হরতাল-অবরোধ দিয়ে নিজেদের পায়েই কুড়াল মারছে : পরিকল্পনামন্ত্রী
প্রথম নিউজ, সুনামগঞ্জ : পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, হরতাল-অবরোধের কারণে দেশে অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। যারা এমন কর্মসূচি দিচ্ছে তারা নিজেরাই নিজেদের পায়ে কুড়াল মারছে, জাতির পায়ে কুড়াল মারছে। অতীতেও কিছু মানুষ এমন অপকর্মের চেষ্টা করেছে কিন্তু কিছুই করতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না।
রোববার (৫ নভেম্বর) বেলা ১১টায় সুনামগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাঠদান কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, লড়াই-সংগ্রাম করে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। দরকার হলে দেশের মানুষ উন্নয়নের জন্য সংগ্রাম করে শেখ হাসিনার সরকারকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
নির্বাচন নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এখনো শতভাগ নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি হয়নি। মাঠপর্যায়ে আমরা ঘুরে দেখেছি, ৮০-৯০ ভাগ পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তবে নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে মানুষের মাঝে আনন্দ-উদ্দীপনা বাড়তে থাকবে। দেশের মানুষ কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেবেন। উন্নয়নের জন্য আওয়ামী লীগ সরকারকে তারা আবারও ক্ষমতায় আনবেন।
দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারের পক্ষ থেকে মন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আলু-ডিম নিয়ে কিছু লোক খেলতে চেয়েছিল, খেলা আমরাও খেলব। তবে আমরা খেলব বাজারে আলু-ডিম আমদানি করে।
সবকিছু সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি সকল দেশেই আছে আমাদের দেশেও আছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতেও বর্তমানে ৮ ভাগ ও ইংল্যান্ডে ৯ ভাগ মূল্যস্ফীতি আছে। এর মানে এটা না মন্দ দিয়ে ভালোর মূল্যায়ন করা যায় না, তবে সরকার চেষ্টা করছে। সরকারের মূল লক্ষ্য নিম্ন আয়ের মানুষ। সরকার এক থেকে দেড় কোটি নিম্ন আয়ের মানুষকে ন্যায্যমূল্যে খাবার দিচ্ছে। এই ন্যায্যমূল্যে খাবার বিতরণ করায় মূল্যস্ফীতির ছোবলটা নিচের দিকে থাকছে। এটা না হলে মূল্যস্ফীতি ১৫ থেকে ১৬ ভাগে উঠে যেত। সরকার এই মূল্যস্ফীতি আরও কমিয়ে আনবে। আর ২০-২২ দিন পরেই ধানকাটা শুরু হবে। তখন আরও মূল্যস্ফীতি নামা শুরু হবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, সুনামগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রকল্প পরিচালক ডা. শামস উদ্দিন আহমেদ, সিভিল সার্জন আহমদ হোসেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহশান শাহ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন প্রমুখ।
কিশোরগঞ্জের ভৈরব বিএনপির ৫ নেতাকে সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (৫ নভেম্বর) ভোররাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভৈরব থানা পুলিশের একটি দল সিলেট জিন্দাবাজারের একটি বাসা থেকে পাঁচ নেতাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃত পাঁচজন হলেন- ভৈরব পৌর বিএনপির আহ্বায়ক হাজী মো. শাহিন, সদস্য সচিব ভিপি মো. মুজিবুর রহমান, যুগ্ম সদস্য সচিব জিল্লুর রহমান, উপজেলা যুবদল আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন সুজন, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আল-মামুন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভৈরব সার্কেলর সহকারী পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেন খান।
কিশোরগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন বলেন, গণতন্ত্র মুক্তির আন্দোলনে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদেরকে টার্গেট করে পুলিশ একে একে সব নেতাদের গ্রেপ্তার করে আন্দোলন দমিয়ে রাখতে চায়। আমি আবারও পরিষ্কার করছি আমাদের এই আন্দোলন পুলিশের বিরুদ্ধে নয়। আমরা মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আন্দোলন করছি। জাতীয়তাবাদী আদর্শের একজন কর্মী যতক্ষণ থাকবে ততক্ষণ আন্দোলন চলবে। দেশ নায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব।
উল্লেখ্য, এর আগে শনিবার ভোরে ভৈরব থেকে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমসহ পাঁচ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে অবরোধের মধ্যেই ভৈরব উপজেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করছে। এছাড়া সারা জেলায় আধাবেলা হরতাল পালন করছে জেলা বিএনপি।