Ad0111

খালেদা জেলে গিয়ে আবেদন করলে আলোচনা হতে পারে

খালেদা জিয়া বিদেশ যেতে চাইলে কারাগারে গিয়ে আবেদন করতে হবে। একবার নিষ্পত্তিকৃত দরখাস্ত আবার পুনর্বিবেচনার সুযোগ ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় নেই

খালেদা জেলে গিয়ে আবেদন করলে আলোচনা হতে পারে
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ, ঢাকা : আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, খালেদা জিয়া বিদেশ যেতে চাইলে কারাগারে গিয়ে আবেদন করতে হবে। একবার নিষ্পত্তিকৃত দরখাস্ত আবার পুনর্বিবেচনার সুযোগ ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় নেই। তিনি বলেন, আমি কখনোই বলিনি তাকে বিদেশ পাঠানো যাবে না। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজন আছে। কিন্তু, এও জানি, এর কিছু অপব্যবহার ও দুর্ব্যবহার হয়েছে। এটা যাতে বন্ধ হয় সেজন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এখন কোনো সাংবাদিককে মামলা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় না। আগে যাচাই-বাছাই হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাক-স্বাধীনতা ও সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার জন্য করা হয়নি।  গতকাল সকালে রাজধানীর সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির চত্বরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইন হোক- তা আমিও চাই। কিন্তু, এবার সে সময় নেই, আর সংসদকে পাশ কাটিয়ে অধ্যাদেশ জারি করা সঠিক হবে না। সার্চ কমিটিতে রাজনৈতিক দলের কেউ নেই। সরকারি দলের কেউ নেই। সার্চ কমিটি ১০ জনকে নির্বাচন করে রাষ্ট্রপতির কাছে নাম পাঠাবেন। সবার নাম দেয়ার অধিকার আছে, ক্ষমতা আছে। সুতরাং নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে কোনো বিতর্ক করার অবকাশ আছে বলে মনে হয় না।  তিনি বলেন, ইসি গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতি তার ডায়ালগ (সংলাপ) শুরু করে দিয়েছেন। তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী নির্বাচন কমিশন গঠন হবে। এটা রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব। রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে নামের প্রস্তাব নেবেন। এর মাধ্যমে হবে সার্চ কমিটি। সেই সার্চ কমিটি যেসব নাম প্রস্তাব করবে, তাদের মধ্যে থেকে রাষ্ট্রপতি নতুন ইসি গঠন করে দেবেন। এই সার্চ কমিটির সদস্য হবেন আপিল বিভাগের একজন সিনিয়র বিচারপতি, হাইকোর্টের একজন বিচারপতি, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান এবং অডিটর অ্যান্ড কম্পট্রোলার জেনারেল। এরা সবাই সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত। আর দু’জন হবেন সিভিল সোসাইটির সদস্য।
খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন সেটি কিন্তু, আওয়ামী লীগ করেনি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মামলা হয়েছে। ২০১২ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন সেই মামলার প্রতিবেদন দেয়। মামলাটির বিচার কার্যক্রম চলাকালীন তারা অন্তত দশবার হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগে আবেদন করেছে মামলা স্থগিত করার জন্য। অনেক বিচারকের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করেছে। সব কিছুর পর রায় হয়েছে। একটি মামলায় বিচারিক আদালতে সাজা পাঁচ বছর, হাইকোর্টে সেটি বেড়ে ১০ বছর হয়েছে। আরেকটা মামলায় পরে খালেদা জিয়ার সাত বছর সাজা হয়েছে। তিনি (খালেদা জিয়া) যখন সাজা ভোগ করছিলেন তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দুটি বিশেষ শর্তে সাজা স্থগিত রেখে মুক্তি  দেন।
তিনি আরও বলেন, পুনরায় যদি একটি দরখাস্ত করা হয় সেটি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। আমি এখানেও বলছি, সংসদেও বলেছি। শর্তযুক্ত শর্তে তিনি সাজা স্থগিতে যে মুক্তি পেয়েছেন সেটি যদি না মেনে পুনরায় জেলে যেতে চান সেটাও হতে পারে। কিন্তু, এই অবস্থায় ফৌজদারি কার্যবিধির কোথাও নেই যে, তাকে আমরা আগের দরখাস্ত বিবেচনা করে বিদেশ যাবার সুবিধা করে দিতে পারি, সেটা নেই। অনেকেই বলছেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা কারও বিদেশ যাওয়া বন্ধ করে না। কিন্তু, আমি কখনো বলিনি যে তাকে (খালেদা জিয়া) বিদেশে পাঠানো যাবে না। কিন্তু, একবার নিষ্পত্তিকৃত দরখাস্ত আবার পুনর্বিবেচনার সুযোগ ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় নেই।  
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যাপারে আইনমন্ত্রী বলেন, এভারকেয়ার হাসপাতাল তার (খালেদা জিয়া) প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, সব ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তারা সমপ্রতি সর্বশেষ টেকনোলজির একটি ক্যাপসুল আমদানি করেছে। যেটা খেয়ে ফেললে ভেতরে গিয়ে ক্যামেরা কাজ করবে। ভেতরের সব অবস্থান ক্যামেরাবন্দি হবে। আমি তার সর্বশেষ অবস্থা জানি না, তবে যতটুকু জানি তার শারীরিক অবস্থা আগের চাইতে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এখানে তিনি যতটা সম্ভব সুচিকিৎসা পাচ্ছেন। বিচারপতি নিয়োগে কোনো বিষয় প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে কিনা সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, দুটি বিষয়ে কখনো রাষ্ট্রপতিকে জিজ্ঞাসা করতে হয় না বা পারেন না। এটা তার সর্বময় ক্ষমতা, এক- প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা এবং দুই, বিচারপতি নিয়োগ করা। যে কাজটা রাষ্ট্রপতির, সেটি আমি কী করে বলব! আমি তো সরকারের মন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, অপরাধের তথ্য এখন অনেক সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানার আগেই দিচ্ছেন সাংবাদিকরা। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব সবার। সাংবাদিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে যে সুসম্পর্ক, তা খুবই গভীর হয়েছে। আমাদের দেশে যত টকশো হয়, এত টকশো অন্য দেশের গণমাধ্যমে হয় না। বাক-স্বাধীনতা নাই তা বলা যাবে না। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতাও হচ্ছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে র?্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, কোনো একটা ঘটনা ঘটলে আমরা নিজস্ব চ্যানেলে খবর নিই, খবর দিতাম। এখন সাংবাদিকরা অনেক কিছু জানছে, আবার সোশ্যাল মিডিয়াতে আগে চলে আসছে। যে কারণে সাংবাদিকতাও চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে। সাংবাদিকদের সুবিধার জন্য র?্যাব মিডিয়া সেন্টার কারওয়ান বাজারে আনা হয়েছে। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কোনো সাংবাদিক যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ক্র্যাব সভাপতি মিজান মালিক। সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আরিফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল কেএম আজাদ,  গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক মশিউর রহমান জুয়েল, আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু প্রমুখ।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news