নেশার টাকার জন্য স্ত্রীকে হত্যায় স্বামীর যাবজ্জীবন

 নেশার টাকার জন্য স্ত্রীকে হত্যায় স্বামীর যাবজ্জীবন

প্রথম নিউজ, ফরিদপুর : ফরিদপুরে স্ত্রী হত্যার ৮ বছর পর স্বামী সজিব শেখকে (৩০) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক শিহাবুল ইসলাম এ রায় দেন। এ সময় আসামি সজিব শেখ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে পুলিশ প্রহরায় জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

সজিব শেখ ফরিদপুর সদর উপজেলার বিলমামুদপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই গ্রামের লাল মিয়া শেখের ছেলে। ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

মামলার বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, বিয়ের পর স্বামী সজিব শেখ ও স্ত্রী শিখা ওরফে রেখা (২৫) ঢাকার দোহারের পশ্চিম লোটাখোলা এলাকায় ৯ বছর যাবৎ বসবাস করছিলেন। ঘটনার তিন মাস আগে ঢাকা থেকে ফরিদপুর জেলা সদরের চরকমলাপুর এলাকায় একটি টিনশেডে স্ত্রী, তিন ছেলেসহ ভাড়া বাসায় আসেন সজিব। তিনি রিকশা ও ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তবে নেশা করতেন তিনি। নেশার টাকার দাবিতে প্রতিদিনিই স্ত্রীকে মারধর করতেন।

এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি রাতে স্ত্রীকে মারপিট শুরু করেন সজিব। একপর্যায়ে রেখার মাথায় হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও বটি দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করেন। অতঃপর গলায় রশি পেঁচিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তিনি।

এ ঘটনার একদিন পর নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে ফরিদপুরের কোতয়ালি থানায় হত্যা মামলা করা হয়। মামলটি তদন্ত করেন কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনছের আলী।

পরে স্বামী সজিব শেখকে গ্রেফতার করা হলে ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন সজিব। অতঃপর দীর্ঘ তদন্ত শেষে এসআই এনছের আলী স্বামী সজিব শেখকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।

রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের পিপি মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, এ রায়ে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে এবং সমাজে অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে।