বাজারে শীতের আগাম সবজি, দাম নাগালের বাইরে

ক্রেতারা বলছেন, আগাম শীতকালীন সবজি বাজারে উঠলেও দাম অন্যবারের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি। তবে ভালো দাম পাওয়ায় শীতকালীন সবজি চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকের। 

বাজারে শীতের আগাম সবজি, দাম নাগালের বাইরে

প্রথম নিউজ, ঢাকা: শীতের আগেই শীতকালীন আগাম সবজিতে বগুড়ার বাজার এখন ভরপুর। তবে এত সবজি আসার পরও দাম আকাশছোঁয়া। ক্রেতারা বলছেন, আগাম শীতকালীন সবজি বাজারে উঠলেও দাম অন্যবারের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি। তবে ভালো দাম পাওয়ায় শীতকালীন সবজি চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকের। 

আগাম সবজির ভালো দাম পেয়ে কৃষকেরা এখন পুরোদমে ব্যস্ত শীতকালীন সবজি চাষে। শীতকালীন সবজির চারা রোপণ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, জেলায় এবার ৪ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন আগাম সবজির চাষ হয়েছে। এই সবজিতে বাজার এখন ভরপুর।

জেলায় এবার ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষের প্রস্তুতি চলছে। বগুড়ায় এবারও রেকর্ড পরিমাণ জমিতে শীতকালীন আগাম সবজির চাষ হয়েছে। আবাদ হওয়া আগাম সবজির মধ্যে রয়েছে মুলা, শিম, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, ঢ্যাঁড়স, লালশাক, পালংশাক, পুঁইশাক, কাঁচামরিচ, করলা, বরবটি, ঝিঙে, শসা, কচুমুখী, পটল ইত্যাদি।

সরেজমিনে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় দেখা যায়, কৃষকের খেতে শোভা পাচ্ছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, গাজর, মুলাসহ হরেক রকম শীতকালীন সবজি। সাতসকালে কিছু চাষি খেত থেকে আগাম চাষ করা সবজি তুলে বাজারে নিতে ব্যস্ত। আর কেউ কেউ শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত।

শাজাহানপুর উপজেলার চুপিনগর গ্রামের কৃষক আল আমিন জানান, এবার দুই বিঘা জমিতে তিনি মুলা ও ফুলকপির চাষ করেছেন। পাইকারিতে প্রতি কেজি মুলা বিক্রি করেন ৩০ টাকায়। গত বছর প্রতি কেজি মুলা বিক্রি করেছিলেন পাঁচ টাকায়। এ ছাড়া এবার ফুলকপি বিক্রি করেন ১০০ টাকা কেজিতে। গতবার দাম ছিল ৪০ টাকা কেজি।

শাজাহানপুর উপজেলার শাহনগর এলাকার কৃষক রইচ উদ্দিন বলেন, ৮০ শতক জমিতে এবার শীতকালীন আগাম শিম চাষ করেছেন। সাত দিন আগে এক মণ শিম বিক্রি করেছেন পাঁচ হাজার টাকায়। গতবার এ সময় প্রতি মণ শিম বিক্রি করেছিলেন দুই হাজার টাকায়। মহাস্থান হাটে মঙ্গলবার বেগুন বিক্রি করতে আসা কৃষক তরিকুল ইসলাম বলেন, ১ মণ বেগুন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ টাকায়। গতবার এ দাম ছিল অর্ধেক। মহাস্থান হাটে গত কয়েক দিনে শীতকালীন আগাম সবজি শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, বেগুনের সরবরাহ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। তবে বেশির ভাগ শাকসবজির দাম সাধারণের নাগালের বাইরে। 

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগামী মাসের মধ্যে বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ আরও বাড়বে। তখন দাম কিছুটা কমতে পারে। মঙ্গলবার মহাস্থান হাটে পাইকারিতে প্রতি কেজি শিম ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। খুচরা পর্যায়ে এ দাম ২০০ টাকা কেজি। আর ছোট আকারের বাঁধাকপি ও ফুলকপি গড়ে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। 

এ ছাড়া পাইকারিতে প্রতি কেজি মুলা ৩০ টাকা, বেগুন ৪৫, কচুমুখী ও করলা ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ৩০ টাকা, শসা ২০ টাকা, লালশাক, পালংশাক ও ডাঁটাশাক গড়ে ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। আর পাইকারি বাজার থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে শহরের ফতেহ আলী বাজারে আসতেই এসব সবজির দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে। যেমন মহাস্থান হাটের ৩০ টাকা কেজি দরের মুলা ফতেহ আলী বাজারে এসে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। আর ৪৫ টাকার বেগুন বিক্রি হয় ৮০ টাকায়। তাতে শীতকালীন আগাম এ সবজি বাজারে এলেও তা সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরেই থেকে যাচ্ছে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom