দিল্লির বায়ুদূষণ : ৫ রাজ্যকে কঠোর নির্দেশনা সুপ্রিম কোর্টের

দিল্লির বায়ুদূষণ : ৫ রাজ্যকে কঠোর নির্দেশনা সুপ্রিম কোর্টের

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : শীতকালে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির অসহনীয় বায়ুদূষণ যে কোনো মূল্যে রোধ করতে দিল্লি ও তার আশপাশের ৪ রাজ্যকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। এই রাজ্যগুলো হলো পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ এবং রাজস্থান।

মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিতে বিচারপতি এসকে কাউল এবং বিচারপতি শুভাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চ এই চার রাজ্যের সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের গাফিলতির কারণে এখানে জনগণ মৃত্যু পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আমরা এর অবসান চাই।’

সাধারণত শীতের শুরু থেকেই ভয়াবহ দূষণ ঘটে দিল্লির বাতাসে। এই দূষনের প্রধান কারণ দিল্লির সংলগ্ন পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ ও রাজস্থানের গ্রামগুলোতে কৃষকদের খড়-বিচুলি পোড়ানো। শীতের শুরুতেই ধান বা গমের ক্ষেতগুলো থেকে ফসল তোলার পর পরবর্তী ফসল চাষের জন্য জমিকে প্রস্তুত করতে ধান-গমের গাছের গোড়া পুড়িয়ে দেন কৃষকরা।

চার রাজ্যের একরের পর একর জমিতে আগুন দেওয়ায় ফলে সৃষ্ট বিপুল পরিমাণ ধোঁয়া ও ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তুকণা ভেসে আসে দিল্লি বাতাসে। শীতের নয়াদিল্লির কুয়াশায় ভারী বাতাসের কারণে সেসব সহজে দূরও হয় না। ফলে সৃষ্টি হয় ভয়াবহ বায়ুদুষণ।

প্রতি বছর শীতকালে তাই নয়াদিল্লির হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে সর্দি, কাসি, শ্বাসকষ্ট, চোখ জ্বালাপোড়া জাতীয় শারীরিক সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন শত শত রোগী। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে, শুধু শীতকালের বায়ুদূষণের কারণে প্রত্যেক দিল্লিবাসী তার আয়ুষ্কাল থেকে গড়ে  ১০ বছর হারাচ্ছেন।

অবশ্য এই বায়ুদূষণের জন্য মূলত দায়ী কৃষকদেরও সেভাবে দোষ দেওয়ার উপায় নেই। কারণ পুরনো ফসল তোলার পর জমিতে আগুন দিলে একদিকে যেমন পরবর্তী চাষের জন্য জমি প্রস্তুত হয়, অন্যদিকে এতে তেমন খরচও নেই। শ্রমিক দিয়ে যদি জমি প্রস্তুতের কাজ করা হয়, সেক্ষেত্রে তা বেশ ব্যয়সাপেক্ষ এবং ক্ষেত্রে রাজ্য বা কেন্দ্র থেকে কোনো সহায়তা দেওয়া হয় না।

এই চার রাজ্যকে উদ্দেশ্য করে সুপ্রিম কোর্ট বেঞ্চ বলেন, ‘এই মৌসুমে ধান-গম চাষ করতে হবে— এমন কোনো কথা নেই। অন্য ফসলও চাষ করা যেতে পারে, কিংবা ধান-গম তোলার পর গাছের যে গোড়া জমিতে থাকে তা না পুড়িয়ে জমির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া যেতে পারে।’

‘তবে কী করা হবে না করা হবে— তা আপনাদের (রাজ্য সরকার) ব্যাপার। আমরা তা জানিনা, তবে দূষণ প্রতিরোধে আপনাদের অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে এবং অতি শিগগিরই তা নিতে হবে।’

এতদিন গর্ভনিরোধকের ব্যবহার দেখা যেত শুধু নারীদের ক্ষেত্রেই। পুরুষের জন্য উপায় বলতে ছিল শুধু ভ্যাসেকটমি। তবে এক্ষেত্রে বিপ্লব আনছে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান আইসিএমআর। পুরুষের জন্য তাদের গর্ভনিরোধক তৈরির কথা আগেই জানা গিয়েছিল। এবার জানা গেল সাফল্যের কথা।

ট্রায়ালে দেখা গেছে, ৯৯ শতাংশ সফল আরআইএসইউজি নামের সেই গর্ভনিরোধক। ইঞ্জেকশনের মাধ্যমেই যা প্রবেশ করবে পুরুষের শরীরে। পরীক্ষায় দেখা গেছে, আরআইএসইউজি ব্যবহার করলে সঙ্গীর গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা হবে শূন্যের কাছাকাছি। আইসিএমআর’র ট্রায়ালের প্রতিবেদন সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে অ্যান্ড্রোলজি নামে একটি জার্নালে। সেখানেই ৯৯ শতাংশ সাফল্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

ভ্যাসেকটমি বা নির্বীজকরণ ছিল মূলত অস্ত্রোপচারের প্রক্রিয়া। সেই প্রক্রিয়ার বিকল্প হয়ে উঠতে পারে এই আরআইএসইউজি। ৩০৩ জনের ওপর এ ট্রায়াল চালানো হয়। গর্ভবতী হওয়ার প্রবণতা কতটা থাকছে, তা নিরীক্ষণ করেই সাফল্যের বিচার করেছেন বিষেশজ্ঞরা।

গবেষকদের দলের অন্যতম প্রধান আরএস শর্মা জানিয়েছেন, মূলত দুটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে সাফল্যের কথা বলা হয়। প্রথমত, শুক্রানুর উপস্থিতি কমছে কি না, দ্বিতীয়ত, সঙ্গী গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে কি না। দুই ক্ষেত্রেই সাফল্য দেখা গেছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

গবেষক আরও জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেক গবেষণাই ধাক্কা খেয়েছিল, আরআইএসইউজি তার মধ্যে অন্যতম। তবে সেই গর্ভনিরোধকের পরীক্ষা শেষ হয়েছে এবং প্রতিবেদনও প্রকাশ করা হয়েছে। সেই গর্ভনিরোধকের ব্যবহারের ছাড়পত্র পেতে এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।

গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, ইঞ্জেকশন নেওয়ার ২১ দিন পর দেখা যাচ্ছে, ৭৭ শতাংশের ক্ষেত্রে কার্যকর হতে পারে এমন শুক্রানুর উপস্থিতি কমছে, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলা হচ্ছে আজুস্পার্নিয়া। আর ১৩.৫ শতাংশের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে শুক্রানুর পরিমাণ কমছে, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলা হচ্ছে ওলিগোজুস্পার্নিয়া। ছয় মাস পরে আজুস্পার্নিয়ার মাত্রা বেড়ে হচ্ছে ৯৭.২ শতাংশ আর এক বছর পর সেই মাত্রা আরও বেড়ে হচ্ছে ৯৭.০৩ শতাংশ। ট্রায়ালে দেখা গেছে, পুরুষ বা তার সঙ্গী, কারও ক্ষেত্রেই কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে না।

ফ্যামিলি প্ল্যানিংয়ের জন্য ক্লিনিকে এসেছিলেন, এমন ৩০৩ দম্পতিকে গবেষণার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছিল। নয়া দিল্লি, উধমপুর, লুধিয়ানা, জয়পুর ও খড়গপুর– ভারতের এই পাঁচটি জায়গায় ট্রায়াল চালানো হয়।