চোরাচালানে সম্পৃক্ততা, এস এ পরিবহনের ৩ কর্মকর্তা কারাগারে

চোরাচালানে সম্পৃক্ততার অভিযোগে চট্টগ্রাম নগরে এস এ পরিবহন নামে একটি কুরিয়ার সার্ভিসের ৩ কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত

চোরাচালানে সম্পৃক্ততা, এস এ পরিবহনের ৩ কর্মকর্তা কারাগারে

প্রথম নিউজ, চট্টগ্রাম : চোরাচালানে সম্পৃক্ততার অভিযোগে চট্টগ্রাম নগরে এস এ পরিবহন নামে একটি কুরিয়ার সার্ভিসের ৩ কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

তারা হলেন- এসএ পরিবহনের চট্টগ্রাম অফিসের জেনারেল ম্যানেজার মোরশেদুল আলম চৌধুর, খাতুনগঞ্জ শাখার ম্যানেজার মাহবুবুর রহমান ও কাজির দেউরি শাখার ম্যানেজার আবদুল করিম বাচ্চু।

রোববার (৭ মে) চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ ড. আজিজ আহমেদ ভুঁইয়ার আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। 

সোমবার বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোমিনুল হাসান। 

তিনি বলেন, তিন আসামি উচ্চ আদালত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন নিয়েছিলেন। পরে তারা রোববার জেলা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে জামিন না মঞ্জুর করে তিনজনকে কারাগারে পাঠান।


কাস্টমস গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার একটি পোশাক কারখানার গোডাউন থেকে একটি চালান পাচার হওয়ার তথ্য পেয়ে মাঠে নামে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। নজরদারিতে তারা দেখতে পায়- একটি কাভার্ডভ্যানে করে কর্ণফুলী উপজেলায় মালামাল লোড হয়ে চালানটি সরাসরি নগরের কাজির দেউরি এস এ পরিবহনের সামনে চলে আসে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৯টায় সংস্থাটির কর্মকর্তারা চালানে থাকা মালামাল জব্দ করে।

নিলামের মাধ্যমে এসব কাপড় ক্রয় করা হয়েছে বলে কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে দাবি করেন চালানের মালিক নজরুল ইসলাম। জব্দ তালিকা থেকে জানা যায়, এ চালানে মোট কাপড় রয়েছে ৮ হাজার ৬১২ কেজি। আর এটির বাজারমূল্য আনুমানিক ৫২ লাখ টাকা।

নিলাম সংক্রান্ত কাগজপত্রে দেখা গেছে, ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর নিলাম থেকে কাপড় ক্রয় করেন নজরুল ইসলাম। ১০ হাজার ৬৯৪ কেজি ওজনের চালানটি ২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আমদানি করা হয়েছিল। আর কাপড়গুলো ছিল এক রঙের।

তবে অভিযানে জব্দ হওয়া কাপড়ে ২০২২ সালের সিল পাওয়া যায়। একইসঙ্গে চালানে আট রঙের কাপড় পাওয়া গেছে। এতে করে প্রমাণিত হয় আটক হওয়া চালান এবং কাগজ উপস্থাপন করা চালান এক নয়।

আবার নগরের টেরিবাজার থেকে চালানটি লোড করা হয়েছিল বলে এস এ পরিবহনের কাগজে উল্লেখ করা হয়। তবে সিসিটিভি ফুটেজে বিশ্লেষণ করে দেখা যায়- গাড়িটি কর্ণফুলী থেকে লোড হয়ে চট্টগ্রাম পৌঁছায়। ৫৫ হাজার টাকা বুকিং দিয়ে চালানটি নারায়ণগঞ্জে পাঠানোর কথা ছিল। যদিও ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে সরাসরি কাভার্ডভ্যানে সহজেই নারায়ণগঞ্জ পণ্য পৌঁছানো যায়। এ থেকে বুঝা যায় এটি চোরাই মালামাল।

কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক উত্তম চাকমা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ওই ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। রোববার জেলা জজ আদালতে মামলাটির ধার্য তারিখ ছিল। এদি এসএ পরিবহনের ৩ কর্মকর্তা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।