রাষ্ট্রপতির কাছে তিন দেশের রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ
প্রথম নিউজ, ঢাকা : রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে পরিচয় পত্র পেশ করেছেন তিন দেশের রাষ্ট্রদূত। এরা হলেন বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার, নেদারল্যান্ডসের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ইরমা ভ্যান ডুরেন ও আর্জেন্টিনার নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মার্সেলো কার্লোস সিইএসএ।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে বঙ্গভবনে তারা পৃথক পৃথকভাবে পরিচয়পত্র পেশ করেন। এসময় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন নতুন রাষ্ট্রদূতদের স্বাগত জানান। রাষ্ট্রপতির প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দানকারী ইউরোপীয় দেশগুলোর একটি ডেনমার্ক। বাংলাদেশ ও ডেনমার্কের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ করে। দুদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ডেনমার্ক বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের অন্যতম অংশীদার এবং বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠী ও উপকূলীয় এলাকার উন্নয়নে ডেনমার্কের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগ উপযোগী পরিবেশের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি দেশের স্পেশাল ইকোনমিক জোনসহ বিভিন্ন সম্ভাবনাময় খাতে ডেনিশ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত বলেন, তার সরকার বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজ করতে আগ্রহী। তিনি দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতির সহযোগিতা কামনা করেন।
অন্যদিকে বাংলাদেশে নবনিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত ইরমা ভ্যান ডুরেন সকালে বঙ্গভবনে পরিচয়পত্র পেশ করেন। রাষ্ট্রপতি তাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার। স্বাধীনতার পর থেকে দুদেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ যোগাযোগ, নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন খাতে বিগত দেড় দশকে প্রশংসনীয় উন্নতি লাভ করেছে। এছাড়া বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতি খুবই সন্তোষজনক। তিনি নেদারল্যান্ডসের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নকে নেদারল্যান্ডস খুবই গুরুত্ব দেয়। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে অনেক ডাচ বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছেন এবং আরো অনেক বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী। তিনি দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতির সহযোগিতা কামনা করেন। এ সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া রাষ্ট্রপতির কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেছেন বাংলাদেশে নবনিযুক্ত আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত। সাক্ষাৎকালে, রাষ্ট্রপতি নতুন রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশে নতুনভাবে আবাসিক মিশন চালু করায় আর্জেন্টিনার সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের কাছে আর্জেন্টিনা অত্যন্ত পরিচিত নাম। কিংবদন্তী ফুটবলার ম্যারাডোনা ও লিওনেল মেসি বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীসহ সবার কাছে খুবই জনপ্রিয়।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার মধ্যে অনেক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ গার্মেন্টস পণ্য, সিরামিক ও ওষুধসহ আন্তর্জাতিক মানের বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন করে। তিনি বাংলাদেশ থেকে এসব পণ্যের আমদানি বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য রাষ্ট্রদূতকে আহ্বান জানান। রাষ্ট্রপতি দুদেশের মধ্যেকার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে দুদেশের সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সফর বিনিময়ের ওপর জোর দেন।
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিনিময়ের মাধ্যমেও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার হতে পারে।
আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত বলেন, আর্জেন্টিনার ফুটবলের প্রতি বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের সমর্থন আর্জেন্টাইন ফুটবলারদের খুবই উৎসাহিত করে। তিনি বলেন, তার দেশ ক্রীড়া ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে অত্যন্ত আগ্রহী। তিনি দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতির সহযোগিতা কামনা করেন।