নেশাগ্রস্ত স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রী নিহত
রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঈশ্বরদী ইপিজেড গেট এলাকায় স্বামী মিলন হোসেনের ছুরিকাঘাতে স্ত্রী রিনা বেগম নিহত হন।
প্রথম নিউজ, রাজশাহী: নেশাগ্রস্ত স্বামীর ছুরিকাঘাতে স্ত্রী রিনা বেগম নিহত হয়েছেন। তার লাশ দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঈশ্বরদী ইপিজেড গেট এলাকায় স্বামী মিলন হোসেনের ছুরিকাঘাতে স্ত্রী রিনা বেগম নিহত হন। এশার নামাজের পর আড়ানী কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়। রিনা বেগম রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌরসভার চকসিংগা গ্রামের আকবর আলীর মেয়ে। স্বামী মিলন হোসেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের বাসুনিয়া পট্টির শুকুর আলীর ছেলে।
জানা গেছে, ২০ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের দেড় বছরের মধ্যে রিনা বেগমের গর্ভে সন্তান আসে। তিন মাসের গর্ভের সন্তানকে রেখে স্বামী মিলন বাড়ি থেকে চলে যায়। দীর্ঘ ৭ বছর পর স্ত্রীর কাছে ফিরে আসে মিলন। তাদের বিয়ের ১৩ বছরের সময়ে ব্যাপক নির্যাতন শুরু করে তার স্বামী। একপর্যায়ে তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়।
২০২১ সালে আবারো ফিরে এসে পুনরায় বিয়ে করে মিলন। সংসারে অভাব অনটনের মধ্যে রিনা বেগম ঈশ্বরদী ইপিজেডের রেনেসাঁ কোম্পানিতে চাকরি নেয়। স্বামী নেশাগ্রস্ত হওয়ায় টাকা চায়। টাকা দিতে না পারলেই নির্যাতন করা হয়।
রোববার সকালে রিনা বেগম কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য ভাড়া বাড়ি থেকে বের হয়। রিনা ইপিজেড গেট এলাকায় পৌঁছলে স্বামী মিলন হোসেন তার পথরোধ করে ছুরিকাঘাত করলে ঘটনাস্থলে নিহত হন রিনা। পরে নিহতের স্বামী মিলনকে পুলিশ আটক করে।
রিনা বেগমের মা কল্পনা বেগম বলেন, পিতার কাছ থেকে মিলন হোসেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছোটবেলায় চারঘাট উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের কালুহাটি মধ্যপাড়া গ্রামের নানা বিশু প্রামাণিকের কাছে বড় হয়। সেখান থেকে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে একবার তাদের মধ্যে ডিভোর্স হয়েছিল। হাত পা ধরে তারা আবার সংসার শুরু করে। এরপরও আমার মেয়েকে বাঁচতে দিল না মিলন। আমি তার ফাঁসি চাই।
বর্তমানে রিনা-মিলন দম্পতির ১৬ বছরের জুয়ায়ের হোসেন নামে একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। জুয়াবের হোসেন স্থানীয় স্কুলে নবম শ্রেণির ছাত্র। রিনার স্বামী সন্তান ছাড়াও বৃদ্ধ মা, বাবা, তিন বোন ও এক ভাই রয়েছে।
এশার নামাজ পর তার জানাজায় রেনেসাঁ কোম্পানির মালিক সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের এমপি অংশগ্রহণ করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবার নিয়ে গিয়ে পারিবারিকভাবে দাফন করে। এ বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে। গ্রেফতার মিলন হোসেনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।