ইতিহাসের পাতায় সাবেক জুডোকা কামরুন নাহার হীরু
দেশের প্রথম নারী হিসেবে জাতীয় ক্রীড়া ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : দেশের প্রথম নারী হিসেবে জাতীয় ক্রীড়া ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে ইতিহাসের অংশ হয়েছেন সাবেক তারকা জুডোকা কামরুন নাহার হীরু।
বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) ছিল বাংলাদেশ জুডো ফেডারেশনের নির্বাচন। ভোটের প্রয়োজন হয়নি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন সবাই। কামরুন নাহার হীরু নতুন নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক।
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন ও বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নারীরা দায়িত্ব পালন করলেও কেউ ছিলেন ভারপ্রাপ্ত ও কেউ ছিলেন অ্যাডহক কমিটির। সাবেক ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় কামরুন নাহার ডানা ১৯৮৬ সালে প্রথম নারী হিসেবে ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক হয়েছিলেন। পরে একাধিকবার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন।
আরেক সাবেক শাটলার সৈয়দা মরিয়ম তারেকও কিছুদিন ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১২ সালে ৬ মাসের জন্য বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সাবেক খেলোয়াড় জোবেরা রহমান লিনু। সেটি ছিল অ্যাডহক কমিটি।
কামরুন নাহার হীরু সবাইকে ছাপিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন ইতিহাসের পাতায়। দেশের প্রথম নির্বাচিত নারী সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তার নামটি মনে রাখবেন সবাই।
খেলোয়াড়ি জীবনে দেশের প্রথম নারী জুডোকা হিসেবে ব্ল্যাক বেল্ট লাভ করেছিলেন। ১৯৮১ সালে ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান জুডো প্রতিযোগিতা থেকে দেশের প্রথম নারী জুডোকা হিসেবে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। এটি বাংলাদেশের কোনো নারী ক্রীড়াবিদের বিদেশের মাটিতে প্রথম পদক জয়।
একাধিকবার জুডো ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটিতে সদস্য হিসেবে ছিলেন। গত নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদকে পদে লড়াই করে হেরে যান। এবার তিনি ওই পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত।
১৯৭৭ থেকে ১৯৮৬ সাল- টানা ১০ বছর জাতীয় জুডোতে শ্রেষ্ঠত্ব ছিল কামরুন নাহার হীরুর। জাপান কাপ, জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ ও অন্যান্য প্রতিযোগিতা মিলে ৪০টি স্বর্ণ আছে তার। সোনায় মোড়ানো ক্যারিয়ার শেষে সংগঠক হিসেবে কাজ করছেন হীরু। এখন ফেডারেশনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে।
প্রথম নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হয়ে ইতিহাস তো গড়লেন। এখন জুডো খেলার উন্নয়নে কী করতে চান? ‘আমি গত নির্বাচনে এই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরেছিলাম। এবার নির্বাচিত হয়েছি। এখন সবার সহযোগিতা নিয়ে খেলাটির উন্নয়নে কাজ করতে হবে। আমি জেলা থেকে শুরু করবো। কয়েকটি জেলা নিয়ে শুরু হবে আমার কার্যক্রম। প্রতিভা অন্বেষণ, কোচিং ও রেফারিং ডেভেলেপমেন্টও চলবে নির্বাচিত জেলাগুলোতে’-বলছিলেন বাংলাদেশ জুডো ফেডারেশনের নতুন সাধারণ সম্পাদক।
যে কোন খেলার উন্নয়নে প্রথম চাই খেলার জায়গা, নিজস্ব ভেন্যু। জুডোর তা নেই। নতুন সাধারণ সম্পাদক এটাকে দেখছেন বড় সমস্যা হিসেবে, ‘আমি চাইলেই খেলা আয়োজন করতে পারবো না। কারণ জুডোর নিজস্ব ভেন্যু নেই। একেক সময় একেক জায়গায় খেলা চালাতে হবে, ভেন্যু খালি পেলে। এর পাশাপাশি অর্থ ও স্পন্সরের বিষয় তো আছেই। তবে এসব প্রতিকূলতা জেনেই দায়িত্ব নিয়েছি। চেষ্টা থাকবে খেলাটির উন্নয়নে সব ধরনের প্রচেষ্টা।’
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: