সেতু ১১ মাসে নির্মাণের চুক্তি, কাজ শেষ হয়নি তিন বছরেও

সেতু ১১ মাসে নির্মাণের চুক্তি, কাজ শেষ হয়নি তিন বছরেও

প্রথম নিউজ, রাজবাড়ী: রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের মান্নান গাছির খেয়া ঘাট এলাকায় নির্মাণাধীন সেতুর কাজ তিন বছরেও শেষ হয়নি। মাত্র ১১ মাসে শেষ করার চুক্তিতে সেতুটির কাজ নিয়েছিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দৃশ্যমান কিছু কাজ হলেও দীর্ঘদিন ধরে একেবারেই বন্ধ রয়েছে। সেতুটি না হওয়ায় ওই অঞ্চলের মানুষ প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। পদ্মা নদীর ক্যানালের ওপর নির্মাণাধীন সেতুটির কাজ সম্পন্ন হলে ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের সঙ্গে উজানচর ইউনিয়নের সরাসরি সংযোগ স্থাপিত হবে। বর্তমানে খেয়া নৌকাই ওই অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মান্নান গাছির খেয়া ঘাট দিয়ে ওই এলাকার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ নিয়মিত যাতায়াত করেন। খেয়া ঘাটের দুই পাশে একাধিক  হাট-বাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই অঞ্চলের মানুষ যেমন স্বাস্থ্য সেবার জন্য নিয়মিত ফরিদপুরে যাতায়াত করে থাকে, তেমনি ওপারের মানুষও লেখাপড়া, বাজারসহ নানা প্রয়োজনে গোয়ালন্দে আসেন। এ জন্য দীর্ঘদিন ধরেই দুই অঞ্চলের মানুষ সেখানে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।

গোয়ালন্দ উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, বরিশালের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুই কোটি ৮৪ লাখ ৯ হাজার ১২৫ টাকায় সেতুটি নির্মাণের কাজ পেয়েছে। ২০১৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর নির্মাণকাজ উদ্বোধন হয়েছিল। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের ২৬ জুলাই। কিন্তু দীর্ঘ দিনেও সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয়নি।

ক্যানালের ওপারের ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের আনন্দ বাজারের ব্যবসায়ী তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘এলাকায় কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় আমাদের এলাকার শিক্ষার্থীরা গোয়ালন্দের উজানচর ইউনিয়নের মঙ্গলপুর দাখিল মাদ্রাসা, সাহাজদ্দিন মাতুব্বর পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জামতলা হাইস্কুলে লেখাপড়া করে। সেতুটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন না হওয়ায় তাদেরকে প্রতিনিয়ত যাতায়াতের ভোগান্তি পোহাতে হয়।’

ঘাটের নৌকার মাঝি আ. সাত্তার খাঁ বলেন, ‘নৌকায় শুধু মানুষ যাতায়াত করে। ভারী কোনও পণ্য নেওয়া সম্ভব না। রাতে নৌকা দিয়ে বেশি অসুস্থ রোগী হাসপাতালে নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক কষ্ট পোহাতে হয়। উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলজার হোসেন মৃধা বলেন, ‘সেতুটির নির্মাণ কাজ বর্তমানে পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। প্রকৌশলীসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বারবার তাগিদ দিলেও কোনও কাজ হচ্ছে না।’

এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকৌশলী বজলুর রহমান খান বলেন, ‘কাজের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে ঠিকাদারকে কয়েক দফা চিঠি দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৩ আগস্ট একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাতে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছি তাদের।’

রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ বন্ধ হয়ে থাকা এবং যথাসময়ে শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। গত ৩০ আগস্ট গোয়ালন্দ উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom