ইলিশ প্রজননে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে অপরিকল্পিত ড্রেজিং ব্যবস্থা 

দেখা গেছে, একাধিক ড্রেজারে বালু উত্তোলনের কাজ চলছে।

ইলিশ প্রজননে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে অপরিকল্পিত ড্রেজিং ব্যবস্থা 

প্রথম নিউজ,পটুয়াখালী: মা ইলিশ রক্ষায় সরকারের নানামুখী পদক্ষেপের কারণে ইলিশের প্রজনন ও উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু সম্প্রতি অপরিকল্পিত ড্রেজিং এর কারণে সাগর ও নদী মোহনায় ইলিশের বিচরণক্ষেত্র ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। মা ইলিশের বিচরণ ও অভিপ্রায়ণ নিরাপদকরণের দাবি করেছেন স্থানীয় ইলিশের আড়ৎমালিকসহ জেলেরা। 

বুধবার (২৫ অক্টোবর) গিয়ে দেখা গেছে, একাধিক ড্রেজারে বালু উত্তোলনের কাজ চলছে। কলাপাড়া উপজেলা মাঝি সমিতির সভাপতি নূরু মিয়া বলেন, আন্ধারমানিকের সাগর মোহনায় বছরের অধিকাংশ সময় বালু কাটা হয়। এসব ড্রেজারের বিকট শব্দে মা ইলিশ অন্যত্র চলে যায়। মোহনা থেকে ফিরে যায় গভীর সাগরে। তাই প্রজননকালে অন্তত বালু কাটা যেন বন্ধ রাখা হয়।

মা ইলিশের নিরাপদ প্রজনন নিশ্চিত করতে ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশসহ সকল প্রকার মাছ ধরা, পরিবহন, ক্রয়- বিক্রিয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। এসময় বঙ্গোপসাগর থেকে নদী মোহনায় ডিম ছাড়তে আসে মা ইলিশ। ইলিশ রক্ষার অভিযান সফল করতে কাজ করছে মৎস্য বিভাগ।

নিয়ম রয়েছে এ সময়ে অভয়াশ্রম নিরাপদকরণসহ অবাধ প্রজননের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে ইলিশের প্রবৃদ্ধি অক্ষুণ্ন রাখতে মৎস্য নৌযানসহ সাধারণের বাণিজ্যিক ট্রলার সমুদ্র উপকূল ও মোহনায় চলাচলে পর্যাপ্ত সতর্কতা অবলম্বন করার। সেখানে সাগর মোহনায় ডুবোচর কেটে ড্রেজার দিয়ে ফ্রি-স্টাইলে রাতদিন বালু উত্তোলনের কাজ চলছে।

স্থানীয় এক মৎস্য ব্যবসায়ী রাজ্জাক সিকদার বলেন, সাগর থেকে নদী মোহনায় যাতে মা ইলিশ প্রবেশ করে ডিম ছাড়তে পারে সে জন্য এ অবরোধ দিয়েছে সরকার। কিন্তু সমুদ্রের মোহনায় ব্যক্তি মালিকানাধীন ড্রেজারে অপরিকল্পিত ড্রেজিং এর কম্পন ও শব্দ দূষণের কারণে বঙ্গোপসাগরের মোহনা দিয়ে মা ইলিশ নদীতে প্রবেশ করতে পারছেনা। আর যদি মা ইলিশ নদী মোহনায় ঢুকতে না পারে তাহলে এই ২২ দিন অবরোধ কোন কাজে আসবে নাহ। সরকারের কাছে দাবি দ্রুত এই ড্রেজিং বন্ধ করা হোক।

ইকোফিসের সহকারী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, ইলিশ দ্রুত গতি সম্পন্ন মাছ। এই সময়টায় মা ইলিশ বঙ্গোপসাগর থেকে নদীতে ডিম ছাড়তে আসে। তবে এ মাছ কোনো ধরনের শব্দ বা কম্পন সহ্য করতে পারে না। এই সময়টাতে ড্রেজিং বন্ধ রাখা উচিত।  কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক,এটি ইলিশের প্রজননকালের জন্য ভয়াবহ সমস্যার। তবে যত দ্রুত সম্ভব আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয় আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।