শ্রীপুরে মহাসড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

গতকাল (১৯ আগস্ট) দুপুরে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়কের ময়মনসিংহ লেনে ধরে কিছুদুর এগুতেই ময়লার ফেলা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সেখানে স্তুপে পরিণত হচ্ছে।

শ্রীপুরে মহাসড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়,  দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

প্রথম নিউজ, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি: ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ গ্রামের সুফিয়া কটন মিল এলাকায় মহাসড়কের পাশে বাসা বাড়ি, কারখানা ও বাজারের ময়লা ফেলায় দুর্ভোগ তৈরী হয়েছে। এতে থেকে সৃষ্ট দুগর্ন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে আশপাশের বাসিন্দারাসহ মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা। গতকাল (১৯ আগস্ট) দুপুরে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়কের ময়মনসিংহ লেনে ধরে কিছুদুর এগুতেই ময়লার ফেলা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সেখানে স্তুপে পরিণত হচ্ছে। এতে মহাসড়কে গাড়ি চলাচলের অংশ সরু হয়ে পড়েছে। ময়লার ভাগাড়ে ফেলার ১৫/২০টি বস্তায় মুখ বেঁধে ফেলে রাখা হয়েছে, ভেতরে পঁচে গলে গিয়ে পোঁকা তৈরী হয়েছে, দুর্গন্ধ তৈরী হওয়ায় দাঁড়িয়ে থাকা কস্টকর হয়ে পড়ছে।

এছাড়াও টানা বৃষ্টিতে ময়লার অবশিষ্টাংশ দুগর্ন্ধ যুক্ত পানি মহাসড়কসহ আশপাশে ছড়িয়ে পড়েছে। ময়লার ভাগাড়ের একশ গজ উত্তরে রয়েছে একটি মাদ্রাসা, মহাসড়কের পূর্ব পাশে রয়েছে একটি মসজিদ, এছাড়াও আশপাশে রয়েছে অসংখ্য বাড়িঘর। উৎকট দুগর্ন্ধে তাদের বসবাস করাই কস্ট হয়ে পড়েছে বলে তারা জানান। ভাগাড়ের পাশের রয়েছে “মাদরাসা গিয়াস উদ্দিন”। মাদ্রাসার পরিচালক হাফেজ মাওলানা রাশিদুল হাসান বলেন, এই ময়লার ভাগাড়ের কারণে আমার মাদরাসা বন্ধের উপক্রম হয়েছে। ময়লার ভাগাড়ে মহাসড়ক সরু হওয়ায়, মাদরাসায় আসা শিক্ষার্থীদের দুর্ঘটনা ঝুঁকি বেড়েছে। ময়লাতে যে পোঁকা হয় তা হাঁটতে গেলে পায়ে উঠে যাচ্ছে। বৃষ্টি হলে এই ভাগাড়ের দুগর্ন্ধ যুক্ত পানি আশপাশে ছড়িয়ে পড়ায় বিপন্ন এক নগরে আমাদের বসবাস করতে হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা হযরত আলী বলেন, আমার বাড়ির তিনটি ঘর স্থানীয় গার্মেন্টস্ধসঢ়; কারখানার শ্রমিকদের কাছে ভাড়া দেয়া ছিল। ভাগাড়ের দুর্গন্ধে টিকতে না পেরে তারা বাসা ছেড়ে গিয়েছে। নিজের বাড়ি হওয়ায় অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে আমরা থাকতে বাধ্য হচ্ছি। ভাগাড়ের পূর্ব পাশে রয়েছে জপ্তার পাড় জামে মসজিদ। মসজিদের মুসল্লী হাজী মামুনুর রশিদ বলেন, মহাসড়কের পাশে ফেলা বর্জ্যে দুগর্ন্ধ তৈরী হয়ে মুসুল্লীদের নামাজ পড়তে অসুবিধা হয়। মসজিদ পাকপবিত্র জায়গা, বৃষ্টিতে বর্জ্যে অংশের পানি আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে, তখন হেঁটে মসজিদের যাওয়া যায় না।

দীর্ঘদিন ধরে এমন কস্ট লাঘবে কেউ এগিয়ে আসেনি। রায়হান আহমেদ নামে স্থানীয় আরেক বাসিন্দা বলেন, পাশের এমসি বাজারের কাঁচার মালামালের অবশিষ্ট অংশ, মাছ, মুরগি ও গরুর গোশত বিক্রির পর যে আবর্জনা তৈরী তা এখানে ফেলা হয়। এছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন কারখানার বর্জ্য এখানে ফেলা হচ্ছে। প্রথমে দিনের বেলা ফেলা হতো এসব আবর্জনা। স্থানীয়রা বাসিন্দারা তখন বাধা দেয়ায় এখন আর দিনের বেলা না ফেলে রাতের আঁধারে ফেলে তারা পরিবেশ দূষণ করছে। এ বিষয়ে জনপ্রতিনিধিদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোন সমাধান হয়নি।

মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলা প্রসঙ্গে তেলিহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন সরকার বলেন, আগে এখানে ময়লা ফেলা বন্ধ করতে গ্রাম পুলিশ বসিয়ে পাহারা দিয়েছিলাম। জনবহুল এলাকায় এভাবে বর্জ্য ফেলা ঠিক না। কিছুদিন বন্ধ ছিল। মানুষের দুর্ভোগ বিবেচনা করে ওই স্থানে ময়লা ফেলা বন্ধ ব্যবস্থা নেয়া হবে। যে ময়লাগুলো ফেলা হয়েছে তা অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হবে। তবে সাধারণ মানুষকে সচেতন হওয়া জরুরী বলে তিনি মনে করেন।