ফরিদপুর-৩: ধরাছোঁয়ার বাইরে সন্ত্রাসীরা, বাড়ছে আতঙ্ক

ফরিদপুর-৩: ধরাছোঁয়ার বাইরে সন্ত্রাসীরা, বাড়ছে আতঙ্ক

প্রথম নিউজ, ফরিদপুর: দরজায় কড়া নাড়ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ০৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের দিন ধার্য করা রয়েছে। অথচ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে যেসব সন্ত্রাসীরা ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করেছেন, তারা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন।
অন্তত ২০ জনের এই সন্ত্রাসী তালিকায় অন্যতম সন্ত্রাসী মোবারক খলিফা, শহিদুল ইসলাম মজনু, গোলাম মোহাম্মদ নাসির, জহিরুল ইসলাম জনি, তরিকুল ইসলাম নাসিম, ফাহাদ বিন ওয়াজেদ ফাইন, এজাজ খান, শাহিন মোল্লা, শওকত হোসেন ওরফে সাকো, বায়তুল আমানের সোহানুর রহমান সোহাগ, রাকিবুর রহমান রকিব ও হাসিবুর রহমান জেমি। তাদের সবার বিরুদ্ধেই অস্ত্র, মাদকদ্রব্য কারবারিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ ও একাধিক মামলাও রয়েছে।  

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, গত ২৬ ডিসেম্বর মামুদপুরে ঈগল প্রতীকে ক্যাম্পে হামলা-ভাঙচুর এবং এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহতের ঘটনায় মামলার পর হিটার মোবারক খলিফা আত্মগোপনে রয়েছেন। তাকে ধরতে পুলিশ এবং র‍্যাব দফায় দফায় অভিযান চালাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর পর স্থান পরিবর্তন করায় তাকে ধরা যাচ্ছে না। তবে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, মোবারক খলিফা আত্মগোপনে থেকেও ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। নৌকার বাইরে ভোট দিলে জানে মেরে ফেলার হুমকিও দিচ্ছেন। জীবনের ভয়ে তারা নাম প্রকাশ করে বক্তব্য দিতে রাজী নয় জানিয়ে বলেন, নির্বাচনের আগে মোবারক খলিফাকে গ্রেপ্তার না করা গেলে, অনেকেই ভোট দিতে যাবেন না, গেলে জীবনের ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। একই অবস্থা শহিদুল ইসলাম মজনুর বেলায়ও। অস্ত্র, ধর্ষণ ও একাধিক চাঁদাবাজি মামলার আসামি মজনুও পুলিশের খাতায় আত্মগোপনে। তবে আত্মগোপনে থেকেই ভোটারদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন।  

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঈশান গোপালপুর এলাকার ছাত্রলীগের এক নেতা জানান, শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মজনু চেয়ারম্যান নির্বাচনী সভা করেছেন। সেখানে ঈগল প্রতীকের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন তিনি।

এদিকে, উল্লিখিত সন্ত্রাসীদের নামে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী সমন্বায়ক শোয়েবুল ইসলাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সেই অভিযোগপত্রে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনার যেন না ঘটে তার জন্য নির্বাচনের আগেই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।  

এ ব্যাপারে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাউদ্দিন বলেন, আমরা এদের সবাইকে নজরদারিতে রেখেছি। তবে কারও বিরুদ্ধে যদি ওয়ারেন্ট না থাকে কিংবা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকে তবে তো তাকে আর আটক কিংবা গ্রেপ্তার করতে পারি না। তবে, যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে, তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।