২৮তম লা লিগা শিরোপা ঘরে তুললো বার্সেলোনা

প্রথম নিউজ, অনলাইন: শিরোপা জয়টা বলতে গেলে নিশ্চিতই ছিল। ম্যাচ ড্র করলে একটু অপেক্ষা বাড়তো। হ্যান্সি ফ্লিকের দল সে অপেক্ষা আর বাড়াতে চাইলো না। দুই ম্যাচ হাতে রেখেই ২৮তম লা লিগা শিরোপা ঘরে তুললো বার্সেলোনা।
কিশোর বিস্ময় লামিন ইয়ামাল আরও একবার করলেন অসাধারণ এক গোল, এস্পানিওলের মাঠে গিয়ে ২-০ ব্যবধানে জিতলো বার্সা। ১৭ বছর বয়সি ইয়ামাল বক্সের কোণা থেকে দুর্দান্ত এক বাঁকানো শটে বল জড়ান জালের উপরের বাঁ দিকে, যা নিশ্চিত করে বার্সার চ্যাম্পিয়ন হওয়া।
লিগ টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে সাত পয়েন্ট এগিয়ে থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বার্সা। এই ম্যাচের ইনজুরি টাইমে ইয়ামালের পাস থেকে ফারমিন লোপেজ দ্বিতীয় গোলটি করেন।
তবে প্রথমার্ধে খেলা কিছুক্ষণ বন্ধ রাখা হয়, কারণ মাঠের বাইরে একটি গাড়ি ভক্তদের উপর উঠে গেলে ১৩ জন আহত হন এবং চারজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও কারোর অবস্থা গুরুতর ছিল না বলে জানানো হয়েছে।
এরপর খেলা আবার শুরু হয় এবং ম্যাচের ৫৩তম মিনিটে ইয়ামাল ম্যাচের প্রথম গোলটি করেন। এটি ছিল তার চলতি মৌসুমে ১৭তম গোল, যেখানে তিনি নিজেকে বিশ্বের যেকোনো বয়সের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর খেলোয়াড়দের একজন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। খেলার ১০ মিনিট বাকি থাকতে এস্পানিওলের ডিফেন্ডার লিয়ান্দ্রো ক্যাবরেরা ইয়ামালকে আঘাত করলে লাল কার্ড দেখেন।
কোপা দেল রে এবং স্প্যানিশ সুপার কাপ জয়ের পর, এই লিগ শিরোপা নিশ্চিত করে বার্সেলোনার কোচ হান্সি ফ্লিকের প্রথম মৌসুমেই ঘরোয়া ট্রফির হ্যাটট্রিক করলেন। তার দল রিয়াল মাদ্রিদকে দুটি ঘরোয়া কাপ ফাইনালেই হারিয়েছে এবং চলতি মৌসুমে চারটি এল ক্লাসিকো ম্যাচেই জয় পেয়েছে।
এদিনের ম্যাচের পরে ফ্লিক বলেন, ‘আমরা সবসময় ইতিবাচক চিন্তা করেছি এবং অনুশীলন দেখেই তা বোঝা যেত। বার্সায় তোমাকে ট্রফি জিততেই হবে, আর তিনটি ট্রফি সত্যিই দারুণ। মানসিকভাবে শক্ত থাকা গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং আমরা সেটাই খুঁজেছি। জানুয়ারিতে সুপার কাপ জয় আমাদের আত্মবিশ্বাস দেয়। খেলোয়াড়দের নিজেদের সেরা অবস্থানে যেতে দেখা দারুণ ছিল।’
চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালেও পৌঁছেছিল বার্সেলোনা, যদিও সেখানে তারা ইন্টার মিলানের কাছে এক নাটকীয় ম্যাচে হেরে যায়।
এই ম্যাচের আগের দিনেই প্রায় চ্যাম্পিয়ন হয়েই যাচ্ছিল বার্সেলোনা। কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদ ইনজুরি টাইমে মায়োর্কার বিরুদ্ধে জয় নিশ্চিত করলে বার্সাকে অপেক্ষা করতে হ।
এস্পানিওলের মাঠে উরকো গনজালেস ও জাভি পুয়াদো সুযোগ মিস করায় বার্সা কিছুটা ভাগ্যবানও ছিল। তবে এদিনের ম্যাচের নায়ক হয়ে ওঠেন ইয়ামাল, দানি ওলমোর পাস থেকে তার চিরচেনা শটে। ম্যাচের একদম শেষে তিনি লোপেজের গোলে সহায়তাও করেন।
ম্যাচ শেষে বার্সা খেলোয়াড়রা উদযাপন শুরু করলে কিছুটা উত্তেজনা দেখা দেয়, এবং মাঠকর্মীরা স্প্রিংকলার চালু করে অতিথি দলকে মাঠ ছাড়তে বাধ্য করেন। দুই বছর আগেও এই মাঠেই শিরোপা জয়ের পর বার্সা খেলোয়াড়দের ড্রেসিংরুমে দৌড়ে যেতে হয়েছিল, কারণ এস্পানিওল সমর্থকরা মাঠে ঢুকে পড়েছিল। শুক্রবার নিজ শহরে একটি খোলা বাসের প্যারেড করবে বার্সা এবং রোববার ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে ম্যাচে ট্রফি গ্রহণ করবে।