মৃত সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে টাকা তুললেন প্রধান শিক্ষক
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি মো. খালেদ মোশারফ।
প্রথম নিউজ,জামালপুর: জামালপুর সদর উপজেলার ১নং কুটামনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মৃত সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষক লক্ষ্মী রাণী দে’র বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি মো. খালেদ মোশারফ। অভিযোগপত্রের একটি কপি বুধবার (২৬ জানুয়ারি) গণমাধ্যমের হাতে আসে। এ অভিযোগপত্রে কমিটির আরও চারজন সদস্য স্বাক্ষর করেছেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, জেলার সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নে অবস্থিত ১নং কুটামনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি মো. মোশাররফ হোসেন গত বছরের ২৪ অক্টোবর নবগঠিত কমিটির প্রথম সভা আহ্বান করেন। সভায় প্রধান শিক্ষক লক্ষ্মী রাণী দে’র কাছে আয়-ব্যয় ও ব্যাংক হিসাব জানতে চাওয়া হয়। এসময় প্রধান শিক্ষক আয় ব্যয়ের হিসাব দেখাতে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে চলতি মাসের ১৮ জানুয়ারি বিদ্যালয়ে সভার আহ্বান করা হলে সেখানেও প্রধান শিক্ষক হিসাব দেখাতে পারেননি।
২৩ জানুয়ারি রুপালি ব্যাংক জামালপুর শাখার ব্যাংক বিবরণী দেখান তিনি। বিবরণীতে দেখা যায়, গত বছরের ৪ নভেম্বর ব্যাংক থেকে ১ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পূর্ববর্তী কমিটির সভাপতির স্বাক্ষরে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। কিন্তু পূর্ববর্তী সভাপতি মো. আব্দুল বারেক ফকির গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি মারা যান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক লক্ষ্মী রাণী দে নতুন কমিটিকে বলেন, সভাপতি মো. আব্দুল বারেক ফকির মারা গেলে সহ-সভাপতি মোছা. মাহমুদা সুলতানাকে সভাপতি করে ব্যাংক অপারেটর পরিবর্তন করা হয়। এদিকে প্রধান শিক্ষক এ কথা বললেও তিনি ব্যাংক অপারেটর পরিবর্তনের কোনো রেজুলেশন দেখাতে পারেননি। এছাড়া তার ভাষায় ওই সভাপতি মোছা. মাহমুদা সুলতানা গত ১০ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক লক্ষ্মী রাণী দে’র মুঠোফোনে বার বার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে নবগঠিত কমিটির সভাপতি খালেদ মোশাররফ মিলন মুঠোফোনে বলেন, গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর আমাকে কুটামনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। তারপর আমি প্রধান শিক্ষকের কাছে বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের হিসাব জানতে চাইলে সে তালবাহানা শুরু করে। পরে জানতে পারি সে সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে এক লাখ টাকা উত্তোলন করেছে। তাই এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটুস লরেন্স চিরান বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের সত্যতা জানতে ও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: