মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টে বাংলাদেশকে সহায়তা নিয়ে প্রশ্ন, যা বললেন ট্যামি ব্রুস

প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশকে দেওয়া মার্কিন সহায়তার অর্থ কীভাবে ব্যয় হয়েছে, সে বিষয়ে তদন্তের দাবি উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রেই। এই প্রসঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার স্টেট ডিপার্টমেন্টে আয়োজিত এক নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। একজন সাংবাদিক উল্লেখ করেন, গত বুধবার একটি বাংলাদেশি-আমেরিকান সংগঠন ওয়াশিংটনের ন্যাশনাল প্রেস ক্লাবে এক প্রেস কনফারেন্সের আয়োজন করে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র সরকার এবং স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়, বাংলাদেশকে দেওয়া মার্কিন সহায়তার অর্থের ব্যবহারের বিষয়ে তদন্ত করা হোক।
এই প্রেক্ষাপটে সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, স্টেট ডিপার্টমেন্ট কি এই বিষয়ে ইতোমধ্যে কোনো তদন্ত শুরু করেছে? জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানাননি। তিনি বলেন, “আমি আবারও বলছি, যেকোনো বিষয়ে সম্ভবত যা ঘটছে, আমরা সে বিষয়ে প্রশ্ন গ্রহণ করব এবং পরবর্তীতে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেব।”
তবে এখন পর্যন্ত স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে এ বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপের কথা জানানো হয়নি। এদিকে, ভারতের অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের পাহালগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হামলাটি ঘটে কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা বাইসারান উপত্যকায়।
ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত ওই একই সংবাদ ব্রিফিংয়ে ট্যামি ব্রুস বলেন, “আমরা ভারতের পাশে আছি এবং সন্ত্রাসবাদের সব ধরনের ঘটনার নিন্দা জানাই।” তিনি আরও বলেন, ‘নিহতদের জন্য আমরা শোক জানাই, আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানাই।’
তবে কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধে যুক্তরাষ্ট্র কোনো পক্ষ নিচ্ছে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন ব্রুস। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র পরিস্থিতি খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করছে, তবে 'ভারতের অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীর' নিয়ে তারা কোনো অবস্থান নিচ্ছে না।
ট্রাম্প প্রশাসনের সময় কাশ্মীর ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোনো মধ্যস্থতার প্রস্তাব ছিল কি না—এমন প্রশ্নে ব্রুস মন্তব্য করতে রাজি হননি। তার ভাষ্য, “রাষ্ট্রপতি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সে সময় তাদের বক্তব্য দিয়েছেন। আমি তা নিয়ে কিছু বলবো না।” কাশ্মীরে হামলার জন্য ভারত ‘সীমান্তপারের সন্ত্রাসীদের’ দায়ী করলেও পাকিস্তান তা সরাসরি অস্বীকার করেছে এবং বলেছে, এসবের পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই।
হামলার পর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে। ভারত ও পাকিস্তান তাদের একমাত্র স্থলসীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে, পারস্পরিক ভিসা দেওয়া স্থগিত করেছে, একে অপরের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের দেশে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে এবং দূতাবাসে কর্মীসংখ্যাও হ্রাস করেছে।
এছাড়া, ভারত ১৯৬০ সালের ইন্দাস পানি চুক্তিও স্থগিত করেছে। এই চুক্তির মাধ্যমে ইন্দাস নদীর পানি বণ্টনের বিষয়টি নির্ধারিত ছিল। পাকিস্তান এর জবাবে বলেছে, ভারত যদি পানি আটকে রাখে বা তার দিক পরিবর্তন করে, তাহলে সেটিকে তারা যুদ্ধ ঘোষণা হিসেবে বিবেচনা করবে।