‘মেধাহীন নৈতিকতা বিবর্জিত প্রজন্ম গড়ার চক্রান্তের শিক্ষাব্যবস্থাকে তছনছ করে দেয়া হয়েছে’
চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের মজলিশে শূরার অধিবেশনে আমীরে জামায়াত অধ্যাপক মুজিবুর রহমান
প্রথম নিউজ, চট্টগ্রাম: মেধাহীন নৈতিকতা বিবর্জিত প্রজন্ম গড়ার গভীর চক্রান্তের অংশ হিসেবে শিক্ষাব্যবস্থাকে তছনছ করে দেয়া হয়েছে । মাধ্যমিক স্কুলে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত অর্ধবার্ষিক ও বার্ষিক পরীক্ষা তুলে নিয়ে শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর মজলিশে শূরার ৩য় অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, বর্তমানে শিক্ষার্থীদের বাস্তব শিক্ষার নামে বই বিমুখ করে ফেলা হচ্ছে। প্রযুক্তির প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা বই পড়ার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। বিজাতীয় শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসন থেকে শিক্ষা ব্যবস্থাকে রক্ষা করতে হবে।
আমীরে জামায়াত বলেন, যেকোনো কাজ করার সময় মহান আল্লাহ তা'য়ালাকে ভয় করতে হবে। মনে রাখতে হবে একদিন সব কাজের জবাবদিহি করতে হবে। আখেরাতের ভয়ের চেতনা নিয়ে কাজ করতে হবে। এমন কোনো কাজ করা যাবে না যার জন্য শাস্তি পেতে হবে। দায়িত্বশীলদের কথাকে মূল্যায়ন করতে হবে। আত্মসমালোচনা বেশি বেশি করতে হবে যেন আল্লাহর পাকড়াও থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, আল্লাহ যে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন তা করতে হবে। রিজিকের মালিক আল্লাহ। ফিলিস্তিনে পানি, বিদ্যুৎ,খাবার, ঘর নেই। মহান আল্লাহ তাদের রক্ষা করুন। প্রত্যেককে আল্লাহর উপর পরিপূর্ণভাবে আত্মসমর্পণ করতে হবে। বুদ্ধিজীবীদের সৎকাজ করতে হবে। অসৎ কাজ করলে শাস্তি পেতে হবে। আগামী দিনে মাঠে ময়দানে ভূমিকা পালন করতে হবে। শাহাদাতের তামান্না পোষণ করতে হবে। শাহাদাতের মৃত্যু সহজ এবং বিনা হিসাবে জান্নাতে পাওয়া যাবে।
তিনি আরও বলেন, দ্বীনি আন্দোলনের কাজে আমাদেরকে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে। শাহাদাতের মৃত্যু কামনা করতে হবে। আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল না করে বিছানায় মৃত্যুবরণ করলেও শহীদ হিসেবে মর্যাদা লাভ করবেন। ভয় যাতে আমাদের দুর্বল করতে না পারে। আন্দোলন আগামীতে আরও চলতে থাকবে। আরও বেগবান করতে হবে। বিজয় আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
আমীরে জামায়াত আরও বলেন, আজকের স্বৈরাচার সরকারের জেল জুলুম ও নির্যাতনের ফয়সালা আল্লাহ অবশ্যই করবেন। আল্লাহ সত্যিকারের মুমিনদের অবশ্যই সাহায্য করবেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম অঞ্চল পরিচালক উপাধ্যক্ষ আব্দুর রব বলেন,আলেম-ওলামা ও আধুনিক শিক্ষিতদের সমন্বয়ে সর্বস্তরের মানুষের সংগঠন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। চট্টগ্রাম মহানগরীর অতীতের অনেক ঐতিহ্য রয়েছে। এই ঐতিহ্যগুলো ফিরিয়ে আনতে হবে। আন্দোলনের ডাক আসলেই তা বাস্তবায়নে ভূমিকা পালন করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও চট্টগ্রাম মহানগরীর আমীর মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, যেখানে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত নেই সেখানে ঈমানদারদের প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিত তার দ্বীনকে বিজয়ী করার আপ্রাণ চেষ্টা চালানো। আল্লাহর কাছে সবচেয়ে পছন্দনীয় ও বড় ইবাদত হচ্ছে ইকামতে দ্বীনের আঞ্জাম দেয়া। ত্যাগ ও কোরবানির মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে আমাদের সবাইকে ইকামতে দ্বীনের আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।দেশকে সর্বগ্রাসী আওয়ামী হায়েনাদের কবল থেকে মুক্ত করতে নেতৃবৃন্দকে সাহসী ও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে।
কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় উক্ত শূরা অধিবেশনে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর নায়েবে আমীর ড.আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও নগর নায়েবে আমীর ,মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ খায়রুল বাশার,জনাব মুহাম্মদ উল্লাহ, জনাব এফ এম ইউনুস, জনাব মোরশেদুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।