আদালতের ভুয়া আদেশ তৈরি, সেই মেয়রের বিরুদ্ধে আরেক মামলা
আসামিরা হলেন- বগুড়ার দুপচাঁচিয়া পৌর মেয়র ও বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, পৌর সচিব কার্তিক চন্দ্র দাস ও ধাপসুকানগাড়ী বম্বপাড়ার সোলায়মান আলীর ছেলে শিক্ষানবিশ আইনজীবী আবদুল মজিদ।
প্রথম নিউজ, বগুড়া: জালিয়াতির মাধ্যমে হাইকোর্টের আদেশের কাগজপত্র তৈরি করে দুর্নীতির মামলা ১০ বছর স্থগিত করে রাখার অভিযোগে বগুড়ার দুপচাঁচিয়া পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলমসহ তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশে রিট শাখার সুপারিনটেনডেন্ট আবদুল মোমেন বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) বিকালে বগুড়ার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মামলাটি করেন। বিচারক এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন। পরে আদালত আদেশ দেবেন।
আসামিরা হলেন- বগুড়ার দুপচাঁচিয়া পৌর মেয়র ও বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, পৌর সচিব কার্তিক চন্দ্র দাস ও ধাপসুকানগাড়ী বম্বপাড়ার সোলায়মান আলীর ছেলে শিক্ষানবিশ আইনজীবী আবদুল মজিদ।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালে জাহাঙ্গীর আলম দুপচাঁচিয়া পৌরসভার মেয়র ও কার্তিক চন্দ্র দাস সচিব থাকাকালে বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। জেলা প্রশাসকের তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত মেয়র বেলাল হোসেন ওই বছরের ২৩ অক্টোবর মেয়র ও সচিবের বিরুদ্ধে ১৩ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের মামলা করেন। পরে মামলাটি দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ে স্থানান্তর হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণের কার্যক্রম শুরু হয়। মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি বাতিলে হাইকোর্টে আবেদন করলে তা নাকচ হয়। অথচ মামলার ওপর হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়েছেন মর্মে ২০১০ সালের ৮ ডিসেম্বর বগুড়ার আদালতে কাগজপত্র দেন আসামিরা। এরপর থেকে ১০ বছর মামলার কার্যক্রম স্থগিত হয়েছিল।
পরে দুদক ঢাকা কার্যালয়ের আইনজীবীরা অনুসন্ধান করে জানতে পারেন, হাইকোর্টের ওই মিস কেসটি বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। এটি ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার মামলা। দুদকের আইনজীবীরা জালিয়াতির মাধ্যমে মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর ব্যবস্থা নিতে বগুড়ার পিপিকে চিঠি দেন। পিপি বিষয়টি বগুড়ার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতকে জানান। এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করার জন্য রেজিস্ট্রার জেনারেল (ভারপ্রাপ্ত) এক আদেশে ক্ষমতা অর্পণ করেন। হাইকোর্ট বিভাগের ফৌজদারি মিস কেসের (নং-২০১৪৪/২০১০) আদেশের তারিখ ও বিচারপতিদের নাম সংবলিত আদেশ জালিয়াতির মাধ্যমে সৃজন করে আসামিরা দণ্ডনীয় অপরাধ করেছেন।
বাদীকে মামলায় সহায়তাকারী দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের পিপি এস এম আবুল কালাম আজাদ জানান, বিচারক বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন। সম্ভবত মামলাটি তদন্ত করতে দুদককে দায়িত্ব দেওয়া হবে। আরেক মামলায় বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মির্জা শায়লা বেগম গত ১১ অক্টোবর পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন। পাবলিক পরীক্ষা আইনে ছয় মাসের সাজা বহাল হওয়ায় তিনি ওই আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। বিচারক শুনানি শেষে তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। বর্তমানে তিনি বগুড়া কারাগারে রয়েছেন। তিনি নির্বাচনি হলফনামায়ও মামলার তথ্যও গোপন করেছিলেন। তার বিরুদ্ধে আরও ৪/৫টি মামলার তথ্য গোপনের অভিযোগ রয়েছে। সেসব মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews