ইউপি নির্বাচন নিয়ে সিইসির বক্তব্য
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, নির্বাচনকে ঘিরে কয়েকটি স্থানে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে
প্রথম নিউজ, ঢাকা: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, নির্বাচনকে ঘিরে কয়েকটি স্থানে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তার কোনোটাই প্রত্যাশিত ও কাম্য নয়। ঘটনাগুলোর ওপর বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, এর পেছনে ছিল নির্বাচনকে সামনে রেখে আধিপত্য বিস্তার, বংশীয় প্রভাব, ব্যক্তিগত শত্রুতা, রাজনৈতিক কোন্দল ইত্যাদি। সোমবার রাজধানীর নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি। সিইসি বলেন, গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী সারাদেশে নির্বাচনী সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। তবে এসব প্রাণহানির ঘটনার সবগুলো নির্বাচনী সংঘর্ষের কারণে হয়েছে কি না তা অনুসন্ধানের দাবি রাখে। এর মধ্যে মাত্র কয়েকটি ঘটনা ভোটকেন্দ্রে বা ভোটের দিন ঘটেছে।
কোনো ঘটনা নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগেই ঘটেছে আবার কোনোটা রাতের আধারে ঘটেছে- এসব হত্যার মোটিভ কী তা তত্ত্বের বিষয়। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি মৃত্যুও স্বাভাবিক না। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে বলেছি, নির্বাচনী এলাকায় যারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সহিংসতা করে তাদের রোধ করতে কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করতে। তিনি বলেন, আমাদের জায়গা থেকে শতভাগ পাওয়ার (ক্ষমতা) প্রয়োগ করতে পারছি। কিন্তু যারা মারামারি করছে সেটা আসলে তাদের ব্যাপার। তবে আমরা পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছি কেউ যদি নির্বাচনের সময় কোন সহিংসতা করে তাহলে অবশ্যই তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতি প্রতিবেদন’ শিরোনামে লিখিত বক্তব্যে কে এম নূরুল হুদা বলেন, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গণমাধ্যমে বিভিন্ন খবর প্রকাশিত হচ্ছে। কোনো কোনো খবরে জনমানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে বলে নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। আপনাদের মাধ্যমে কমিশনের বক্তব্য এবং অবস্থান দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে চাই।
সিইসি বলেন, ২০২১ সালে দেশব্যাপী ইউনিয়ন পরিষদ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রথম ধাপে ২১ জুন ও ২০ সেপ্টেম্বর ৩৬৯টি এবং ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপের ৮৩৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তৃতীয় ধাপে ২৮ নভেম্বর ২ হাজার সাতটি এবং চতুর্থ ধাপে ২৩ ডিসেম্বর ৮৪০টি ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া শিগগির পঞ্চম ধাপে আরও প্রায় ১ হাজার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। এবছরের মধ্যেই মেয়াদ উত্তীর্ণ সব ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৮ হাজার ৪৭২টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন পদে প্রার্থী ছিল ৪১ হাজার ২১৮ জন। মোট ১৭টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল এবং ব্যাপক সংখ্যক স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। চেয়ারম্যান পদের বিপরীতে ৩ হাজার ৩১০ প্রার্থী, সাধারণ সদস্য পদের বিপরীতে ২৮ হাজার ৭৪৭ এবং সংরক্ষিত আসনে সদস্য পদের বিপরীতে ১ হাজার ১৬১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এতে গড় ভোট পড়েছে ৭৪ দশমিক ২২ শতাংশ।
এসময় নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার অনুপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন, ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, ইসির যুগ্ম-সচিব ও পরিচালক এম এম আসাদুজ্জামান।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: