যে ৫ কারণে আমিরাতের কাছে এমন হার

প্রথম নিউজ, অনলাইন: আমিরাতের কাছে কখনো হারেনি বাংলাদেশ’ – এ দম্ভটা চূর্ণ হয়ে গেল গত রাতে। শঙ্কাটা প্রথম ম্যাচেই ছিল, তবে তা বাস্তবতায় রূপ নিল দ্বিতীয় ম্যাচে এসে। বাংলাদেশ ২ উইকেটে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে হেরেই বসল।
২০৫ রানের বিশাল পুঁজি নিয়েও হারতে হলে দায়টা অতি অবশ্যই এসে পড়ে বোলিং বিভাগের ওপর। তবু ছোট ছোট অনেক বিষয় পার্থক্য গড়ে দিয়েছে শারজায় অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে। কী সেসব বিষয়? চলুন দেখে নেওয়া যাক–
১। পাওয়ারপ্লেতে ব্যর্থতা
পুঁজি যেমনই হোক, নতুন বলে উইকেট তুলে নিতে না পারলে বিষয়টা বিপদে ফেলে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। বাংলাদেশ সেখানেই ব্যর্থ হয়েছে গত রাতে। সফরকারীরা আগের ম্যাচে পাওয়ারপ্লেতে দুই উইকেট তুলে নিয়েছিল। গতকাল পাওয়ারপ্লেতে হজম করতে হয়েছে ৬৮ রান। উইকেট তুলে নিতে পারেনি একটিও। পাওয়ারপ্লে তো নয়ই, ১০ ওভারেও পারেনি, হজম করেছে ১০৭ রান, যা আমিরাতকে এগিয়ে দিয়েছে অনেকটাই।
২। বোলিংয়ে বিকল্পের অভাব
আগের ম্যাচের দুই সেরা বোলারকে বাদ দিয়ে এই ম্যাচে মাঠে নামে বাংলাদেশ। গতকাল দলটা খেলেছে পাঁচ বোলার নিয়ে। আগের ম্যাচেও অবশ্য খেলেছিল নির্ধারিত পাঁচ বোলার নিয়েই। তবে দলে যখন একজন অভিষিক্ত বোলার খেলছেন, তখন শারজার নিখাদ ব্যাটিং উইকেটে একজন বাড়তি বোলার খেলানোর কথা ভাবতেই পারত টিম ম্যানেজমেন্ট। সে বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যায় অভিষিক্ত নাহিদের বিভীষিকাময় প্রথম ওভারের পরেই। সঙ্গে তানজিম হাসান সাকিবও ছিলেন বেশ খরুচে। দুজনের বাজে দিনে একজন বিকল্প বোলার হয়তো চাপটা কিছুটা হলেও সরিয়ে দিতে পারতেন তাদের ওপর থেকে।
৩। ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস!
বাংলাদেশ পাওয়ারপ্লেতে একটাও উইকেট নিতে পারেনি। তার দায় বোলিং বিভাগের যেমন আছে, ফিল্ডিংয়েরও কম কীসে? প্রথম বলেই তো ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন ওপেনার মোহাম্মদ জোহেব, তবে তার সে ক্যাচ নিতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। এরপর আরও দুটো ক্যাচ ছেড়েছেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। তার মধ্যে একটি আবার মোহাম্মদ ওয়াসিমের, যিনি ৪২ বলে ৮২ রানের ইনিংস খেলে আমিরাতকে জয়ের পথে এগিয়ে দিয়েছেন অনেক দূর।
এরপর বাংলাদেশ রান আউটও মিস করেছে অন্তত তিন বার। পুঁজি যত বড়ই হোক, এমন বাজে ফিল্ডিংয়ের পর জয়টা হাত ফসকে যাওয়াটাই খুব স্বাভাবিক।
৪। অভিজ্ঞতার ব্যবহার কই?
প্রায় কাছাকাছি পরিস্থিতি থেকেও আগের ম্যাচটা অভিজ্ঞতার জোরেই জিতেছিল বাংলাদেশ। গত রাতেও যখন ১৭৭ রানে ৭ উইকেট তুলে নেওয়া গেল, তখন মনে হচ্ছিল আরও একবার বুঝি এই অভিজ্ঞতাই বাঁচিয়ে দেবে দলকে। তবে সেটা হলো না এরপর অভিজ্ঞতার ছাপটা না দেখানোর ফলে। যে ওভারে সপ্তম উইকেট খোয়াল আমিরাত, এরপর নতুন ব্যাটার ধ্রুব পারাশার আর হায়দার আলীকে হাত খোলার সুযোগ দিয়েছেন শরীফুল ইসলাম, এরপর শেষ বলে রান আউটের সুযোগটা তো নষ্ট করলেনই, তার থ্রো থেকে মূল্যবান পাঁচটা রানও পেয়ে যায় আমিরাত। এরপর শেষ ওভারে ছক্কা হজমের পর ওয়াইড ইয়র্কার করতে গিয়ে তানজিম সাকিব করে বসেন একটা নো বল, ম্যাচটা তখনই শেষ হয়ে গেছে কার্যত। আমিরাতের জয় নিশ্চিত করার বলেও সুযোগ ছিল রান আউটের, তাওহীদ হৃদয়ের ভুলে সে সুযোগটাও কাজে লাগানো যায়নি, প্রথম দফাতেই ডিপ থেকে থ্রো টা করেননি তিনি, সে সুযোগ নিয়েই দ্বিতীয় রানটা নিয়ে নেন দুই ব্যাটার।
৫। শিশির
হারের এত্তো এতো কারণ ছিল, সঙ্গে ছিল শিশিরও। তবে বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস শিশিরকেই হারের বড় কারণ হিসেবে দেখলেন। বললেন, ‘উইকেট ভালো ছিল। যখন তারা ব্যাট করছিল তখন শিশির তাদের সাহায্য করেছে। যখন আপনি এমন ধরনের মাঠে খেলবেন যেটা ছোট এবং শিশিরের প্রভাব থাকবে, তখন (বোলিংয়ে) আপনাকে হিসেব কষে এবং পরিকল্পনা করে এগোতে হবে।’