে এবং আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করবো। এর ওপর ভিত্তি করে নতুন পথ খোঁজা হবে এবং কোভিড-১৯ মহামারিতে আমাদের অবদান কী হবে তা নির্ধারণ হবে। 

ওদিকে মূল করোনার যে স্ট্রেইন, তার বিরুদ্ধে যেসব টিকা আবিষ্কার হয়েছিল, তার প্রত্যাহার দাবি করেন বিশেষজ্ঞরা। এর পরিবর্তে বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টের জন্য যে আধুনিক টিকা এসেছে তার ব্যবহারের ওপর জোর দেন।