কাউন্সিলরদের মাসিক সম্মানী ৫০ হাজার টাকা হচ্ছে

একই সঙ্গে সভার সম্মানী ভাতা, কার্যালয় ভাড়া ভাতা ও অফিস ব্যবস্থাপনা ভাতাও পুনঃনির্ধারণ করছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ।

কাউন্সিলরদের মাসিক সম্মানী ৫০ হাজার টাকা হচ্ছে
কাউন্সিলরদের মাসিক সম্মানী ৫০ হাজার টাকা হচ্ছে

প্রথম নিউজ, অনলাইন: দেশের সকল সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের বেতন ও ভাতা পুনঃনির্ধারণের উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে কাউন্সিলরদের মাসিক  সম্মানী ৫০ হাজার টাকা হচ্ছে। আগে কাউন্সিলরদের মাসিক সম্মানী ছিল ৩৫ হাজার টাকা। একই সঙ্গে সভার সম্মানী ভাতা, কার্যালয় ভাড়া ভাতা ও অফিস ব্যবস্থাপনা ভাতাও পুনঃনির্ধারণ করছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ। কাউন্সিলরদের সম্মানী ও ভাতা পুনঃনির্ধারণ সংক্রান্ত একটি কমিটি বিষয়টি সুপারিশ আকারে মন্ত্রণালয়ে পেশ করেছে। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন হলে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব আকারে পাঠানো হবে।

সূত্র জানায়, সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের মাসিক সম্মানী ৩৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করার সুপারিশ করেছে কমিটি। এ ছাড়া প্রতি সভায় উপস্থিতির জন্য প্রাপ্ত সম্মানী ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার টাকা করার সুপারিশ করা হয়েছে। ঢাকার দুই সিটির কাউন্সিলরদের কার্যালয় ভাড়া বাবদ ভাতা ৮ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যান্য সিটির ক্ষেত্রে কার্যালয় ভাড়া ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অফিস ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সকল সিটির জন্য মাসিক ৬ হাজার টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। আগে এই খাতে ঢাকার দুই সিটিতে মাসিক ৪ হাজার টাকা বরাদ্দ ছিল। অন্যান্য সিটিতে এই খাতে কাউন্সিলররা দুই হাজার টাকা পেতেন। 

সর্বশেষ ২০১৭ সালে একযোগে সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলর, পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্য, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বেতন-ভাতা পুনঃনির্ধারণ করেছিল স্থানীয় সরকার বিভাগ। সূত্র জানায়, ২০২১ সালে সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলরদের মাসিক সম্মানী ভাতা ও অন্যান্য ভাতা বৃৃদ্ধির জন্য সর্বপ্রথম ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে প্রস্তাব এসেছিল। প্রস্তাবটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এ বিষয়ে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। বেতন-ভাতা পুনঃনির্ধারণের বিষয়টি অর্থ বিভাগেও প্রস্তাব আকারে পাঠানো হয়েছিল। অর্থ বিভাগ এ প্রস্তাবের বিপরীতে ৯টি সুনির্দিষ্ট তথ্য চেয়েছিল। এসব তথ্যের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষ থেকে দেশের সকল সিটি করপোরেশনে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। সিটি করপোরেশনগুলোর পাঠানো তথ্য ও প্রস্তাব চূড়ান্ত করতে সুপারিশ কমিটি সম্প্রতি একটি সভার আয়োজন করে। সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সচিব আকরামুজ্জামান বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি থেকে কাউন্সিলরদের বেতন-ভাতা আরও বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব করা হয়েছিল।

বর্তমানে সিটি করপোরেশনগুলোর রাজস্ব আয় তুলনামূলক বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রস্তাবিত হারে কাউন্সিলরদের সম্মানীসহ অন্যান্য ভাতা বৃদ্ধি করা হলে তার ব্যয় নির্বাহের ক্ষমতা সকল সিটি করপোরেশনের রয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সচিব মাসুদ আলম সিদ্দিক সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরদের কার্যালয় স্থাপনের জন্য তিনটি সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে একটি ওয়ার্ড নির্দিষ্ট করার পরামর্শ দেন। এসময় অর্থ বিভাগের পক্ষ থেকে সিটি করপোরেশনগুলোর বার্ষিক আয়-ব্যয়ের তথ্যচিত্রসহ প্রস্তাব চাওয়া হয়। 

সিটি করপোরেশনের আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় অতিরিক্ত সক্ষমতা অর্জনের বিষয়টির সঙ্গে সভায় উপস্থিতরা একমত হন। বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর অনুমোদনের পর অর্থ বিভাগে প্রস্তাব আকারে পুনরায় পাঠানোর সুপারিশ করা হয়। ২০১৭ সালের পর কাউন্সিলরদের সম্মানী ও ভাতা বৃদ্ধি না পাওয়া, দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতি, বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধি, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি ইত্যাদি বিষয়গুলো অর্থ বিভাগে পাঠানো প্রতিবেদনের সঙ্গে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয় সভায়। এ বিষয়ে কাউন্সিলরদের বেতন-ভাতা পুনঃনির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুস্তাকীম বিল্লাহ ফারুকী বলেন, মর্যাদার দিক থেকে দেশের সব সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলররা সমান।

তাই সম্মানীর বিষয়টি সবার ক্ষেত্রে সমান হওয়া উচিত। তবে স্থান ভেদে কার্যালয় ভাড়া ও ব্যবস্থাপনা খরচের তারতম্য থাকায় এটি কম-বেশি করা হয়েছে। সিটি করপোরেশনগুলোর বাজেট, বাস্তবতা ও অন্যান্য বিষয় মাথায় রেখে বেতন-ভাতা পুনঃনির্ধারণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর এটি অর্থ বিভাগে যাবে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: