শীতজনিত রোগের আগাম প্রস্তুতি

শীতের আগমনী চিঠি হাতে হাজির হচ্ছে হেমন্ত। এরই মধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চলে কুয়াশাঢাকা সকালের দেখা মিলেছে।

শীতজনিত রোগের আগাম প্রস্তুতি

প্রথম নিউজ, ঢাকা: বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে শরতের। রাত পোহানোর সঙ্গে সঙ্গে উল্টে যাবে পঞ্জিকার পাতা। শীতের আগমনী চিঠি হাতে হাজির হচ্ছে হেমন্ত। এরই মধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চলে কুয়াশাঢাকা সকালের দেখা মিলেছে। এ ছাড়া অন্য অঞ্চলেও কিছুটা আভাস মিলতে শুরু করেছে শীতের। অনেকেই গরমের অত্যাচার থেকে বাঁচতে শীতের অপেক্ষায় তীর্থের কাকের মতো বসে আছেন। এ ছাড়া শীতকাল ভোজন রসিকদেরও পছন্দের ঋতু। তবে অনেকের জন্যই শীতকাল অভিশাপস্বরূপ। বিশেষ করে যারা শীতজনিত নানা রোগের ভুক্তভোগী। শীতজনিত এসব রোগের ভোগান্তি পেতে এখনই প্রস্তুতি নেওয়ার শুরু করা দরকার।

শীতে সাধারণত ঠান্ডা অ্যালার্জি, কাশি, জ্বর, সর্দি, অ্যাজমা, হাঁপানিতে আক্রান্ত হন। শীতকাল অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগীদের জন্য খুবই কষ্টকর। একদিকে শীতল ও ঠান্ডা আবহাওয়া অন্যদিকে ধুলাবালু বেড়ে যায়। শুষ্ক বাতাস, ধুলাবালু এমনকি অনেকে ফুলের পরাগ রেণুর সংস্পর্শে এলেও হাঁপানির টান উঠে। ভাইরাস সংক্রমণ, সর্দিকাশি, ফ্লুও এ সময় বেশি হয়। তাই শীত আসার আগেই প্রস্তুতি নিতে হবে এমন রোগীদের।

* শীতের শুরুতে আবহাওয়া খুবই পরিবর্তনশীল। এই গরম তো, এই ঠান্ডা। তাপমাত্রা দ্রুত ওঠানামা করে। তাই মৌসুম পরিবর্তনের শুরুতেই অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় সতর্ক থাকতে হবে।

* যারা ভোরে বা সন্ধ্যায় হাঁটতে বের হন, তাদের একটু ভেবেচিন্তে কাজ করতে হবে। বেশি সকালের হিম বা সন্ধ্যার গরমে ঘামা কোনোটিই ভালো নয়। তাই সুবিধা মতো সময় ও সতর্কতা অবলম্বন করে হাঁটতে হবে।

* অন্য সময়ের তুলনায় শীতকালে পরিবেশে ধুলাবালু বেড়ে যায়। আর্দ্রতাহীন শুষ্ক আবহাওয়ায় ধুলাবালু, উড়ন্ত ফুলের রেণু, কণা বেশি থাকে। বাইরে গেলে তাই সতর্ক থাকতে হবে। সেই সঙ্গে মাস্ক পরতে ভুলে গেলে একদমই চলবে না।

* পরিবর্তনশীল আবহাওয়া উপযোগী কাপড় পরতে হবে। সম্ভব হলে ব্যাগের মধ্যে সুবিধা অনুযায়ী কাপড় নিয়ে নিতে হবে। সকালে অফিস যাওয়ার সময় ঠান্ডা, আবার দুপুরে বের হলে গরম, আবার রাতে ফেরার সময় ঠান্ডা। তাই সময়োপযোগী কাপড় পরতে ও সঙ্গে নিতে হবে। তবে অনেকে আবার উলের কাপড়েও হাঁপানি বাড়ে, তারা মোটা সুতি কাপড়, সুতি মোজা পরুন। বাড়িতে খালি পায়ে হাঁটবেন না।

* যারা যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে মোটরসাইকেল বা সাইকেল চালান তাদের বাড়তি প্রস্তুতি রাখতে হবে। সকালে বের হওয়া এবং রাতে ফেরার ক্ষেত্রে পোশাকের দিকে নজর রাখতে হবে। পাশাপাশি বাইকচালকদের বাতাসপ্রতিরোধী জ্যাকেট ব্যবহার জরুরি।

* আবহাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এসি, ফ্যান ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে।

* শীতের শুরুতে হাঁপানি রোগীদের ফ্লু আর নিউমোনিয়ার টিকা দিয়ে নেওয়া উচিত। বাড়িতে ইনহেলার ও অন্যান্য ওষুধের মজুত আছে কি না, মেয়াদ আছে কি না দেখে নিতে। কেউ কেউ বাড়িতে নেবুলাইজার ব্যবহার করেন, তারাও পরখ করে নিতে পারেন। শীতের শুরুতে একবার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে ওষুধ ও ইনহেলারের ডোজ ঠিক করে নেওয়া জরুরি।

* কোভিড এখনো পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। এখনো ঝুঁকিতে আছেন শ্বাসতন্ত্রের রোগীরা। তাই মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, ভিড় এড়িয়ে চলার মতো বিষয়ে জোর দিন। করোনা টিকা না নিয়ে থাকলে দ্রুত নিয়ে নিন।

*এ ছাড়া চিকিৎকের পরামর্শ অনুযায়ী নানা ধরনের প্রাকৃতিক বা ভেষজ খাওয়া শুরু করতে পারেন। যেমন- তুলসি পাতা, আদা, গোলমরিচ, লবঙ্গ দিয়ে চা, কুসুম গরম পানিতে লেবু-মধুর পানীয়, কালোজিরা ইত্যাদি।

* শীতের বাড়তি কিছু প্রসাধনী প্রয়োজন হয়। সেগুলো কিনে রাখা দরকার। তবে এক্ষেত্রে হাঁপানি রোগীদের প্রসাধনী নির্বাচনের সময় বিষয়টি মাথায় রেখেই কিনতে হবে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom