ক্যান্সারকে পাশ কাটিয়ে সাইকেলে বিশ্ব ভ্রমণ

 ক্যান্সারকে পাশ কাটিয়ে সাইকেলে বিশ্ব ভ্রমণ
ক্যান্সারকে পাশ কাটিয়ে সাইকেলে বিশ্ব ভ্রমণ-প্রথম নিউজ

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : মরণব্যাধি রোগ ক্যান্সার। এই ক্যান্সারকে হার মানিয়ে ভারতের ক্রিকেটার যুবরাজ সিং বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন ভারতকে। যুবরাজ সিংয়ের মতো বিশ্বকাপ না জিতলেও ইংল্যান্ডের সাইক্লিস্ট ক্যান্সার থেকে অনেকটা সেরে উঠেই করেই বিশ্ব ভ্রমণ করছেন লুক গ্রেনফেল শ। 

২০১৮ সালে তার বয়স ছিল মাত্র ২৪। তখনই মরণব্যাধি ক্যান্সার (সারকোমা) এসে হাজির। ক্যান্সার ছিল চতুর্থ ধাপে। জীবনকে হাতে রেখেই এই সাইক্লিস্ট বেরিয়ে পরেন বিশ্ব ঘুরতে। সাইকেলের প্যাডেলে ব্রিস্টল থেকে যাত্রা শুরু। থামবেন বেইজিংয়ে। এর মাঝে এক সপ্তাহের একটু বেশি সময়ের জন্য গত মাসে এসেছিলেন বাংলাদেশে। এ দেশে আসার পর তার প্রতিক্রিয়া ছিল এ রকম, ‘এখানকার ভ্রমণ মনে রাখার মতো। এদেশের মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে সত্যি অনেক ভালো লাগবে।’

বেনাপোল বন্দর হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ। গোপালগঞ্জে বিরতি। সময় লেগেছে তিনদিন। বাংলাদেশে ছিলেন এক সপ্তাহের বেশি সময়। কিছু স্কুল ঘুরে দেখেছেন। বাংলাদেশের সাইক্লিস্টদের উৎসাহও দিয়েছেন। 

বাংলাদেশ আসার আগে গিয়েছিলেন ভারতের চন্ডীগড়ে। যুবরাজের শহরে গেলেও দেখা হয়নি তার সঙ্গে। বাংলাদেশের ক্রিকেটার মোশাররফ হোসেন রুবেল যে এখন এই ক্যান্সারেই আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন সেটা জানতেন না। শুনে লুক সমবেদনা জানান। জীবন পাওয়ার খোঁজ করতে গিয়ে কখনও না পাওয়ার হতাশা চেপে ধরেনি এই ব্রিটিশকে। এ পর্যন্ত ২৮টি দেশে ক্যান্সার আক্রান্তদের জন্য তহবিল তৈরির পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধিতেও কাজ করেছেন লুক। ক্যান্সার যোদ্ধা লুকের সঙ্গী ট্যানডেম বাইসাইকেল। চ্যারিটির জন্য ৩ লাখ পাউন্ড সংগ্রহ করতে চান তিনি। সেখানে এ পর্যন্ত ১ লাখ পাউন্ড জমা হয়েছে, ‘ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর যখন চিকিৎসা নিয়ে আমি আশার আলো দেখতে পাই, তখনই ঠিক করেছিলাম মানুষের পাশে দাঁড়াবো। শুধু এক দেশে না, বিশ্বের সকল দেশের ক্যান্সার আক্রান্তদের সাহায্য করবো। তাদের মনোবল বাড়াতেই বেছে নিয়েছি সাইকেল’ -বলেন লুক। 

ক্যান্সার ধরা পড়ার পর তিনি জানতেন না পরের ক্রিসমাস দেখতে পারবেন কিনা। ২০২০ সালে যাত্রা শুরুর পর যখন জার্মানি পৌঁছান লুক, তখনই করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ে। ইংল্যান্ডে ফিরতে হয় তাকে। পরিস্থিতি পাল্টানোর পর আবার বেরিয়ে পড়েন। ৪ চার মাস পরপর শারীরিক পরীক্ষা করতে হয়। তার আমার পরিবার প্রথমে একটু দুশ্চিন্তা করতো, কিন্তু এখন তারা জানে লুক এই কাজের মধ্য দিয়েই বেঁচে থাকবো।

এই পথেই যদি কোথাও আবারও থেমে যায় শেষ নি:শ্বাস তেমন আশংকা জেনেও সদা হাস্যোজ্জ্বল লুক। জীবনের জন্য হেটেছেন-দৌড়েছেন, সাইকেল চালাচ্ছেন। ক্যামোর মধ্যে একটা অর্ধ ম্যারাথনও শেষ করেছেন। হৃদয় কাঁপানো এক লড়াই। যার জীবনের সময়ই ফুরিয়ে যেতে বসেছিল তিনিই এখন স্বপ্ন দেখেন সারা বিশ্বের ক্যান্সার আক্রান্তদের জন্য কিছু করে যাওয়ার।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom