‘মনোনয়নের দিনই নৌকার জয় হয়েছে, শুধু আনুষ্ঠানিকতা বাকি’

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সালমারা ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কর্মী সভায় বক্তব্য দেওয়ার মাঝেউপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোকাদ্দেস আলী এ কথা বলেন।

‘মনোনয়নের দিনই নৌকার জয় হয়েছে, শুধু আনুষ্ঠানিকতা বাকি’

প্রথম নিউজ, গাইবান্ধা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে কর্মীসভার বক্তব্যে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোকাদ্দেস আলী বলেছেন, নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ এই উপজেলায় যেদিন মনোনয়ন পেয়েছেন সেদিনই নৌকার জয় হয়েছে। ৭ তারিখে শুধু আনুষ্ঠানিকতা বাকি।

এরই মধ্যে এ বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এছাড়া তার বক্তব্যটি ফিরোজ কবীর (Firoz kobir) নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকেও লাইভ করা হয়। এ ধরনের বক্তব্যে নির্বাচনী এলাকায় শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা। বিষয়টি নিয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ভোটার ও সাধারণ মানুষের মাঝেও শষ্কার সৃষ্টি হয়। 

গত শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সালমারা ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কর্মী সভায় বক্তব্য দেওয়ার মাঝে তিনি এ কথা বলেন। এসময় অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদসহ উপজেলার আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। 

ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালের দিকে ঢাকা পোস্টের হাতে আসে। ভিডিওতে মোকাদ্দেস আলী বাদুকে বলতে শোনা যায় যায়, আমার দাদার আমলের আওয়ামী লীগ তারপরে আমার বাবার, তারপরে হবে আমার। এই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন অন্য কেউ পাবে কেন? এটাতো আমার পৈতৃক সূত্রে, এই আওয়ামী লীগ আমার। এই আওয়ামী লীগের অন্য কেউ যেন মনোনয়ন না চায়।

তিনি আরও বলেন, আবুল কালাম আজাদ এই উপজেলায় যেদিন মনোনয়ন পেয়েছে সেদিনই নৌকা জয়লাভ হয়েছে। ৭ তারিখে শুধু আনুষ্ঠানিকতা বাকি। এই উপজেলায় আওয়ামী লীগ এবং উপজেলায় যারা আসলে উন্নয়নের বিশ্বাসী তারা কিন্তু নৌকা মার্কার আবুল কালাম আজাদকেই ভোট দিবে। এটা কিন্তু যেদিন মনোনয়ন পেয়েছে সেদিনই জয়লাভ হয়ে গেছে, শুধু ৭ তারিখের ভোটের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা বাকি আছে। 

প্রতিপক্ষের সমালোচনা করে মোকাদ্দেস আলী বাদু বলেন, যারা ষড়যন্ত্রকারী তাদের জামায়াত-বিএনপির পোস্টারে ছবি লাগিয়ে ভোট করলে তো হয়ে যায়। যদি ভোট ভালো লাগে তাহলে খালেদা জিয়া আর জামায়াতের ছবি দিয়ে দাও, সমস্যা কি?

বক্তব্যের এক পর্যায়ে মোকাদ্দেস আলী বাদু নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, একদিনের জন্য আপনাদের ভূমিকায় থাকতে হবে। ওই একটা দিন আপনাদের আত্মীয়-স্বজনকে বলবেন। মানুষ কিন্তু ভোটকেন্দ্রে আসতে চায় যদি সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশ থাকে। তাদের বললেই কিন্তু চলে আসবে। ভোটের দিনটা নারী-পুরুষ সবাই চায় যে আজকে ভোট দেব সারাদিন একটু ঘুরেও বেড়াব। শুধু আপনাদের সেই মেসেজটা ভোটারদের কাছে জানাতে হবে।

এদিকে আওয়ামী লীগ নেতা মোকাদ্দেস আলী বাদুর এমন বক্তব্য নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে শুরু হয়েছে নানা সমালোচনা। এছাড়া ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। তবে মতামত জানতে চাইলেও বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি কেউ। বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোকাদ্দাস আলী বাদুকে। তার মোবাইল ফোনে কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়। 

এ বিষয়ে গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাসেল মিয়া জানান, ভিডিও বক্তব্যের বিষয়টি তার নজরে এসেছে। এটি খতিয়ে দেখা হবে। তবে আচরণবিধি লঙ্ঘন হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।