ব্যাংকেও বাড়ছে ডলারের দাম
ব্যাংকে প্রতি ডলারের দাম বেড়ে হয়েছে ৮৫.৭৯ টাকা
প্রথম নিউজ, ঢাকা : ব্যাংকে প্রতি ডলারের দাম বেড়ে হয়েছে ৮৫.৭৯ টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ৪,৫০০ কোটি ডলারে নেমেছে।
করোনার প্রকোপ কমে আসায় আমদানি খরচ হঠাৎ ৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে। রপ্তানি অবশ্য বেড়েছে ৬০ শতাংশের মতো। আবার প্রবাসী আয় কমেছে প্রায় ২২ শতাংশ। সার্বিকভাবে মার্কিন ডলারের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ডলারের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এ জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ব্যাংকিং চ্যানেলে গত বৃহস্পতিবার প্রতি ডলারের দাম বেড়ে হয়েছে ৮৫ টাকা ৭৯ পয়সা। আর ডলার বিক্রির কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে আবার ৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলারে নেমে গেছে।
এদিকে প্রায় দেড় বছর পর পর্যটনের জন্য ধীরে ধীরে খুলছে বিভিন্ন দেশের সীমান্ত। করোনার কারণে থেমে যাওয়া বহুজাতিক বিমান সংস্থাগুলো এখন অনেক গন্তব্যে বিমান চলাচল কার্যক্রম শুরু করেছে। ফলে মানুষের পেশাগত কাজ, শিক্ষা, চিকিৎসা ও কেনাকাটা এবং ভ্রমণের জন্য বিভিন্ন দেশে যাতায়াত শুরু হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে খোলাবাজারে ডলারের দামে। ইতিমধ্যে খোলাবাজারে ডলারের দাম ৯০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
এর কারণ হিসেবে ডলার ব্যবসায়ীরা বলছেন, মানুষের ব্যাপক হারে দেশের বাইরে যাওয়ার কারণে হঠাৎ ডলারের চাহিদা অনেক বেড়েছে। সেই তুলনায় হাতে হাতে দেশে ডলার আসছে না। ফলে দাম বেড়েছে। বিদেশ থেকে হাতে হাতে ডলার না এলে দামের ঊর্ধ্বগতি শিগগির থামবে না।
ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলার আসার বড় মাধ্যম রপ্তানি আয়, প্রবাসী আয় এবং বিদেশি অনুদান ও ঋণ। আর ডলার ব্যয় হয় আমদানি এবং বিদেশি সেবা, শিক্ষা, চিকিৎসা, যাতায়াত ও বেতন-ভাতার খরচ মেটাতে। এ ছাড়া আমদানি খরচও (জাহাজ ভাড়া) বৃদ্ধি পেয়েছে। সব মিলিয়ে ডলার খরচ বেড়ে যাওয়ায় মুদ্রাটির দাম বাড়ছে। যে কারণে বাড়ছে ভোগ্যপণ্যের দাম। এর প্রভাব পড়েছে দেশের পুরো অর্থনীতিতে, যা অস্বস্তিতে ফেলেছে জনগণকে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘পণ্য ও মূলধনি যন্ত্রপাতি এত আসছে কি না, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। কারণ, হঠাৎ আমদানি বেড়ে যাওয়ায় ডলারের ওপর চাপ তৈরি হয়েছে। ব্যাংকগুলো সীমার বেশি ডলার ধারণ করে দাম বাড়াচ্ছে কি না, তা–ও দেখতে হবে। ডলারের দাম মূলত আমদানি-সরবরাহের ওপর নির্ভর করবে। দাম ধরে না রেখে আশপাশের দেশগুলোর সঙ্গে ডলারের দাম সমন্বয় করতে হবে। আয় বাড়াতে দক্ষ জনবল পাঠানো ও প্রবাসী আয় আনা আরও সহজ করতে হবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংক গত ২৩ সেপ্টেম্বর ৮৫ টাকা ৩০ টাকা পয়সা দরে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করেছিল। গত বৃহস্পতিবার যা বেড়ে হয় ৮৫ টাকা ৭৯ পয়সা।
তবে গ্রাহকেরা চাইলে পাসপোর্ট এনডোর্স করে ব্যাংক থেকেও ডলার কিনতে পারেন। ব্যাংকগুলো অবশ্য এখন ৮৮ টাকার কমে ডলার বিক্রি করছে। তবে ঋণপত্রের দেনা পরিশোধে ব্যবসায়ীদের অবশ্য ডলারের জন্য কিছু কম টাকা দিতে হচ্ছে। ফলে খোলাবাজারের সঙ্গে ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলারের দামের পার্থক্য ৪ টাকা হয়ে গেছে, স্বাভাবিক সময়ে যা ২-৩ টাকার মধ্যে থাকে।
এদিকে পণ্য আমদানিতে ব্যবসায়ীদের বেশি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। আর আমদানি খরচের তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে করোনার
টিকা। এতেও তিন মাস ধরে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়ছে। অর্থাৎ দিনে দিনে দুর্বল হচ্ছে বাংলাদেশি টাকা।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: