এখনো কাকরাইল মোড়ে সড়কে অবস্থান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের- ৩ দফা দাবি

এখনো কাকরাইল মোড়ে সড়কে অবস্থান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের- ৩ দফা দাবি

প্রথম নিউজ, অনলাইন: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন আজ বৃহস্পতিবারও রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে অব্যাহত রয়েছে। শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার বিচার এবং তিন দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো সড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা। গতকাল বুধবার দুপুর থেকে শুরু হওয়া কর্মসূচি রাতেও কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থানের মাধ্যমে অব্যাহত থাকে। আজ সকাল থেকে নতুন করে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন। ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি রাকিব হাসান জানান, সকালে তিনটি বাসে করে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে যোগ দিতে রওনা দিয়েছেন। ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকেও শিক্ষার্থীরা এসে একাত্মতা প্রকাশ করছেন।

কাকরাইল মসজিদ মোড়ে সরজমিনে দেখা যায়, আন্দোলনকারীরা কেউ সড়কে শুয়ে, কেউ বসে স্লোগান দিচ্ছেন—‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’, ‘চুপ কেন যমুনা, খালি হাতে ফিরবো না’।

উল্লেখ্য, এর আগে গত বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় শিক্ষার্থীরা ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি নিয়ে যাত্রা শুরু করলে কাকরাইল এলাকায় দুপুর ১টার দিকে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। এ সময় লাঠিপেটা, টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে মিছিল ছত্রভঙ্গ করা হয়। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে ১০জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নেন এবং স্লোগানে জানান, ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেবো রক্ত’। বিকেলে বৃষ্টি হলেও আন্দোলন থামেনি, শিক্ষার্থীরা ভিজেই প্রতিবাদ চালিয়ে যান।

শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবিগুলো হলো-

১. আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি কার্যকর করতে হবে।
২. ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কোনো কাটছাঁট না করে অনুমোদন করতে হবে।
৩. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের প্রকল্প পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন দিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করতে হবে।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আন্দোলনের প্রতি একাংশ শিক্ষকও সংহতি প্রকাশ করেছেন।

তিন দফা দাবিতে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে লংমার্চ কাকরাইল মসজিদের সামনে পৌঁছালে বাধা দেয় পুলিশ। আন্দোলনকারীরা পুলিশের দেয়া ব্যারিকেড ভেঙে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখন পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে। একপর্যায়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে।