প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: ভারতের আদানি গ্রুপের বাংলাদেশে রপ্তানি করা বিদ্যুৎ বাবদ দাবি করা ৮০ কোটি ডলার পরিশোধে বাংলাদেশ সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিভাগের সূত্রে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, সরকারের দুজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা তাদের জানিয়েছেন, আদানির বকেয়া আংশিক পরিশোধের ব্যাপারে তারা ইতোমধ্যেই প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমার ইতোমধ্যে আদানি গ্রুপকে ১৭ কোটি ডলারের ক্রেডিক চেক ইস্যু করেছি।’
আদানি পূর্ব ভারতে অবস্থিত কয়লাচালিত প্ল্যান্ট থেকে বাংলাদেশে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করে; যা বাংলাদেশে ব্যবহৃত বিদ্যুতের ১০ শতাংশ। তবে বকেয়া ৮০ কোটি ডলার পরিশোধ না করা হলে আগামী ৭ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে আদানি গ্রুপ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার আলটিমেটাম প্রসঙ্গে বিবিসির পক্ষ থেকে আদানি গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো জবাব দেয়নি।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি না যে এটি এমন পর্যায়ে যাবে, যেখানে আদানি সম্পূর্ণ সরবরাহ বন্ধ করে দেবে। বাংলাদেশ পর্যায়ক্রমে এই পাওনা নিয়মিতভাবে পরিশোধ করবে।’ পাশাপাশি এই সংকট খুব দ্রুত সমাধান হওয়ারও প্রত্যাশা করেন তারা।
এক প্রতিক্রিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাজুল কবির খান বলেছেন, ‘আমরা হতবাক ও বিস্মিত যে আমাদের অর্থপ্রদান বাড়ানো সত্ত্বেও সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে। আমরা পাওনা পরিশোধ করতে প্রস্তুত এবং বিকল্প ব্যবস্থা করব, কিন্তু কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীকে আমাদের জিম্মি বা ব্ল্যাকমেইল করতে দেব না।’
এর আগে বিদ্যুৎ বাবদ পাওনা পরিশোধের জন্য বাংলাদেশকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে আদানি গ্রুপ, এমন সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে।
গত রবিবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘৭ নভেম্বরের মধ্যে ৮৫০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া পরিশোধ না করা হলে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করবে আদানি পাওয়ার।’
তবে এ ব্যাপারে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হলে সুর নরম করে আদানি গ্রুপ। পাশাপাশি বিদ্যুৎ বাবদ পাওনা পরিশোধের জন্য সময় বেঁধে দেওয়ার আলটিমেটামের বিষয়টিও অস্বীকার করে তারা। আদানি বলেছে যে ৮৫ কোটি ডলার বকেয়ার পুরোটা তারা ৭ নভেম্বরের মধ্যে চায়নি।
রবিবার এক বিবৃতিতে আদানি গ্রুপ জানায়, ‘আদানি সাত দিনের মধ্যে ৮৫০ মিলিয়ন ডলারের পূর্ণ পেমেন্ট দাবি করেনি। বিষয়টি সমাধানে আদানি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে সহযোগিতা করছে।’