ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলায় বিশিষ্ট নাগরিকদের বিবৃতি
রোববার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে গণমাধ্যমে এই যৌথ বিবৃতি পাঠান তারা। বিবৃতিতে বিশিষ্টজনেরা বলেছেন, অবরুদ্ধ এলাকায় উপর্যুপরি অত্যাধুনিক সশস্ত্র আক্রমণের শিকার হচ্ছে শিশু, নারীসহ সাধারণ মানুষ।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের হামলায় গভীর উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের বিশিষ্ট ২৮ নাগরিক। রোববার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে গণমাধ্যমে এই যৌথ বিবৃতি পাঠান তারা। বিবৃতিতে বিশিষ্টজনেরা বলেছেন, অবরুদ্ধ এলাকায় উপর্যুপরি অত্যাধুনিক সশস্ত্র আক্রমণের শিকার হচ্ছে শিশু, নারীসহ সাধারণ মানুষ। বিদ্যুৎ, পানিসহ সব নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহ বন্ধ করার ফলে মানবিক বিপর্যয় চরম পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। নিরীহ জনসাধারণের ওপর নিপীড়ন, নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ফিলিস্তিনিদের আপন বাসভূমি থেকে উৎখাত করে ইসরায়েল রাষ্ট্র সৃষ্টি করা হয়েছিল। তারপর থেকে ধারাবাহিকভাবে হত্যা ও নির্যাতনের শিকার অধিবাসীরা নিজ ভূখণ্ডে উদ্বাস্তু জীবনযাপন করে চলেছে। পুরো ভূখণ্ড থেকে সরে এসে মাত্র একটি করিডরনির্ভর গাজা এলাকায় বসবাস করতে বাধ্য করা হয়েছে। সেখানেও জাতিসংঘের প্রস্তাব উপেক্ষা করে ইসরায়েল নতুন বসতি স্থাপনে লিপ্ত রয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত ইসরায়েল এসব অপকর্মে পশ্চিমা শক্তির সামরিক, বেসামরিক ও তথ্য মাধ্যমের সর্বাত্মক সহযোগিতা লাভ করে চলেছে।
বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, ‘আমাদের ধারণা, দীর্ঘদিনের বঞ্চনার বিরুদ্ধে পার্শ্ববর্তী আরব দেশসহ বিশ্ববাসীর নীরব ভূমিকা ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সশস্ত্র যুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করেছে। তা সত্ত্বেও হামাস বাহিনীর অতর্কিত ইসরায়েলে বেসামরিক নাগরিক, স্থাপনায় ও বিভিন্ন দেশের লোকজনের ওপর আক্রমণ অনভিপ্রেত। বর্তমান অসহনীয় পরিস্থিতি সাম্প্রতিক ঘটনাবলি নয়; বরং সামগ্রিক বঞ্চনার ধারাবাহিকতার প্রতিরোধরূপে বিবেচনা করা সমীচীন। তার বিপরীতে ইসরায়েল সরকার যে অমানবিক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়েছে, তা কোনো অবস্থাই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা অবিলম্বে এই মানবিক বিপর্যয়ের অবসান চাই। আমাদের একান্ত কামনা, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে সমস্যার স্থায়ী সমাধান।’
বিবৃতিতে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, রাশেদা কে চৌধুরী, নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারওয়ার আলী, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদবিরোধী মঞ্চের সদস্যসচিব নুর মোহাম্মদ তালুকদার, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম, বিএমএর সাবেক সভাপতি রশিদ-ই-মাহবুব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী রাণা দাশগুপ্ত, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের নির্বাহী সভাপতি রোবায়েত ফেরদৌস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবায়েদা নাসরিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সৈয়দ আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তবারক হোসাইন, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী পারভেজ হাসেম, জাতীয় শ্রমিক জোটের কার্যকরী সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ, খেলাঘরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম জহির, সমাজকর্মী সেলু বাসিত, রাজনীতিক অসিত বরণ রায়, সংস্কৃতি মঞ্চের আহ্বায়ক সেলিম রেজা, উঠোনের সভাপতি অলক দাশগুপ্ত, আনন্দনের প্রধান সংগঠক এ কে আজাদ, বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা, খেলাঘরের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল কবির, ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (বিসিএল) সভাপতি গৌতম শীলের নাম উল্লেখ রয়েছে।