অর্ডার বাতিল করছে ওয়ালমার্ট, বড় ক্ষতির মুখে পোশাকশিল্প

ওয়ালমার্টের নির্বাহীরা জানিয়েছেন, ইউরোপ-আমেরিকার ক্রেতারা পোশাক কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। এতে অনেক অর্ডার বাতিল করতে হচ্ছে।

অর্ডার বাতিল করছে ওয়ালমার্ট, বড় ক্ষতির মুখে পোশাকশিল্প
অর্ডার বাতিল করছে ওয়ালমার্ট, বড় ক্ষতির মুখে পোশাকশিল্প

প্রথম নিউজ, ঢাকা: মহামারি করোনাভাইরাসের পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বে চলছে অর্থনৈতিক অস্থিরতা। খাদ্যখাতে মূল্যস্ফীতি হু হু করে বাড়ছে। বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, বিশ্বের ১৫৩ দেশে খাদ্যখাতে মূল্যস্ফীতি ৮১ শতাংশ। উন্নত দেশগুলোতেও এর নেতিবাচক প্রভাব স্পষ্ট। বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে পোশাকখাতেও।

বিশ্বের অধিকাংশ দেশে পোশাক বিক্রি কমেছে। বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো জানাচ্ছে, পোশাক কেনার খরচ কমিয়ে ফেলছেন ক্রেতারা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে পোশাকের কেনাবেচায় দীর্ঘমেয়াদি ভাটা পড়বে। এ পরিস্থিতি ঠিক কবে নাগাদ স্বাভাবিক হবে, তাও বলতে পারছেন না কেউই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে দীর্ঘসময় লাগতে পারে।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বড় খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্ট বিশ্বব্যাপী বিপুল অর্ডার (ক্রয়াদেশ) বাতিল করেছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানটির অর্ডার বাতিলে বড়সড় লোকসানের শঙ্কায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) প্রতিষ্ঠানের মালিকরা। কারণ বাংলাদেশের পোশাকখাতের অন্যতম প্রধান ক্রেতা ওয়ালমার্ট।

ওয়ালমার্টের নির্বাহীরা জানিয়েছেন, ইউরোপ-আমেরিকার ক্রেতারা পোশাক কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। এতে অনেক অর্ডার বাতিল করতে হচ্ছে। ওয়ালমার্ট তাদের বেশিরভাগ সামার কালেকশন (গ্রীষ্মকালীন সংগ্রহ) বিক্রি করে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের ইনভেনটরি নতুন করে ঠিক করছে। চলমান পরিস্থিতি ঠিক হতে দুই প্রান্তিক (ছয় মাস) লেগে যেতে পারে।

এদিকে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় খুচরা বিক্রয় প্রতিষ্ঠান ওয়ালমার্টের এমন পদক্ষেপে দেশের পোশাকখাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) নেতারা জানিয়েছেন, এরই মধ্যে ওয়ালমার্ট কিছু অর্ডার বাতিল করেছে। এতে পোশাকশিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিজিএমইএ নেতারা বলেন, ওয়ালমার্টের অর্ডার বাতিলের তথ্য বিভিন্ন কারখানার মালিক বিজিএমইএকে জানাচ্ছেন। বিজিএমইএ’র পক্ষ থেকেও সদস্য কারখানার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। যাদের অর্ডার বাতিল হচ্ছে, সেগুলোর তথ্য রাখা হচ্ছে।

এদিকে, জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ায় পোশাক উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে অন্তত ২০ শতাংশ। বাড়তি খরচ সামাল দেওয়ার উপায় খুঁজে পাচ্ছে না পোশাক কারখানার মালিকরা। কারখানার মালিকরা বলছেন, বর্তমানে উৎপাদনপর্যায়ে রয়েছে- এমন পোশাকের দাম অন্তত দুই মাস আগে নির্ধারণ করা হয়েছে। তখনকার পরিস্থিতি অনুযায়ী চুক্তি হয়েছে। অথচ তার মধ্যেই হঠাৎ জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় খরচ বেড়ে গেছে। উৎপাদনপর্যায়ে এসে নতুন করে দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের সুযোগ নেই। ফলে লোকসান গুনেই পোশাক উৎপাদন করতে হচ্ছে তাদের।

অন্যদিকে দেশের তৈরি পোশাকের প্রধান বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সরকারি তথ্য সরবরাহকারী সংস্থা ইউরোস্ট্যাটের তথ্য বলছে, জুলাই শেষে জোটে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ। এটা গত ২৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আর পোশাকের একক প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি এখন ৯ দশমিক ১ শতাংশ। এটা গত ৪১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। মূলত রেকর্ড মূল্যস্ফীতির কারণে এসব দেশে পোশাকের চাহিদা কমছে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom