ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের কোনো প্রতিশোধমূলক হামলায় যোগ দেবে না যুক্তরাষ্ট্র
রোববার সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় প্রশাসনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ‘খুব সাবধানে এবং কৌশলীভাবে চিন্তা করতে’ বলেছেন।
প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: হোয়াইট হাউস ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেছে, ইরানের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিশোধমূলক হামলায় অংশ নেবে না যুক্তরাষ্ট্র। বাইডেন প্রশাসনের সিনিয়র কর্মকর্তারা এই সতর্কতার কথা জানিয়েছেন। পহেলা এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে হামলার প্রতিক্রিয়া হিসাবে ইসরায়েলে রাতারাতি ৩০০টিরও বেশি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার কথা জানিয়েছে তেহরান। তবে লক্ষ্যে পৌঁছানোর আগেই প্রায় সব ক্ষেপণাস্ত্রই ভূপাতিত করেছে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্রবাহিনী।
এক্ষেত্রে ইসরায়েলকে যে কোনও পাল্টা জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতার সাথে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন জো বাইডেন, এমনটাই জানিয়েছেন তার প্রশাসনের কর্মকর্তারা। রোববার সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় প্রশাসনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ‘খুব সাবধানে এবং কৌশলীভাবে চিন্তা করতে’ বলেছেন। কর্মকর্তারা আরও বলেছেন, বাইডেন প্রশাসন বিশ্বাস করে- ইসরায়েল এর বিনিময়ে ‘সেরাটাই পেয়েছে’, যার শুরু হয়েছিল সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেট ভবনে হামলায় সিনিয়র ইরানি সামরিক কমান্ডারদের হত্যার মাধ্যমে।
ইরান প্রতিশোধমূলক হামলা চালানোর সময়, তাদের প্রায় ৯৯ শতাংশ ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত হয়েছিল বা বাধা দেওয়া হয়েছিল – যা মার্কিন কর্মকর্তারা ইরানের ওপর ইসরায়েলি সামরিক শ্রেষ্ঠত্বের চিহ্ন হিসাবে দেখছে। ইরান হামলার চালানোর সময় মার্কিন বিমান ও নৌবাহিনী বেশ কয়েকটি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করে। ৮০টিরও বেশি ড্রোন এবং কমপক্ষে ছয়টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইরাকের ওপর দিয়ে ভূপাতিত করে মার্কিন বিমান ও জাহাজ বা আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী। এর মধ্যে সাতটি ড্রোন এবং একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছিল যেগুলো তারা ইয়েমেন থেকে উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুত করেছিল, ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) রোববার এক আপডেটে এ তথ্য জানিয়েছে।
হামলার সময় ইসরায়েলের দিকে যখন একযোগে প্রায় ১০০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উড়ে আসছিল, তুমুল সেই উত্তেজনার মাঝেই বাইডেন এবং নেতানিয়াহুর মধ্যে কথোপকথন হয়। ওই টেলিফোন আলাপে দুই নেতা ‘কীভাবে পরিস্থিতি প্রশমন করা যায় এবং উদ্ভূত পরিস্থিতিতে করণীয় সম্পর্কে ভাবা যায়, সে সম্পর্কে’ আলোচনা করেন।
বাইডেন জোর দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েল ‘এর সেরাটি পেয়েছে’। এই কর্মকর্তা অবশ্য বলতে রাজি হননি, হোয়াইট হাউস ইরানের এই প্রতিক্রিয়ার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছে কি না। তারা শুধুমাত্র জানিয়েছে, ‘ইসরায়েলিদের এই হিসেব নিকেশ করতে হবে’। দিনের প্রথম দিকে মার্কিন টেলিভিশনে নেটওয়ার্কগুলোয় দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কারবি বারবার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে- তারা বড় ধরনে সংঘাত এড়াতে চায়।
প্রশাসনের শীর্ষ সূত্র জানিয়েছে, কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে ইরানে একই বার্তা পাঠানো হয়েছে। কারবি এবং এর কর্মকর্তা উভয়েই বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে রক্ষা করতে থাকবে, তবে ইসরায়েলের কোনও প্রতিক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তাদের এই অবস্থান নিয়ে কিছু মার্কিন আইনপ্রণেতা এবং উভয় রাজনৈতিক দলের সাবেক কর্মকর্তারা সমালোচনা করেছেন। বিবিসি বাংলা, ঢাকা পোস্টের রিপোর্ট