Ad0111

রপ্তানি আয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আমদানি ব্যয়

রেকর্ডের পর রেকর্ড হচ্ছে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক। এতে অর্থনীতিতে গতি ফিরে এসেছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা।

রপ্তানি আয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আমদানি ব্যয়
রপ্তানি আয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আমদানি ব্যয়

প্রথম নিউজ, ঢাকা : রপ্তানি আয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আমদানি ব্যয়। রেকর্ডের পর রেকর্ড হচ্ছে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক। এতে অর্থনীতিতে গতি ফিরে এসেছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা। গত অক্টোবরে ৭১১ কোটি (৭.১১ বিলিয়ন) ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ, যা গত বছরের অক্টোবরের চেয়ে ৬২.৫০ শতাংশ বেশি। বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে টাকার অঙ্কে (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ৭০ পয়সা) এই অর্থের পরিমাণ ৬১ হাজার কোটি টাকার বেশি। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনই এক মাসে পণ্য আমদানিতে এতো বেশি অর্থ ব্যয় হয়নি। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাওয়া লেগেছে আমদানির পালে। বাড়ছে ডলারের চাহিদা। এতে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভে পড়েছে টান। বেড়ে যাচ্ছে ডলারের দাম; কমছে টাকার মান। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে ৬৯৯ কোটি ৬০ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছিল, যা ছিল এক মাসের হিসাবে এতদিন সর্বোচ্চ। তার আগের মাস আগস্টে আমদানি হয়েছিল ৬৫৮ কোটি ৩৩ লাখ ডলারের পণ্য। অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা বলেছেন, আমদানি বৃদ্ধি পাচ্ছে দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক। তবে রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে রপ্তানির পাশাপাশি রেমিট্যান্স বাড়ানোর দিকে জোর দিতে হবে সরকারকে।

বাংলাদেশ ব্যাংক আমদানি সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে অর্থাৎ জুলাই-অক্টোবর সময়ে ২ হাজার ৫৮৩ কোটি ১২ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে। এই অঙ্ক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫১.৩৯ শতাংশ বেশি। ২০২০-২১ অর্থবছরের এই চার মাসে ১ হাজার ৭০৬ কোটি ২৩ লাখ (১৭.০৬ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য আমদানি করেছিল বাংলাদেশ, যা ছিল আগের বছরের (২০১৯-২০) জুলাই-অক্টোবর চেয়ে ১২.৯৬ শতাংশ কম। করোনা মহামারির কারণে আমদানি কমে যাওয়ায় গত অর্থবছরের প্রথমার্ধে আমদানি বেশ কমে গিয়েছিল। কিন্তু ইউরোপ-আমেরিকাসহ অন্য দেশে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করায় দ্বিতীয়ার্ধে এসে আমদানি বাড়তে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত ৬৫.৬০ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড আমদানি খরচ নিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছর শেষ হয়। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের শুরু থেকে বাংলাদেশেও করোনার প্রকোপ স্বাভাবিক হতে শুরু করে। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুরোদমে চালু হয়। সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে আমদানি। এখন প্রতি মাসেই রেকর্ড হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রায় দুই বছর করোনা মহামারির মধ্যেই দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছে। প্রথম দিকে আমদানি কমলেও পরে বেড়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। তাই আমদানি বাড়ছে। এটা অর্থনীতির জন্য ভালো। তারা বলেন, পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেল, মেট্রোরেলসহ বড় বড় প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে। এসব প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমদানিতে মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় হচ্ছে। এ ছাড়া বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেল, খাদ্যসহ অন্যান্য পণ্যের দামও বেড়েছে। এসব কারণেই গত অর্থবছরে আমদানি খাতে খরচ প্রথমবারের মতো ৬৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এবার আরও বাড়বে বলে মনে হচ্ছে। এতে উদ্বেগের কিছু নেই।

গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, স্বস্তির জায়গা হচ্ছে আমাদের রিজার্ভ এখনো সন্তোষজনক অবস্থায় আছে। রপ্তানিও আয় ভালো আসছে। তবে, রেমিট্যান্স কিন্তু অনেক কমে গেছে। যে কারণে যদি রপ্তানিও কমে যায়, তাহলে কিন্তু রিজার্ভও কমে যাবে। ফলে সরকারের এখন রপ্তানি আয়ের পাশাপাশি রেমিট্যান্স বাড়ানোর দিকেও মনোযোগ দেয়া উচিত। রেমিট্যান্স কমায় ও আমদানির উল্লম্ফনে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভেও প্রভাব পড়েছে। গত বৃহস্পতিবার দিন শেষে রিজার্ভ ছিল ৪৪.৮ বিলিয়ন ডলার। গত ৪ঠা নভেম্বর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১১৩ কোটি ১০ লাখ ডলারের আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪৪.৮০ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে, যা ছিল গত সাত মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। এর পর থেকে তা ৪৫ বিলিয়ন ডলারের নিচেই অবস্থান করছে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news