অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে কাঁধে করে মেয়ের মরদেহ বাড়িতে নিলেন বাবা

চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশের ছাতারপুর জেলায়। শুক্রবার (১০ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে কাঁধে করে মেয়ের মরদেহ বাড়িতে নিলেন বাবা

প্রথম নিউজ ডেস্ক: অসুস্থ মেয়ে শিশুকে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছিল হাসপাতালে। কিন্তু বাঁচানো যায়নি। পরিবারের সদস্য আর চিকিৎসকদের চেষ্টার মধ্যেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমায় সে। এই পরিস্থিতিতে মেয়ের মরদেহ বাড়িতে আনতে প্রয়োজন ছিল একটি অ্যাম্বুলেন্সের। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অ্যাম্বুলেন্স না দেওয়ায় এবং নিজেও কোনো ব্যবস্থা করতে না পেরে মেয়ের মরদেহ অনেকটা রাস্তা কাঁধে করেই বাড়িতে নিয়ে গেছেন এক বাবা। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশের ছাতারপুর জেলায়। শুক্রবার (১০ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেয়ের মৃত্যুর পর তাকে গ্রামে ফিরিয়ে নিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না করায় চার বছর বয়সী মেয়ের মৃতদেহ কাঁধে করে বাড়ি নিয়ে যান এক ব্যক্তি। কাঁধে করে মেয়ের মৃতদেহ বহন করার একটি ভিডিও ইতোমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্লাটফর্মে। মৃত ওই শিশুটির পরিবার জানিয়েছে, মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ার পর তাকে চিকিৎসার জন্য গত সোমবার প্রথমে মধ্যপ্রদেশের বক্সওয়াহা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেওয়া হয়। তবে সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরিবারের সদস্যরা মঙ্গলবার তাকে পার্শ্ববর্তী দামোহ জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু সেদিনই মারা যায় শিশুটি।

শিশু ওই মেয়েটির দাদা মনসুখ আহিরওয়ার অভিযোগ করেছেন, তারা মেয়েটির মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য হাসপাতালের কর্মীদের কাছে একটি অ্যাম্বুলেন্স চেয়েছিলেন। কিন্তু তাদের কাছ থেকে ইতিবাচক কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন, ‘তারপর আমরা তার মরদেহকে একটি কম্বলে মুড়িয়ে বক্সওয়াহার উদ্দেশ্যে একটি বাসে চড়ি। কারণ আমাদের কাছে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবস্থা করার জন্য যথেষ্ট টাকা ছিল না।’

মেয়েটির বাবা লক্ষ্মণ আহিরওয়ার বলেন, বক্সওয়াহায় পৌঁছানোর পর মরদেহটি পাউদি গ্রাম পর্যন্ত নিয়ে যেতে তারা সেখানকার নগর পঞ্চায়েতকে একটি গাড়ি সরবরাহ করতে অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা কোনো ধরনের গাড়ির ব্যবস্থা করতে অস্বীকার করে। দামোহ জেলার সিভিল সার্জন ডা. মমতা তিমোরি অবশ্য মৃত মেয়ের পরিবারের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, ‘কেউ আমার কাছে আসেনি, আমাদের কাছে হার্স ভ্যান (মৃতদেহ বহন করার গাড়ি) আছে। এছাড়াও আমরা রেড ক্রস বা অন্য কোনো এনজিও থেকেও গাড়ির ব্যবস্থা করতে পারি।’

এনডিটিভি বলছে, এ ধরনের ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগে সাগর জেলার একজন ব্যক্তিকে তার ভাইয়ের মৃতদেহ গাধাকোটা স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে হাতেটানা একটি গাড়িতে করে নিয়ে যেতে হয়েছিল। ভগবান দাস নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, ‘আমি একটি হার্স ভ্যান চেয়েছিলাম কিন্তু এটির ব্যবস্থা করা হয়নি। অন্যদিকে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবস্থা করার মতো টাকা আমাদের কাছে না থাকায় আমরা তার মৃতদেহ একটি হাতেটানা গাড়িতে করে নিয়ে যাই।’

এই অভিযোগের বিষয়ে ব্লক মেডিকেল অফিসার ডা. সুয়শ সিংহাই বলেন, ‘ওই রোগীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। কর্তব্যরত ডাক্তার পরিবারকে ময়নাতদন্ত করার পরামর্শ দিলেও তারা সেটি না করেই মৃতদেহ নিয়ে যায়। এছাড়া একই রাজ্যের ভগবানপুরা খারগোন জেলায় এক গর্ভবতী নারী হাসপাতালে পৌঁছতে না পেরে পথেই মারা যান। তার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ,  সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করার জন্য অনেক চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত তারা ব্যর্থ হয়েছেন। বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom