সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে ক্ষতি ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি: বিআরটিএ

শনিবার মহাখালী বাস টার্মিনালে সড়ক নিরাপত্তামূলক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই তথ্য জানান বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার।

সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে ক্ষতি ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি: বিআরটিএ

প্রথম নিউজ, অনলাইন: সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। শনিবার মহাখালী বাস টার্মিনালে সড়ক নিরাপত্তামূলক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই তথ্য জানান বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বছরে ২৫ হাজার কোটি টাকার বেশি জিডিপি লস হয়, এটাকে যদি পার্সেন্টে হিসাব করা হয় তাহলে সেটি মোট জিডিপি’র ১.৫ শতাংশের বেশি। আর এটা হয় শুধু সড়ক দুর্ঘটনার কারণে। এটা শুধু আর্থিক হিসাব। একটা কর্মক্ষম ব্যক্তি যদি কোনো পরিবারে মারা যান, তাহলে তো পুরো পরিবার ধ্বংস। 

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, চালকেরা স্বেচ্ছায় একটা পিঁপড়েও মারতে চান না। কিন্তু নানা পারিপার্শ্বিক কারণে দুর্ঘটনা ঘটে যায়। শুক্রবারও সারা দেশের ৬৪টি জেলায় আমরা স্পিড নিয়ন্ত্রণে ৪০৫টি মামলায় ১০ লাখের বেশি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই অভিযান প্রতিদিন চলমান থাকবে। কেউ যদি ফিটনেসবিহীন গাড়ি নিয়ে সড়কে নামেন, তাহলে বিআরটিএ ধরতে পারলেই সেটা সোজা ডাম্পিং স্টেশনে পাঠিয়ে দেবে। এখানে জরিমানা করা হবে না, জরিমানা করে খুব একটা লাভ হয় না। 

গাড়িচালকদের লাইসেন্স পেতে ডোপ টেস্ট প্রক্রিয়া আরও সহজ করা হচ্ছে জানিয়ে নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, আপনাদের প্রস্তাবে ডোপ টেস্ট ডিজিটাল করার প্রস্তাব এসেছে। ডোপ টেস্ট নিয়ে প্রথমে আমরা কিছু সমস্যা ফেস করেছিলাম। এখন এটা নাই বললেই চলে। আমরা কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে একাধিক মিটিং করে একটা অ্যাপস প্রস্তুত করেছি এটা এখনো চালু হয়নি। চালু হলে বারবার অফিসে যেতে হবে না। তিনি বলেন, ই-ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলে হার্ড কপির জন্য কেউ যেন মরিয়া না হয়। ই-ড্রাইভিং লাইসেন্সই মূল ড্রাইভিং লাইসেন্স। এটা মোবাইলে প্রদর্শন করে গাড়ি চালনা করা যাবে। ই-ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখানোর পরও পুলিশ যদি মামলা করে, তাহলে নির্দিষ্ট করে সেই পুলিশের নাম-ফোন নম্বর লিখে বিআরটিএকে জানানোর কথা বলেছেন নূর মোহাম্মদ। তিনি বলেন, তাহলে বিআরটিএ পুলিশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সেটা নিয়ে বসবে।

চালকদের টার্মিনালভিত্তিক ট্রেনিং দেয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে জানিয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা ট্রেনিংয়ের কথা বলেছেন, পেশাদারদের ট্রেনিং ব্যবস্থা চালু আছে। আর ব্যাপক ট্রেনিংয়ের জন্য আমরা চিন্তা করেছি টার্মিনালভিত্তিক ট্রেনিং আমরা দেবো। আর এ ধরনের অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রামও আমরা ঘন ঘন করবো। যাতে চালক, যাত্রী থেকে শুরু করে সকল স্টেকহোল্ডাররা আরও বেশি সচেতন ও দায়িত্বশীল হয়।

এর আগে চালক ও মালিকপক্ষের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা ও সমস্যার কথা তুলে ধরে বক্তব্য দেন ঢাকা জেলা বাস-মিনিবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি ওসমান আলী, মহাখালী বাস টার্মিনাল সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কালাম। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা জেলা বাস-মিনিবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ছাদিকুর রহমান হিরু ও মহাখালী বাস টার্মিনালের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক। অন্যান্যের মধ্যে ট্রাফিক গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আবুল মোমেন, বিআরটিএ’র রোড সেফটি বিভাগের পরিচালক শেখ মো. মাহবুব-ই-রব্বানী বক্তব্য দেন।