সংঘাতের সৃষ্টি হলে দায় সরকারের

২৪শে জুলাই যুবলীগের কর্মসূচি ছিল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি’র কর্মসূচি ঘোষণা করার পর যুবলীগ তাদের কর্মসূচি ২৭শে জুলাইয়ে নিয়ে গেছে।

সংঘাতের সৃষ্টি হলে দায় সরকারের

প্রথম নিউজ, অনলাইন: আগামী ২৭শে জুলাই একদফা দাবিতে ডাকা মহাসমাবেশকে ঘিরে সহিংসতার আশঙ্কা করছে বিএনপি। দলটি বলছে, ২৪শে জুলাই যুবলীগের কর্মসূচি ছিল। বিএনপি’র কর্মসূচি ঘোষণা হওয়ার পরে তারা তাদের কর্মসূচি পরিবর্তন করে ২৭শে জুলাইয়ে নিয়ে গেছে! সংঘাত সৃষ্টি করতে তারা এটা করেছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যৌথ সভা শেষে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

২৪শে জুলাই যুবলীগের কর্মসূচি ছিল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি’র কর্মসূচি ঘোষণা করার পর যুবলীগ তাদের কর্মসূচি ২৭শে জুলাইয়ে নিয়ে গেছে। পরিষ্কার যে, তারা সংঘাতপূর্ণ অবস্থা সৃষ্টি করতে এটা করেছে। সুতরাং কোনো ধরনের সহিংস ঘটনা ঘটলে তার দায় সরকারকেই নিতে হবে।  ছেঁকে ছেঁকে তোলা হবে- সরকারের মন্ত্রীদের এই বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা কয়েকদিন ধরে হুমকি দিয়ে বলছেন যে, ছেঁকে ছেঁকে তোলা হবে। তাদের এই ভাষা, তা সন্ত্রাসী ভাষা। আর সরকারের বিশেষ বিশেষ ব্যক্তি উস্কানিমূলক কথা বলছেন। পাশাপাশি তারা উস্কানিমূলক কাজও করছেন।

বিএনপিসহ  বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ন ও হয়রানির চিত্র তুলে ধরে ফখরুল ইসলাম বলেন, তারপরও আমরা অত্যন্ত সংযত অবস্থায়, শান্তিপূর্ণভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা আশা করবো, আওয়ামী লীগ এই ভয়াবহ সংঘাতমূলক পরিস্থিতি পরিহার করবে। আর বিএনপি’র সমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতেই ক্ষমতাসীনদের এমন কর্মসূচি।

মহাসমাবেশের স্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সমাবেশের জন্য আমরা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে জানিয়েছি। আমরা আশা করছি, আজকের মধ্যেই এব্যাপারে তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিবেন। আমরা আশা করবো, এই শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক মহাসমাবেশ সফল করতে কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা করবেন।
সমাবেশে জনগণের জন্য কী বার্তা থাকবে- সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, মহাসমাবেশের বার্তা একটাই, পদত্যাগ। এই আন্দোলনের মধ্যদিয়ে এই সরকারের পদত্যাগ নিশ্চিত করা। আর আন্দোলনে তো জনগণ নেমে পড়েছে। এটা জনগণের আন্দোলন। এই আন্দোলন অবশ্যই সফল হবে। সুতরাং আওয়ামী লীগ তো হরতাল ভাঙার দলে পড়ে গেছে। তারা জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। জনগণের বেশির ভাগ, আমরা বলবো ৯৯ পার্সেন্ট পরিবর্তন চায়।

তিনি আরও বলেন, আজকে সময় এসেছে বাংলাদেশের মানুষের তাদের নিজেদের অধিকার ফিরে পাবার আন্দোলনে নেমে পড়ার। আর সরকারি কর্মচারীদেরও বলবো, এই আন্দোলনে আপনাদের একাত্মতা ঘোষণা করা উচিত। এজন্য যে, এই আন্দোলন জনগণের আন্দোলন। এই আন্দোলনের মধ্যদিয়ে আমরা আমাদের সংবিধানকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাই, আমাদের মানুষের অধিকারগুলোকে ফিরিয়ে আনতে চাই, আমাদের হারানো অধিকার ফিরে পেতে চাই, ভোট দিয়ে সংসদ তৈরি করতে চাই। যারা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন, তাদের প্রতি বলতে চাই, আমরা কখনো প্রতিহিংসার রাজনীতি করি না এবং বিশ্বাস করি না।

আমরা বিশ্বাস করি যে, জনগণের যে দাবি সেই দাবির প্রতি সকলের সমর্থন থাকবে। এটাই আমাদের প্রত্যাশা। নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর্যবেক্ষণ নিয়ে এক প্রশ্নে মির্জা আলমগীর বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন পর্ববেক্ষক পাঠাবেন কি পাঠাবেন না, এটা তাদের ব্যাপার। কিন্তু আমরা মনে করি, এখানে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হলে সেখানে পর্যবেক্ষক পাঠানো অর্থহীন। এখানে যদি আমরা অংশগ্রহণ না করি, বিরোধী দল যদি অংশ না নেয় তাহলে সেই নির্বাচন তো নির্বাচন হবে না। সুতরাং সেখানে পর্যবেক্ষক পাঠানো অর্থহীন হবে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে সভায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, মোস্তাক মিয়া, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।