তড়িঘড়ি করে কৃষিজমির বালু তুলে সেই সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ

জানা গেছে, সংযোগ সড়কবিহীন সেতুটি বিভাগীয় উচ্চপদস্ত কর্মকর্তারা পরিদর্শন করবেন। সেকারণে কৃষিজমি থেকে বালু তুলে সেতুর দুইপাশে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে।

তড়িঘড়ি করে কৃষিজমির বালু তুলে সেই সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ

প্রথম নিউজ, নীলফামারী: রাস্তা ও জনবসতি না থাকলেও নীলফামারীর ডিমলায় ফসলের মাঠে ৩৮ লাখ টাকা ব্যয়ে এলজিইডি'র সেতু নির্মাণের সংবাদ প্রকাশের পর নির্মাণাধীণ সেই সেতুর দুই পাশের কৃষিজমিতে বোমা মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে।

জানা গেছে, সংযোগ সড়কবিহীন সেতুটি বিভাগীয় উচ্চপদস্ত কর্মকর্তারা পরিদর্শন করবেন। সেকারণে কৃষিজমি থেকে বালু তুলে সেতুর দুইপাশে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সুন্দর খাতা গ্রামের ফসলের মাঠে নির্মাণাধীন সেতুটি নিয়ে গত ১৮ জুলাই জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টে 'দুই পাশে রাস্তা নেই, ফসলের মাঠে ৩৮ লাখ টাকার সেতু' শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ। 

সরেজমিনে দেখা যায়, ওই সেতুর ৫০ মিটার দূরত্বে উভয় পাশে ৩টি বোমা মেশিন লাগিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। সেই বালু দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে সংযোগ সড়ক। স্থানীয়রা জানান, তিন মাস আগে হঠাৎ করেই ঠিকাদারের লোকজন এসে বিস্তীর্ণ কৃষি জমিতে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে। সেখানে কোনো রাস্তাঘাট নেই। ওপার থেকে উপজেলা শহরে আসার মতো তেমন কোনো বসতিও নাই। এই নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে শনিবার দুপুরের পর থেকে তিনটি বোমা মেশিন লাগিয়ে বালু উঠানো হচ্ছে রাস্তা তৈরির জন্য।

বোমা মেশিন অপারেটর আমিনুর রহমান বলেন, দুপুরের পর থেকে আমরা এখানে তিনটি মেশিন চালাচ্ছি এর মাঝে একটা আমার। মাহাবুব ভাই নামে একজন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। আমি যতটুকু জানি এটা সরকারি কাজ, ব্যক্তিগত কাজ নয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ের একজন কর্মচারী জানান, বিষয়টি নিয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় বিভাগীয় উচ্চ পদস্ত কর্মকর্তারা পরিদর্শনে আসবেন তাই অল্প সময়ে বোমা মেশিন লাগিয়ে বালু তুলে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের ডিমলা উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল ইসলাম বলেন, এটা তো এমপি করতেছে। উনি তো রাস্তা করে দিতে চাইছে। এই বোমা মেশিনগুলো এমপি সাহেবের নির্দেশেই চলছে আর সেখানকার লোকাল লোক জমি দিছে ওরাই বালু তুলতেছে। সরকারিভাবে নদী থেকে তোলা নিষেধ। এটা তো সরকারি নদী থেকে তোলা হচ্ছে না। এটা ব্যক্তিগত জমি স্থানীয়রা দিচ্ছে। তিনি বলেন, যারা ওই ব্রিজটা চাইছে তারাই জমি দিচ্ছে। তারা বলছে উঁচু জমি লাগলেও আমরা দেব। এই ব্রিজটি হলে ডোমার-ডিমলার যোগাযোগ হবে। ডিমলা ও পাশের উপজেলার জনগনের সুবিধা হবে। দুইটা আসনই যেহেতু এমপি সাহেবের সেজন্য দুই আসনের জন্য এ কাজ করা হচ্ছে। সড়কের কাজটা একটু দেরিতে হতো এখন তাড়াতাড়ি হচ্ছে।

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন , বোমা মোশিন লাগিয়ে বালু তোলার বিষয়ে আমি অবগত নই। অনিয়ম হলে অবশ্যই বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে স্থানীয় সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকারের মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে মিটিংয়ে আছেন বলে কেটে দেন। পরে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।