ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

প্রথম নিউজ, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জ শহরের পোস্ট অফিস মোড়ের ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হেলথকেয়ার ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সিভিল সার্জন কার্যালয়। কমিটিকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে সিভিল সার্জন বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
 
রোববার ৯ জুলাই শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ইমদাদুল হককে কমিটির প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে জেলা সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ইমদাদুল হককে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিকে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে সরেজমিন তদন্ত করে সিভিল সার্জন বরাবর প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ক্লিনিক ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থ নেওয়া হবে। 


প্রসঙ্গত, গত ৩ জুলাই সোমবার রাত আটটার দিকে নাকের পলিপাস জনিত সমস্যা নিয়ে গোপালগঞ্জ শহরের পোস্ট অফিস মোড়ের  ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকে ভর্তি হন হাফিজুর চৌধুরী (৪২) নামে এক ব্যক্তি। ভর্তির পর হাফিজুরকে অপারেশনের জন্য ১১টি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়। তখন প্রতিটি পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। রিপোর্ট ঠিক থাকায় ওইদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে নাকের পলিপাসের জন্য অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হাফিজুরকে। সেখানে নেওয়ার পর হাফিজুরকে অ্যানেসথেসিয়া ইনজেকশন পুশ করে ওই ক্লিনিকের ডাক্তার ডা. হিরম্ব রায় ও ডা. গোলাম সরোয়ার। 

অ্যানেসথেসিয়া পুশ করার পর মারা যান হাফিজুর। বিষয়টি স্বজনরা বুঝে উঠার আগেই স্বজনদের কাছে চিকিৎসার কথা বলে নিজেরা আ্যম্বুলেন্স ভাড়া করে কৌশলে খুলনার একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায় ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হেলথকেয়ার ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। সেখানে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত দেখে রোগীকে ফেরত দেয়। পরে এ নিয়ে মৃতের স্বজনরা অভিযোগ তুললে কয়েক দফায় মীমাংসার জন্য সালিস বৈঠকে বসা হয় ও বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য মোটা অঙ্কের টাকার অফারও দেওয়া হয় মৃতের স্বজনদের।

এ খবর জানা জানি হওয়ার পর থেকে শহরজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে স্বজনদের অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর বিষয়টি নজরে আসে সিভিল সার্জনের। এমন অভিযোগেে প্রেক্ষিতে রোববার তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়।