সিরিজের ট্রফি পেতে যেমন পারফরম্যান্স দরকার বাংলাদেশের

 সিরিজের ট্রফি পেতে যেমন পারফরম্যান্স দরকার বাংলাদেশের

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : শারজায় বাংলাদেশ-আফগানিস্তান ওয়ানডে সিরিজ এখন পেন্ডুলামের মত দুলছে। শুরুতে আফগানদের দিকে, এখন বাংলাদেশের দিকেই ঝুঁকে আছে সিরিজের ট্রফি।

আজ সোমবার (১১ নভেম্বর) তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি রূপ নিয়েছে সিরিজ নির্ধারণী লড়াইয়ে। যে দল জিতবে, সেই দলই পাবে সিরিজজয়ীর মুকুট।

প্রথম ওয়ানডেতে গজনফারের রহস্যময় অফস্পিনে বেসামাল হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ। এ অফস্পিনারের স্পিন ঘূর্ণি সামলাতে না পেরে মুখ থুবড়ে পড়েছিলেন তানজিদ তামিম, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুশফিকুর রহিম, রিশাদ হোসেন ও তাসকিন আহমেদরা।

ব্যাটারদের অমার্জনীয় ব্যর্থতায় ২৩৫ রানের পিছু ধেয়েও ৯২ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। ইনিংসে ৩৩তম ওভারে গজনফারের ধ্বংসযজ্ঞ শুরুর আগ পর্যন্ত মোটামুটি কক্ষপথেই ছিল নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

কিন্তু গজনফারই সব এলোমেলো করে দেন। ২ উইকেটে ১২০ রান থাকলেও এরপর ১৪৩ রানেই শেষ হয় টাইগারদের ইনিংস।

প্রথম ওয়ানডেতে গজনফারের বোলিংয়ে টাইগারদের ব্যাটারদের দৈন্যদশা দেখে মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশ বুঝি এই সিরিজে আর দাঁড়াতে পারবে না। কিন্তু গত শনিবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সে ধারণা বদলে দিয়েছেন শান্ত, সৌম্য সরকার, মিরাজ, জাকের আলী অনিক ও নাসুম আহমেদরা।

প্রথম ওয়ানডের ভুল-ত্রুটি কাটিয়ে শনিবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ২৫২ রানের লড়াকু পুঁজি গড়ে ৬৮ রানের জয়ে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ। কেউ আহামরি পারফরম্যান্স দেখাতে না পারলেও দলীয় পারফরম্যান্স মন্দ ছিল না। বেশ কিছু ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের সমষ্টিতে ধরা দিয়েছে ওই জয়।

অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৩) আর তাওহিদ হৃদয় (১১) ছাড়া বাকি সব ব্যাটারেরই কিছু না কিছু অবদান ছিল। দুই ওপেনার সৌম্য ( ৪৯ বলে ৩৫), তানজিদ তামিম (১৭ বলে ২২) ও মিরাজ (৩৩ বলে ২৩) বড় ইনিংস খেলতে না পারলেও অধিনায়ক শান্ত ধৈর্য্য ধরে দীর্ঘ সময় একপ্রান্ত আগলে রেখে দলকে এগিয়ে দিয়েছেন। স্ট্রাইকরেট কম হলেও গুরুত্বপূর্ণ ১১৯ বলে ৭৬ রানের ইনিংস খেলেন টাইগার কাপ্তান।

রান তোলার গতি কম থাকলেও হাতে উইকেট ছিল টাইগারদের। যা শেষ দিকে জাকের আলী ও নাসুমের মেরে খেলাটা সহায়তা করেছে বেশ।

এর বাইরে বাঁহাতি স্পিনার নাসুমের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স (২৪ বলে ২৫ রান ও ৩/২৮) একটা বড় ভূমিকা রেখেছে। উইকেটরক্ষক ব্যাটার জাকের আলীর ২৭ বলে ৩ ছক্কায় ৩৭ রানের ঝড়ো ইনিংসটিও অনেক কাজে দিয়েছে।

মাঝে আফগান বাঁহাতি স্পিনার নাঙ্গেলিয়া খারোতের বলে অধিনায়ক শান্ত, হৃদয় ও মাহমুদউল্লাহ খুব অল্প সময় ও সংগ্রহে ফিরে গেলে বাংলাদেশের ২০০ রান করাই কঠিন হয়ে পড়ে। ৪০.৫ ওভারে ১৮৪ রানে ষষ্ঠ উইকেটের পতনের পর জাকের আলী ও নাসুম সপ্তম উইকেটে দ্রুত ৪৬ রান তুলে বাংলাদেশকে আড়াইশোর পথে এগিয়ে দেন।

পরে বাঁহাতি স্পিনার নাসুম ( ৩/২৮), বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান (২/৩৭) ও মিরাজের ( ২/৩৭) সাড়াশী বোলিংয়ে ১৮৪ রানে শেষ হয় আফগানদের ইনিংস। বড় জয় ধরা দেয় বাংলাদেশের। মন্থর গতিতে খেলেও একদিক আগলে রাখায় ম্যাচসেরা হন শান্ত।

আজ সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে দ্বিতীয় ওয়ানডের পারফরম্যান্সই দরকার বাংলাদেশের। জিততে হলে ওপরের দিকে অন্তত একজনের একটি বড় ইনিংস (৭৫ বা ৮০+) একান্তই প্রয়োজন। সঙ্গে গোটা তিনেক ত্রিশোর্ধ ইনিংস আর বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজ ও বাঁহাতি স্পিনার নাসুমের বল হাতে জ্বলে ওঠাও খুব জরুরি।

দ্বিতীয় ওয়ানডের কম্বিনেশনটাও অনেক কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। একাদশে আর পরিবর্তনের কোনো প্রয়োজন নেই। লেগস্পিনার রিশাদ হোসেনের চেয়ে বাঁহাতি স্পিনার নাসুম অনেক বেশি কাজে দিয়েছেন। তার ব্যাটিংটাও অনেক সহায়তা করেছে। যে কারণে অফস্পিনার মিরাজের সঙ্গে নাসুমকে খেলানোই যুক্তিযুক্ত।

শেষ ম্যাচে নাসুমের যে উজ্জ্বল ও কার্যকর পারফরম্যান্স, তাতে এই বাঁহাতি স্পিনারকে বাদ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। তিন পেসার ফর্মুলাও হয়তো ঠিক থাকবে। সব মিলে গত ম্যাচের একাদশটাই হয়তো আবার দেখা যাবে আজ।