স্বৈরাচারের উগ্র প্রতিমূর্তি শেখ হাসিনার সরকারের পতন অনিবার্য: রিজভী
আজ রাতে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: স্বৈরাচারের উগ্র প্রতিমূর্তি শেখ হাসিনার সরকারের পতন অনিবার্য বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। আজ রাতে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রুহুল কবির রিজভী বলেন,জনসাধারণের স্বার্থের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে এক চরম দুঃসময়ের সৃষ্টি করেছে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী। দুর্নীতির মাধ্যমে প্রচুর টাকা আত্মসাৎ করে বিত্ত বৈভবের বিলাসের মধ্যে আওয়ামী নেতাদের ব্যক্তিগত কল্পস্বর্গ ভেঙ্গে পড়ার সম্ভাবনায় তারা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে।
এখন অবৈধ ক্ষমতাকে জোর করে আঁকড়িয়ে রাখার জন্য হত্যা ও সহিংসতার পথই অবলম্বন করেছে ক্ষমতাসীন গুম—খুনের হোতারা। হিমঠান্ডা ত্রাস আর আতঙ্কের পরিবেশে গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু ভোটের আওয়াজকে স্তিমিত করার পুরনো পরিকল্পনায় মেতে আছে অবৈধ সরকার। কিন্তু দেশের জনগণ অপমানিত, লাঞ্ছিত, নিপীড়িত এবং দমনের নিষ্ঠুর যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে এখন চূড়ান্ত প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। হাজারো সন্ত্রাসের বেড়াজাল ছিন্ন করে জনগণ স্থিতি, শান্তি ও নির্ভয়ে কথা বলাসহ সকল মৌলিক মানবাধিকার ফিরিয়ে আনার দুর্বার সংগ্রামে শামিল হতে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। বর্তমান শতকে বাংলাদেশে সভ্যতার বড় সংকট নব্য আওয়ামী বাকশালী কতৃর্ত্ববাদী শাসন।
তিনি বলেন, নিজেদের সীমাহীন ব্যর্থতা ঢাকার জন্য এখন মিথ্যার বাড়াবাড়ি তাদের একমাত্র সম্বল। মিথ্যা দিয়েই তারা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারবে বলে একটা অযৌক্তিক ধারণা পোষণ করে। তাদের সকল কলাকৌশল এখন কাজে লাগছে না। লজ্জা শরম হারিয়ে রাজনেতা থাকার দিন শেষ হয়ে এসেছে। সরকারের বিরুদ্ধে একযোগে মাঠে নামাটা এখন প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক কতৃর্ব্য। তাদেরকে প্রতিহত করতে না পারলে সন্ত্রাস আর মৃত্যুমিছিল বন্ধ হবে না। আজকের মহাসমাবেশ অধিকার ফেরানোর আন্দোলনের নবতরঙ্গের এক অনন্য ছবি। দুঃশাসন আর দুঃসময়ের শ্রষ্টা শেখ হাসিনার পদত্যাগেই নিশ্চিত হবে মৃত গণতন্ত্রের পুনরুজ্জীবন। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা পুনপ্রতিষ্ঠা নিশ্চিত হলেই মানুষের ভোটাধিকার ফিরে আসবে, বহুদলীয়—বহুমাত্রিক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। জনগণ তাদের মালিকানা ফিরে পাবে।
বিএনপি'র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আজকের মহাসমাবেশ ছিল ঐতিহাসিক এবং সাম্প্রতিক কালের এক অবিস্মরণীয় জমায়েত। এই জমায়েতকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য পুলিশ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ঢাকাসহ দেশব্যাপী মহাতান্ডব শুরু করে। ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশ পথে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতাকর্মীদেরকে ঢুকতে বাধা দেয়া হয়েছে, যানবাহন থেকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে, পকেট তল্লাশী করা হয়েছে, মোবাইল ফোন চেক করা হয়েছে, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন বন্ধ করার পরেও মানুষের ধাবমান ে¯্রাতকে রুদ্ধ করা যায়নি। হিংসা—প্রতিহিংসার রাজনীতিকে মানুষ যে ঘৃণা করে, আজকের মহাসমাবেশে অংশগ্রহণ করে এটিরই জবাব দিয়েছে বিপুল মানুষ। শেখ হাসিনার স্বেচ্ছাতন্ত্র এখন পচে গলে বিকৃত হয়ে গেছে। স্বৈরাচারের উগ্র প্রতিমূর্তি শেখ হাসিনার সরকারের পতন অনিবার্য।
সংবাদ সম্মেলনের রিজভী বলেন,
আজকের সমাবেশ থেকে ঘোষিত বিএনপি’র উদ্যোগে আগামীকাল ২৯ জুলাই শনিবার সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঢাকার প্রবেশ পথে বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান কর্মসূচি সফল করার জন্য ঢাকাবাসীসহ বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল নেতাকর্মীকে উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।
আগামীকাল যেসব পয়েন্টে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হবে তার বিবরণ—
১। গাবতলী
২। উত্তরা
৩। নয়াবাজার ইউসুফ মার্কেট
৪। শনির আখড়া
৫। মুক্তি স্মরণী।