সোনারগাঁওয়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু, স্ত্রীর অভিযোগ হত্যা

মঙ্গলবার সকালে উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের তিলাবো এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।

সোনারগাঁওয়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু, স্ত্রীর অভিযোগ হত্যা

প্রথম নিউজ, নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। স্বজনদের দাবি, তিনি ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু তার স্ত্রীর অভিযোগ, পাওনা টাকার জেরে স্বজনদের মারধরে তার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত যুবকের নাম সেলিম মিয়া (২৫)।

মঙ্গলবার সকালে উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের তিলাবো এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় সোনারগাঁও থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের তিলাবো গ্রামের মো: ইয়াকুব আলীর ছেলে মো: সেলিম মিয়া বেকার অবস্থায় তিন মাস আগে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে স্থানীয় এনজিও প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে ঋণ নিয়ে সংসার চালান। এছাড়া তার আপন খালা হাসিনা বেগমের মাধ্যমেও সে এক লাখ টাকা ঋণ করেন। সেই ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য তারা চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। তবে সেলিম মিয়া এনজিও কর্মকর্তা ও ঋণ নেয়া ব্যক্তিদের এড়িয়ে চলেন। তার খালাকেও ঋণ পরিশোধের জন্য চাপ দেয়া হয়। গত সোমবার বিকেলে সেলিম মিয়া স্ত্রী মরিয়ম বেগমকে নিয়ে তার শ্বশুর বাড়ি পাশ্ববর্তী সেকেরহাট গ্রামে বেড়াতে যান। বিষয়টি জানতে পেরে খালা হাসিনা বেগম তার ভাতিজা যোবায়ের হোসেন রাজুকে নিয়ে সন্ধ্যার পর তার শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে তাকে ডেকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। খালা হাসিনা বেগম তাকে ঋণ পরিশোধের জন্য অপমান অপদস্ত করেন। এ অপমান সহ্য করতে না পেরে সেলিম মিয়া তার নিজের ঘরের আড়ার সাথে রশি বেঁধে আত্মহত্যা করেন।

বিষয়টি জানতে পেরে খালা হাসিনাসহ স্বজনরা ঝুলন্ত অবস্থা থেকে তাকে নামিয়ে মদনপুর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে নিহতের স্ত্রী মরিয়মের দাবি, তার স্বামীকে মারধর করে হত্যা করেছে স্বজনরা। সোমবার বিকেলে তারা দু’জন বেড়াতে গেলে সেখান থেকে তার খালা শাশুড়ি হাসিনা বেগম এসে তার স্বামীকে বাড়িতে নিয়ে যান। রাত সাড়ে ১১টায় আমার স্বামী ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে তাকে জানানো হয়। মৃত্যু সংবাদ পেয়ে বাড়িতে গিয়ে জানতে পারেন তার স্বামীকে পাওনা এক লাখ টাকার জন্য হাসিনা বেগম ও তার ভাতিজা যোবায়ের হোসেন রাজু মারধর করে। মারধরেই তার মৃত্যু হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমার স্বামী ফাঁসি দিয়ে থাকলে লাশ ঝুলন্ত থাকত। লাশ হাসপাতালে কেন?। আমি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করি। তালতলা বাজার তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো: জাকির রাব্বানী জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। নিহতের স্ত্রীর হত্যার অভিযোগটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।