হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধ চাই না, তারা আগুন নিয়ে খেলছে : ইসরায়েল

হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধ চাই না, তারা আগুন নিয়ে খেলছে : ইসরায়েল

  প্রথম নিউজ, ডেস্ক :লেবাননের ইরান-সমর্থিত শক্তিশালী সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধ চায় না ইসরায়েল। ইসরায়েলি প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ এমন কথাই জানিয়েছেন। এছাড়া হিজবুল্লাহ আগুন নিয়ে খেলছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।

এমনকি হিজবুল্লাহ ইসরায়েলকে যুদ্ধে টেনে আনলে লেবাননকে চড়া মূল্য দিতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ইসরায়েলি এই প্রেসিডেন্ট। বুধবার (২৫ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল তার উত্তর সীমান্তে লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধ চাইছে না বলে মঙ্গলবার জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ। ইসরায়েল সফরে থাকা ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলার সময় তিনি এই মন্তব্য করেন।

প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ সতর্ক করে বলেন: ‘হিজবুল্লাহ আগুন নিয়ে খেলছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা আমাদের উত্তর সীমান্তে কোনও সংঘাত চাইছি না। কিন্তু যদি হিজবুল্লাহ আমাদের যুদ্ধে টেনে নেয়, তবে এটা পরিষ্কার হওয়া উচিত যে, লেবাননকে চড়া মূল্য দিতে হবে।’

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার পাশাপাশি লেবানন সীমান্তেও হামলার মুখে পড়েছে ইসরায়েল। লেবাননের ইরান-সমর্থিত শক্তিশালী এই সশস্ত্রগোষ্ঠী উত্তর ইসরায়েলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে আসছে।

মূলত গাজা ভূখণ্ডে চলমান যুদ্ধের মধ্যেই ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সংঘাত। ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তের এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৩০ জনেরও বেশি হিজবুল্লাহ যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। এছাড়া হিজবুল্লাহর হামলায় ইসরায়েলি সেনা নিহতের ঘটনাও ঘটেছে।

এমনকি হিজবুল্লাহর তীব্র হামলার মুখে সীমান্ত এলাকার হাজার হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চালাচ্ছে ইসরায়েল। এতে করে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধে দ্বিতীয় যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে ওঠার শঙ্কা তৈরি হয়েছে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্ত। লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের সীমান্ত এলাকা থেকে প্রত্যেক দিনই উত্তর ইসরায়েলে রকেট, ক্ষেপণাস্ত্র এবং গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে।

গত শনিবার ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভাষা, ধর্ম এবং সুরক্ষিত বেড়ায় বিভক্ত হওয়া সত্ত্বেও ইসরায়েল-লেবানন সীমান্তের উভয়পাশের বাসিন্দারা ব্যাপক অস্থিতিশীলতার মুখোমুখি হয়েছেন। সীমান্ত এলাকায় ক্রমবর্ধমান সহিংসতার কারণে উভয়পাশের হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় খুঁজতে বাধ্য হয়েছেন।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, গত ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েলের সংঘাত শুরুর পর থেকে হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী প্রায় প্রতিদিনই সীমান্তে গুলিবিনিময় করছে। হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর এটিই ইসরায়েল-লেবানিজ সীমান্তে সবচেয়ে খারাপ সহিংসতার ঘটনা।

অবশ্য ইসরায়েল বরাবরই বলছে, হিজবুল্লাহরে সঙ্গে তাদের যুদ্ধে কোনও আগ্রহ নেই। যদি হিজবুল্লাহ সংযত থাকে তবে তারাও স্থিতাবস্থা বজায় রাখবে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। কিন্তু ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা এই অঞ্চলে এবং এর বাইরেও বৃহত্তর সংঘাতের ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে, কারণ ইসরায়েল গাজায় স্থল অভিযানের নামে অনুপ্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

অন্যদিকে গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। তাদের অবিরাম নির্বিচার এই হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার ৮০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার।

এছাড়া ইসরায়েলের হামলায় গাজায় শুধুমাত্র গত একদিনে ৭০৪ জন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।