২৩ দিন পর ক্লাসে ফিরলেন বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকরা

তবে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কিছুটা কম। দু-তিনদিনের মধ্যে উপস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

২৩ দিন পর ক্লাসে ফিরলেন বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকরা

প্রথম নিউজ, ঢাকা: বৈষম্য নিরসনের আশ্বাসে ২৩ দিন পর ক্লাসে ফিরেছেন বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাড়ে পাঁচ লাখ শিক্ষক। বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) সকালে সারাদেশের বেসরকারি মাধ্যমিকে যথারীতি ক্লাস শুরু হয়েছে।তবে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কিছুটা কম। দু-তিনদিনের মধ্যে উপস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

দেশের কয়েকটি জেলার বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আমরণ অনশন কর্মসূচি স্থগিতের পর বৃহস্পতিবার শিক্ষকরা সবাই উপস্থিত হয়েছেন। বিভিন্ন কারণে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে কম এসেছে। অনেকে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে গেছে বলেও জানান শিক্ষকরা।

বরিশালের নলবুনিয়া মহব্বত আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক শাহনাজ পারভীন বলেন, শিক্ষকরা সবাই আজ স্কুলে উপস্থিত হয়েছেন। যারা ঢাকায় আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন, তারা বুধবারই (২ আগস্ট) চলে এসেছেন। স্কুল বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থী আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে গেছে। আবার এ এলাকায় প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে স্কুলে উপস্থিতি কম। হয়তো রোববার থেকে স্কুলে উপস্থিতি বাড়বে।

বগুড়ার গাবতলী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. তরিকুল আলম বলেন, শিক্ষার্থীরা ছুটির মেজাজে ছিল। ক্লাস শুরুর কথা তারা জেনেছে। আমাদের স্কুলে উপস্থিতি বলা চলে এক-তৃতীয়াংশ। দু-একদিনের মধ্যে এ উপস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশা করছি। জাতীয়করণের যে আশ্বাস পেয়েছেন, তাতে সন্তুষ্ট কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। দ্রুত এ আশ্বাস বাস্তবায়ন হবে বলে আশা করছি। আমরা বিশ্বাস করি শিক্ষকদের প্রতি সম্মান রেখে সরকার তা বাস্তবায়নে তৎপর হবে। অন্যথায় শিক্ষকদের অপমান করা হবে।

পটুয়াখালীর দশমিনার বেগম আরাফাতুন্নেছা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মাকসুদা বেগম ডেইজি ঢাকায় প্রেস ক্লাবের সামনের কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন। বুধবার তিনি শিক্ষক নেতাদের নির্দেশে এলাকায় ফিরেছেন। মাকসুদা বেগম ডেইজি বলেন, ‘এতদিন আন্দোলনে অংশ নিয়ে শরীরটা বেশ খারাপ। তবুও নির্দেশনা মেনে আমরা স্কুলে এসেছি।’

বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে স্কুলে তালা ঝুলিয়ে গত ১১ জুলাই থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন এমপিও শিক্ষকরা। কর্মসূচির শুরুর পর পুলিশ শিক্ষকদের লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করে। তারপরও শিক্ষকরা কর্মসূচিতে অনড় থাকেন। এর মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি তাদের সঙ্গে বৈঠক করে ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানালেও তাতে সাড়া দেননি শিক্ষকরা।

টানা ২১ দিন অবস্থান কর্মসূচির পর ১ আগস্ট থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষকরা। ঘোষণা অনুযায়ী- ১ আগস্ট কাফনের কাপড় পরে অনশন করেন তারা। ওইদিন রাতে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ারের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিক্ষক নেতারা। বৈঠকে শিক্ষকদের জাতীয়করণ বা বৈষম্য নিরসনের আশ্বাসে অনশন স্থগিত করে ক্লাসে ফেরার ঘোষণা দেন বাংলাদেশ টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) নেতারা। তারা বুধবারের মধ্যে শিক্ষকদের ঢাকা থেকে এলাকায় ফেরার এবং বৃহস্পতিবার থেকে পুরোদমে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দেন।