মুক্তিপণ না পেয়ে ৭ বছরের শিশুকে হত্যা
প্রথম নিউজ, ব্রাক্ষণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে মুক্তিপণ না পেয়ে ফাতেহা নামের ৭ বছরের শিশুকে গলা টিপে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সোমবার (২ অক্টোবর) রাতে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে তাদের তথ্যে ডোবা থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সকালে তাদের আদালতে পাঠানো হয়। বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূরে আলম কালবেলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ফাতেহা বাঞ্ছারামপুর উপজেলার দরিয়াদৌলত ইউনিয়নের শুটকীকান্দি গ্রামের বাছেদ মিয়ার মেয়ে। সে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে পড়ত।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন একই উপজেলার দরিয়াদৌলত গ্রামের নাজিম ও শুঁটকিকান্দি গ্রামের আলাউদ্দিন। সম্পর্কে তারা ফাতেহার ফুফাতো ও চাচাতো ভাই।
নিহতের মা রুমি আক্তার বলেন, ‘আমার মেয়েকে অপহরণ করে কবিরাজ সেজে আমাকে ফোন দেওয়া হয়। মেয়েকে ফিরে পেতে হলে চার লাখ টাকা দিতে হবে বলা হয়। তা ছাড়া যারা আমার মেয়েকে অপহরণ করেছে, তারাই এলাকায় মাইকিং করে আমার মেয়ের খোঁজ চায়। আমার মেয়েকে যারা হত্যা করেছে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।’
পরিবারের বরাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিরাজুল ইসলাম জানান, ৩০ সেপ্টেম্বর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় ফাতেহা। পরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর করেও তার সন্ধান পাচ্ছিল না পরিবার। এক দিন পর রোববার (১ অক্টোবর) অপহরণকারীরা ফাতেহার বাবা বাছেদ মিয়াকে ফোন করে তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানায়। পরে মুক্তিপণ বাবদ চার লাখ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। এ অবস্থায় বাছেদ মিয়া বিষয়টি বাছারামপুরের ওসি নূরে আলমকে জানান। পরে পুলিশ অপহরণকারীর ফোন নম্বরের সূত্র ধরে বিষয়টির তদন্ত শুরু করে।
মুক্তিপণ না পেয়ে ৭ বছরের শিশুকে হত্যা
ছিনতাইকারীর হামলায় আহত কলেজছাত্রের মৃত্যু
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার শাখওয়াত হোসেন বলেন, ‘ফোন কলের রেশ ধরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের ফোনে শিশুটিকে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবি সংক্রান্ত চ্যাটিং (বার্তা আদান-প্রদান) পাওয়া গেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। পরে অপহরণকারীদের তথ্যের আলোকে পাশের ডোবার পানিতে থাকা কচুরি পানার নিচ থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে নিহত শিশুর মা রুমা আক্তার বাদী হয়ে বাঞ্ছারামপুর থানায় হত্যা মামলা করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।