লড়াই-সংগ্রামের মাধ্যমেই গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবো

জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকীতে বিএনপি’র নেতারা

লড়াই-সংগ্রামের মাধ্যমেই গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবো

প্রথম নিউজ, অনলাইন: বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের (বীর উত্তম) জন্মবার্ষিকীতে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। এইদিনে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানিয়ে দলটির নেতারা বলেছেন, জিয়াউর রহমান যে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেই গণতন্ত্রকে মেরে ফেলা হয়েছে। সেটাকে পুনরুজ্জীবিত করার যে লড়াই, সেই লড়াই চলছে। তার জন্মবার্ষিকীতে আমাদের আজকে প্রতিশ্রুতি হলো, যতদ্রুত সম্ভব লড়াই-সংগ্রামের মধ্যদিয়ে এদেশের গণতন্ত্রপ্রেমী জনগণের সহায়তায় আমরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবো। 

গতকাল সকালে রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বিএনপি’র নেতারা। এরআগে বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, উন্নয়নের নামে দেশে ‘তেভাগা আন্দোলন’ হয়েছে। একটি উন্নয়ন প্রকল্পে যদি ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়, তাহলে ১০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন হয়, আর ১০ হাজার কোটি টাকা এই সরকারের আশীর্বাদপুষ্টরা ভাগাভাগি করে নেন। আর এক-তৃতীয়াংশ যারা বিদেশ থেকে প্রকল্প এনে দেন, তারা লোপাট করে নেন। আজকের সরকার দেশের অর্থনীতিকে লুটপাট করে ধ্বংস করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মতো লগি-বৈঠার রাজনীতিতে বিএনপি বিশ্বাস করে না। আমরা শান্তিপূর্ণ, নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী। আমাদের যে কর্মসূচি তা চলমান রয়েছে। এই চলমান কর্মসূচি আমরা সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ এবং নিয়মতান্ত্রিকভাবে অব্যাহত রাখবো। নির্বাচন নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ড. মঈন খান বলেন, শুধু টিআইবি কেন, কে বলে নাই সেটা বলেন? কে বিএনপি’র কথা রিপিট করে প্রমাণ করে নাই যে, বিএনপি এই স্বৈরাচারের একদলীয় শাসক সম্পর্কে যে কথাগুলো বলেছে, সেটা দেশে-বিদেশে কোনো প্রতিষ্ঠান এবং সরকার বলে নাই যে, বিএনপি সত্য কথা বলে নাই?

নির্বাচন পরবর্তী বিএনপি’র পরিকল্পনা কিংবা আন্দোলন কেমন হবে- জবাবে দলটির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, মূল কথা জিয়াউর রহমানের যে আদর্শ, তিনি দেশকে পুনর্গঠন করেছেন, দেশের অর্থনীতিকে উন্নত করেছেন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশের সূচনা করেছেন- আজকে সেটা ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে। সেখান থেকে দেশকে রক্ষা, তিনি যে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেই গণতন্ত্রকে আবার মেরে ফেলা হয়েছে। সেটাকে পুনরুজ্জীবিত করার যে লড়াই, সেই লড়াই চলছে। আর সেই লড়াইয়ের যে বিভিন্ন কর্মসূচি তা আপনাদেরকে (সাংবাদিক) জানানো হয়। পরবর্তী কর্মসূচি যেটা হবে তা আপনাদেরকে জানানো হবে। এই গণতন্ত্র আমরা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারবো। জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তার জন্মবার্ষিকীতে আমাদের আজকে প্রতিশ্রুতি হলো, যতদ্রুত সম্ভব লড়াই-সংগ্রামের মাধ্যমে এদেশের গণতন্ত্রপ্রেমী জনগণের সহায়তায় আমরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবো, ইনশাআল্লাহ। 

টিআইবির বক্তব্যে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, টিআইবি যা বলেছে, সেটা জনমতের প্রতিফলন। আমরা যা বলেছি, সেটাও জনমতের প্রতিফলন। ফলে আমাদের কথা যদি মিলে সেটা একজন আরেকজনকে পছন্দ করার জন্য না। সত্য বলার জন্য। যুক্তরাষ্ট্র আবারো বলেছে বাংলাদেশে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি-এই বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নজরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে গণমানুষের পক্ষে যারা কথা বলবে, আমরা তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু আমরা যা বলি, সেটা তো গুরুত্বপূর্ণ। আর জনগণ সরকারের স্বৈরশাসন পছন্দ করে না। 

এসময় বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুসহ যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, ছাত্রদল, তাঁতীদল, মৎস্যজীবী দল এবং মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।