গাজীপুরে আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতা বহিষ্কার
সোমবার (২ অক্টোবর) এক পত্রে তাদের বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আবু বকর চৌধুরী।
প্রথম নিউজ, গাজীপুর: গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে অশোভন আচরণ এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পাঁচ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সোমবার (২ অক্টোবর) এক পত্রে তাদের বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আবু বকর চৌধুরী।
বহিষ্কৃতরা হলেন মোক্তারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল হেকিম, সদস্য জাকির হোসেন, একই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য আকরাম হোসেন, যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল ফকির এবং ২ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জাইদুল।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বকর চৌধুরী বলেন, পুরো বিষয়টি আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা দেখছেন। এ বিষয়ে তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) শহীদ ময়েজউদ্দিনের ৩৯তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে কালীগঞ্জ আর আর এন পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্মরণসভার আয়োজন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। স্মরণসভা উপলক্ষে দুপুরে বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে উপস্থিত হলেও মোক্তারপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে একদল নেতাকর্মী অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল নিয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরের ভেতরে জড়ো হন।
একইসময় উপজেলা পরিষদ চত্বরে জাতীয় কন্যা দিবস উপলক্ষে উপজেলা শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠান চলছিল। উপজেলা পরিষদের নিরাপত্তার দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা নেতাকর্মীদের গাড়িগুলো চত্বরের বাইরে নিয়ে রাখার অনুরোধ করেন। এতে নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুর রহমান নিজে উপস্থিত হয়ে চেয়ারম্যানকে ডেকে বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ ভিআইপি নেতারা উপজেলা পরিষদে আসার কথা রয়েছে। সম্ভব হলে আপনার নেতাকর্মীদের গাড়ি বাইরে খোলা জায়গায় নিয়ে রাখতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ইউএনওর সঙ্গে উচ্চ বাক্য বিনিময় করেন।
এসময় সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরা এগিয়ে এসে ইউএনওসহ তার সঙ্গে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘিরে ফেলেন। একপর্যায়ে ইউএনওর ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করা হলে তার সঙ্গে থাকা আনসার সদস্য ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন। এসময় তাদের ওপর হামলা চালান নেতাকর্মীরা। এতে আনসার সদস্যসহ ছয়জন আহত হন।
এসময় চেয়ারম্যান উপস্থিত থাকলেও নেতাকর্মীদের বাধা না দিয়ে বরং তাদের উসকে দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে উত্তেজিত নেতাকর্মীরা ইউএনও অফিস ও উপজেলা নির্বাচন অফিসে ইটপাটকেল মারতে থাকেন। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আলমগীর হোসেনকে প্রধান আসামি করে কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেন ইউএনও অফিসের আনসার সদস্য আকরাম হোসেন।